রাহমান মনি: জাপানে নিয়মিত আয়োজন হিসেবে অনুষ্ঠিত হয়েছে দুই প্রজন্মের মিলনমেলা। ব্যাপক উৎসাহ উদ্দীপনা, উৎসবমুখর পরিবেশে এবং উল্লেখযোগ্যসংখ্যক শিশু-কিশোরদের অংশগ্রহণে পালিত হলো ‘প্রবাস প্রজন্ম ২০১৬’। প্রবাস প্রজন্মের এবারের আয়োজন ছিল অষ্টমবারের মতো।
১ মে ২০১৬ রোববার টোকিওর কিতা সিটি তাকিনোগাওয়া কাইকানে আয়োজিত ৮ম প্রবাস প্রজন্ম জাপান ২০১৬ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাপানস্থ বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন এশিয়ান পিপল্স ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি কাৎসুও ইয়োশিনারি। আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ থেকে এ বছর প্রবাস প্রজন্ম সম্মাননা প্রাপ্ত অতিথি বিশিষ্ট কণ্ঠশিল্পী, প্লে-ব্যাক সিঙ্গার খ্যাত, সংগীত জগতের এক উজ্জ্বল নক্ষত্র এবং জীবন্ত কিংবদন্তি মোঃ খুরশীদ আলম।
বরাবরের মতো এবারও বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত দিয়েই সূচনা করা হয় অনুষ্ঠানের। প্রবাসীদের প্রিয় সংগঠন উত্তরণ বাংলাদেশ কালচারাল গ্রুপ যন্ত্রে জাতীয় সংগীতের সুর তোলে।
জাতীয় সংগীতের পর শুরু হয় মূল আয়োজন। প্রথমেই আমন্ত্রিত অতিথিদের মঞ্চে আহ্বান জানানো হয়। এরপর একদল শিশু-কিশোর অতিথিদের ফুলের মালা দিয়ে বরণ করে নেয়। এর পর প্রথম পর্ব অর্থাৎ শুভেচ্ছা বক্তব্যের শুরুতেই অতিসম্প্রতি জাপানে কুমামোতো প্রিফেকচারে ভূমিকম্পে নিহত, আহত এবং ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে এবং নিহতদের আত্মার শান্তি কামনায় দাঁড়িয়ে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
শুভেচ্ছা বক্তব্য পর্বের শুরুতেই ৮ম প্রবাস প্রজন্ম আয়োজন কমিটির আহ্বায়ক মুন্শী কে. আজাদ শুভেচ্ছা বক্তব্য রাখেন। শুভেচ্ছা বক্তব্যে তিনি সবাইকে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানিয়ে প্রবাস প্রজন্ম জাপানের আদর্শ ও উদ্দেশ্য তুলে ধরেন।
এরপর অভিভাবকদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন বিসিসিআইজের সাধারণ সম্পাদক হাকিম এমডি নাসিরুল। তিনি বলেন, প্রবাস প্রজন্ম জাপানে আমাদের দ্বিতীয় প্রজন্মকে বাংলা সংস্কৃতি শিক্ষায় নাড়া দিতে পেরেছে। এই আয়োজনকে ঘিরে যাদের ঘরে বাচ্চা আছে তাদের প্রায় প্রতিটি ঘরেই বিভিন্ন চর্চা হচ্ছে। অভিভাবকরা তাদের সন্তানদের কিছু না কিছু শিখাচ্ছেন। বাচ্চারাও অংশগ্রহণকারী অন্য বন্ধুদের দেখে নিজেও অংশ নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছে। সেই হিসেবে আমি বলব আয়োজকদের কষ্ট এবং উদ্দেশ্য সফল হয়েছে। জাপানে আমরা যারা বসবাস করছি তাদের সন্তানদের বাংলা সংস্কৃতি শিখানোটা বিভিন্ন কারণেই হয়ে ওঠে না। এই প্রবাস প্রজন্ম আমাদের তাগিদ দেয় নিজ দেশীয় সংস্কৃতি শিখানোর উপর। আমি সেই জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
এবার ব্যতিক্রম ছিল স্পনসরদের পক্ষ থেকে বক্তব্য। জাপানে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী মোঃ শহীদুল ইসলাম নান্নু স্পনসরদের পক্ষ থেকে বক্তব্য রাখেন। তিনি তার বক্তব্যে জাপান প্রবাসীদের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় টোকিওতে শহীদ মিনার নির্মাণ, টোকিও বৈশাখী মেলা, প্রবাস প্রজন্ম আয়োজন করার কথা উল্লেখ করে বলেন, আসুন এভাবে আমরা সবার সম্মিলিত উদ্যোগে জাপানে বাণিজ্যিকভাবে একটা বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠা করি। যেখানে আন্তর্জাতিক কারিকুলামের পাশাপাশি বাংলাভাষায় শিক্ষা দেয়া হবে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বাংলাদেশিদের দ্বারা পরিচালিত এরকম অনেক প্রতিষ্ঠান রয়েছে। সম্মিলিত প্রচেষ্টায় জাপানেও তা সম্ভব। এই ব্যাপারে তিনি বাংলাদেশ দূতাবাসের সহযোগিতা কামনা করেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে কাৎসুও ইয়োশিনারি তার স্বভাবসুলভ বক্তব্যে বলেন, আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি, বাংলাদেশিদের ভালোবাসি। আমরা সব ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের সবাই বাংলাদেশি। বিশবারেরও বেশি আমি বাংলাদেশ গিয়েছি। এই সংগঠনটি যখন শুরু করে তখন থেকেই আমি প্রতিটি আয়োজনেই যোগ দিয়ে থাকি। আমার মনে হয় আমি এই সংগঠনেরই একজন হয়ে গেছি। বাংলাদেশিদের ভালোবাসি বলেই এমনটি মনে হয়।
তিনি বলেন, জাপানে অনেক দেশের লোকজনই বসবাস করেন। তার মধ্যে বাংলাদেশিদের সুনাম সর্বোচ্চ। আর বাংলাদেশিদের সংস্কৃতি এবং দেশপ্রেম প্রশ্নাতীত। বাংলা সংস্কৃতিও অনেক সমৃদ্ধশালী। প্রবাস প্রজন্মের প্রতিটি শিশুই প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রতিভার বিকাশ ঘটাচ্ছে। স্থানীয় জাপানসহ অন্যান্য দেশের শিশুদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তারা এগিয়ে যাচ্ছে।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যের পর ৮ম প্রবাস প্রজন্ম ২০১৬ চিত্রকলা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের হাতে পুরস্কার তুলে দেয়া হয়। এ বছর চিত্রকলায় প্রথম পুরস্কারটি অর্জন করে রিফা। নার্পিজা অর্পি এবং আকিব হায়দার লাবিব যৌথভাবে দ্বিতীয়, ভাগ্যশ্রী পাল এবং নিশাত হায়দার লামিয়া যৌথভাবে তৃতীয়স্থান অধিকারীর গৌরব অর্জন করে। এছাড়াও বিশেষ পুরস্কার হিসেবে নাশরাহ আহমেদ এবং জেসিয়া বিনতে জাবেদকে পুরস্কৃত করা হয়।
এরপর ৮ম প্রবাস প্রজন্ম সম্মাননা ২০১৬ প্রাপ্ত এবং বাংলাদেশ থেকে আমন্ত্রিত প্লে-ব্যাক সম্রাট সংগীত জগতের কিংবদন্তি মোঃ খুরশীদ আলমের হাতে প্রবাস প্রজন্ম সম্মাননা তুলে দেয়া হয়। টোকিওস্থ বাংলাদেশ রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা তার হাতে এ সম্মাননা তুলে দেন। এ সময় দর্শকসারির সবাই দাঁড়িয়ে শিল্পীর প্রতি সম্মান প্রদর্শন করেন।
সম্মাননা পাওয়ায় অনুভূতি জানিয়ে মোঃ খুরশীদ আলম বলেন, যে কোনো সম্মাননাই কোনো শিল্পীর জন্য বড় সুখানুভূতির। আমার ক্ষেত্রে এ সম্মাননা আরও বেশি সুখের। কারণ আমার মতো একজন সাধারণ মানুষকে আপনারা নির্বাচিত করেছেন, আমন্ত্রণ জানিয়েছেন এবং সম্মাননাও দিচ্ছেন বিদেশের মাটিতে, তাও আবার আগামী প্রজন্মের সংগঠন থেকে, এ অনুভূতি ভাষায় প্রকাশ করার মতো নয়। তার চেয়েও আমি আরও বেশি অভিভূত যে, এই জাপানের মাটিতেও একটি অনুষ্ঠানের শুরুতে আপনারা বাংলাদেশের জাতীয় সংগীত বাজালেন তা দেখে। কারণ আজকাল বাংলাদেশে জাতীয় সংগীত বাজানো বা এর প্রতি সম্মান জানানো তেমন চোখে পড়ে না। আমাদের সময় স্কুল শুরুর পূর্বে প্রতিদিন দাঁড়িয়ে জাতীয় সংগীত গাওয়াটা ছিল বাধ্যতামূলক। এখন হয় কিনা জানা নেই। অনেক দিন পর দেখে আবেগে আপ্লুত। দোয়া করি, আপনাদের এই অগ্রযাত্রা চিরস্থায়ী হোক। আজকের এই শিশুরাই একদিন বড় হবে, দেশের হাল ধরবে। তাই সবার আগে তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জাগাতে হবে। আমি আপনাদের সার্বিক মঙ্গল কামনা করি।
প্রধান অতিথি রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমা তার শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, এমন একজন গুণী শিল্পীর হাতে সম্মাননা তুলে দিতে পেরে নিজেকে অত্যন্ত সৌভাগ্যবান মনে করছি। জাপানে একটি শিশু সংগঠন ৮ম বারের মতো এমন আয়োজন করতে পারছে এবং আমি যতোদূর জেনেছি আপনারা বাংলাদেশের সব গুণীজনকে আমন্ত্রণ জানিয়ে সম্মাননা দিয়ে থাকেন এটি কম কথা নয়। শিশু-কিশোরদের কাজ করতে গেলে অনেক কষ্টসাধন করতে হয়। অনেক বিড়ম্বনায় পড়তে হয়। তারপরও আপনারা করছেন এই জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। আমি ব্যক্তিগতভাবে আমার সহকর্মীবৃন্দ এবং সর্বোপরি আপনাদের দূতাবাস সব সময় আপনাদের পার্শ্বে থাকবে বলে আমি আপনাদের কথা দিচ্ছি। আপনাদের সাফল্য কামনা করি।
অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বে ছিল শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক পর্ব, অর্থাৎ মূল আকর্ষণ।
প্রবাস প্রজন্ম সংবাদ পাঠ, অভিনয়, নাচ, গান, পিয়ানো, আবৃত্তি দিয়ে অনুষ্ঠান ঢেলে সাজানো হয়।
রাহমান মনি’র পরিকল্পনা, তথ্য ও সম্পাদনায় অনুষ্ঠানের প্রথমেই প্রবাস প্রজন্ম সংবাদ ২০১৬ সংবাদ পাঠ করেন এডভোকেট হাসিনা বেগম রেখা। প্রবাস প্রজন্ম সংবাদ জাপানে বাংলাদেশিদের কার্য পরিচয়ের সার্বিক চিত্র তুলে ধরা হয়। স্থান পায় দূতাবাসের সংবাদও।
এরপর উত্তরণ সাংস্কৃতিক দলের খুদে শিল্পীরা প্রথমে সঙ্গীত (কোরাম) পরিবেশন করে। এ দলের খুদে শিল্পীরা হচ্ছে ইমন, শব্দ, গোধুলী, নবুওয়াত, মাহা, ফাগুন ও মিহি। খুদে রকস্টার শব্দ জেমস এর বিখ্যাত ‘পাগলা হাওয়ার তরে গানটি গেয়ে দর্শকদের তাক লাগিয়ে দেয়।
আবৃত্তিতে তনুতা ঘোষ, শেখ জান্নাত মিনিশা এবং জেসিয়া বিনতে জাবেদ অংশ নিয়ে জানান দেয় জাপানে বেড়ে ওঠলেও আবৃতি চর্চায় তারা পিছিয়ে নেই।
শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে এ বছর নৃত্যে অংশ নেয় নার্পিজা অর্পি, স্নেহা দাস, আংকা বণিক, আজরিন কারিমা নাবা, নাশবাহ আহমেদ এবং আকি বড়–য়া। এদের সবাই একক নৃত্য পরিবেশন করে। ছোট মণি নাবা’র নাচ দর্শক উপভোগ করেছে সবচেয়ে বেশি। আকি বড়–য়া প্রবাস প্রজন্ম জন্মলগ্ন থেকে অংশ নিয়ে আসছে। এ বছর ছিল তার শেষ অংশ নেয়া। উচ্চ শিক্ষার্থে আমেরিকায় চলে যাবে বলে আর অংশ নেয়ার সুযোগ থাকবে না। প্রবাস প্রজন্মের পক্ষ থেকে আকি বড়–য়ার সার্বিক মঙ্গল কামনা করে এবং প্রতি বছর অংশ নেয়ায় কৃতজ্ঞতা জানানো হয়।
প্রতি বছরের মতো এবারও ওয়াসি রহমান এবং নিশাত হায়দার লামিয়া জুটি দর্শকদের মন জয় করে নিতে সক্ষম হয়। এবছর তারা জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের আলগা করগো খোঁপারই বাঁধা গানটিতে দ্বৈত নাচে অংশ নিয়ে থাকে। ওয়াসি এবং লামিয়া জুটি স্টেজে ওঠার আগে নাম ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গে দর্শকদের করতালি শুরু হয়ে যায়। এ বছরও তার ব্যতিক্রম হয়নি। এ জুটিও কখনও দর্শকদের নিরাশ করেনি।
এ বছর দর্শকদের বিশেষ উপহার দিতে তাকিনোগাওয়া হলে সাক্ষাৎ তিনটি পরী নেমে এসেছিল ভিন গ্রহ থেকে। এই প্রথম বারের মতো তারা টেজ পারফর্ম করে দর্শকদের হৃদয় জয় করে নেয়। তাইয়েবা ফারিয়া হাবিব, আরুবা সাফা এবং সামারা সামীন এ বছর প্রথম বারের মতো প্রবাস প্রজন্ম আয়োজনে অংশ নেয়। প্রথম বারেই তারা নৃত্যে তাদের শক্ত অবস্থানের কথা জানান দেয়। ‘ঝুন ঝুন ময়না নাচো না’ গানটির সঙ্গে এই খুদে নৃত্য শিল্পীরা গ্রুপ নাচে অংশ নিয়ে থাকে। একটু প্রশিক্ষণ পেলে তারা যেকোনো প্রফেশনাল শিল্পীদের চেয়ে ভালো করবে বলে দর্শক সারি থেকে মন্তব্য শুনা গেছে। বিশেষ করে তাইয়েবা। যদিও তিনজনেই খুব ভালো করেছে।
৮ম প্রবাস প্রজন্ম আয়োজন গানে অংশ নেয় অবন্তি দাস, সুহিনা বড়–য়া, আদিত্য দাস এবং অহনা বড়–য়া। এছাড়াও একটি জাপানি গান পরিবেশন করে নওরিন হাকিম। মিষ্টি মেয়ে খ্যাত নওরিন হাকিম জানিয়ে দেয় জাপানি গানেও প্রবাস প্রজন্ম পিছিয়ে নেই। জাপানের প্রখ্যাত সংগীত শিল্পী এবং মডেল রোলাও যে বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত এবং নওরিন হাকিমরা তারই উত্তরাধিকারী। রোলা ২০১১ সালের ৪র্থ প্রবাস প্রজন্ম সম্মাননা প্রাপ্ত এবং প্রবাস প্রজন্মের গৌরব।
পিয়ানোয় তাশদীন আলী অংশ নিয়ে বাংলা গানের শ্রুতিমধুর একটি সুর তুলেন।
প্রবাসীদের আরেকটি প্রিয় সংগঠন স্বরলিপি কালাচারাল একাডেমির শিক্ষার্থীরা দলীয়ভাবে অংশ নিয়ে জানান দেয় প্রশিক্ষণ তাদের কতো দূর এগিয়ে নিয়ে যায়। স্বরলিপি জাপানে শুধু প্রবাসী শিশু-কিশোরদেরই বাংলা সংস্কৃতি শিখায় না, জাপানি শিক্ষার্থীদেরও বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি প্রশিক্ষণ দিয়ে থাকে। জাপানে বাংলাদেশি সংস্কৃতি প্রসারে স্বরলিপির অবদান অনস্বীকার্য। দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে তারা নিরলসভাবে এ কাজটি করে যাচ্ছে।
ড. তপন পালের পরিকল্পনা এবং কলির প্রশিক্ষণে স্বরলিপির খুদে শিল্পীদের মধ্যে কাব্য জ্যোতি বিশ্বাস, রাইহানা হোরি, রেইনা হোসেন, কথাশ্রী বিশ্বাস, ইয়ুতো কুদ্দুস, মাহিরু হোরি, ভাগ্যশ্রী পাল, ইয়ুকি কুদ্দুস, প্রগতি ঘোষ, ইউবি দাস এবং সম্প্রীতি ঘোষ অংশ নেয়।
শিশু-কিশোরদের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শেষে মঞ্চে উঠেন দেশ বরেণ্য শিল্পী মো. খুরশীদ আলম। তিনি একটি দেশাত্মবোধক গান দিয়ে শুরু করেন। এরপর একে একে বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় গান গেয়ে শোনান। সব শেষে দর্শকদের অনুরোধে বাংলা ছায়াছবির বেশ কয়েকটি গান গেয়ে শ্রোতাদের অনুরোধে সাড়া দেন যা তিনি বিভিন্ন ছায়াছবিতে গেয়েছিলেন এবং শ্রোতাদের কণ্ঠে আজও শোনা যায়। তার একটি ডুয়েল গানে ‘যদি বউ সাজোগো’ স্থানীয় প্রবাসী শিল্পী তানিয়া ইসলাম কণ্ঠ দেন।
অনেক দিন পর জাপান প্রবাসী বাংলাদেশিরা তাদের প্রিয় শিল্পীকে কাছে পেয়ে এবং নিজেদের পছন্দের গান শুনতে পেয়ে প্রবাস জীবনের যান্ত্রিক জীবন ভুলে স্বদেশি আমেজে নিজেকে ফিরে পাওয়ার আনন্দে মেতে উঠেন। সেই সঙ্গে প্রিয়শিল্পীর সঙ্গে নিজেকে ক্যামেরায় বন্দী করতেও ভুল করেননি। ভক্তদের আহ্বানে খুরশীদ আলমও ক্লান্তিহীন পোজ দিয়ে যান বিরতিহীন।
এবারও শিল্প ও জাওয়া জাপান-বাংলা দুই দেশের বন্ধুত্বের সেতুবন্ধন হিসেবে তার নিজের লেখা ও সুরে “তুমি লাল সবুজের দেশ, আমি সূর্যোদয়ের দেশ” গানটি গেয়ে শোনান।
সব শেষে অংশগ্রহণকারী শিশু-কিশোরদের মাঝে মেডেল তুলে দেন অতিথিবৃন্দ। এ বছর অংশ গ্রহণকারীদের মধ্যে মাত্র একজন শিক্ষা জীবন শুরু করায় প্রবাস প্রজন্মের পক্ষ থেকে অভিনন্দন উপহার দেওয়া হয়। স্নেহা দাস, রাষ্ট্রদূত রাবাব ফাতিমার কাছ থেকে এ উপহার গ্রহণ করে।
সমস্ত অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন নিয়াজ আহমেদ জুয়েল এবং সঙ্গীতা রাজবংশী, আহ্বায়ক মুনশী কে আজাদের তত্ত্বাবধানে অনুষ্ঠান পরিকল্পনা ও পরিচালনার সার্বিক দায়িত্ব পালন করেন রাহমান মনি।
সমাপ্তি ঘোষণার প্রাক্কালে যাদের মহানুভবতায় অনুষ্ঠান সম্ভব হয়েছে সেই সব স্পন্সরদের মঞ্চে আহ্বান করা হয়। দেখা হবে আগামী আয়োজনে এই আশা ব্যক্ত করে ৮ম প্রবাস প্রজন্ম ’১৬ সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়। মিডিয়া পার্টনার ছিল জনপ্রিয় ম্যাগাজিন সাপ্তাহিক।
rahmanmoni@gmail.com
সাপ্তাহিক
Leave a Reply