‘আমি প্রতিবন্ধী নই’ ক্যান্সার আক্রান্ত নাজমার আকুতি

মাহাবুব আলম বাবু: জীবনের ৩৬টি বসন্ত পেড়িয়ে গেলেও পঙ্গুতের কাছে হার মানেননি আজন্ম প্রতিবন্ধী অদম্য নাজমা। ৭/৮ ইঞ্চি খাট বাম পা নিয়ে জন্মানো নাজমা বেগম অন্যের অনুগ্রহ, দয়া বা করুণা অতিক্রম করতে বেছে নেন দর্জি পেশা। অর্থাভাবে এসএসসির গণ্ডি না পেরোনোর যন্ত্রণায় দগ্ধ নাজমা বোঝা হতে চাননি পরিবার কিংবা রাষ্ট্রের। মাথা উচু করে ক্র্যাচের ভরে জীবন সংসার চালিয়ে এলেও শরীরে ক্যান্সার বাসা বাধায় এখন আর পেরে উঠছেন না তিনি। প্রতিবন্দী শব্দের ঘোর বিরোধী আজন্ম পঙ্গু অদম্য নাজমার চিকিৎসকদের হুঁশিয়ারি, সুষ্ঠু চিকিৎসা না পেলে নিভে যেতে পারে তার জীবন প্রদীপ।

মুন্সীগঞ্জ সদরের দক্ষিণ কাজী কসবার ঘুঘু বাড়ির মৃত আলী মিয়ার মেয়ে নাজমা বেগমের গলার অভ্যন্তরে টিউমার দেখা দেয়। গলগণ্ড রোগ ভেবে টোটকা চিকিৎসায় কেটে যায় ১০টি বছর। কিন্তু ধীরে ধীরে তার দেহে দেখা দেয় নানান উপসর্গ। অসহনীয় যন্ত্রণা লাঘবে ১০ মাস আগে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি হন তিনি। সেখানে ধরা পরে তার থাইরয়েড ক্যানসার। ইতিমধ্যেই তার সারা শরীরে বিস্তৃত হয়েছে। প্রতিবন্দীর প্রতিবন্ধকতা জয়ী নাজমার চিকিৎসায় পরিবার-পরিজনের সহায়তা এবং সহায় সম্বল বিক্রি করে সঞ্চিত তিন লাখ টাকা ব্যয় হয়। বর্তমান সংকটাপূর্ণ অবস্থায় অর্থাভাবে থমকে আছে নিঃস্ব-রিক্ত নাজমার চিকিৎসা।

দেশে এর সুষ্ঠু চিকিৎসা সম্ভব নয় বলে ডাক্তারদের অভিমত। তবে ন্যূনতম ভারতে গিয়ে চিকিৎসা করালে হয়তবা বেচেঁ যেতে পারেন তিনি। কিন্তু সেজন্য মোটা অংকের অর্থ প্রয়োজন। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের কাছে নাজমা বেগমের আর্তচিৎকার, ‘ক্যানসার আক্রান্ত আমি, প্রতিবন্ধী নই।’

তাই কোন ব্যক্তি বা প্রাতিষ্ঠান কি পিতা-মাতা, স্বামী, সন্তান-সন্তুতি বিহীন অসহায় সাহায্যপ্রার্থী এ নারীর পাশে দাঁড়াবেন?

আমাদের সময়

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.