নানা সমস্যায় জর্জরিত সিরাজদিখান উপজেলার ৩৫ নং গুয়াখোলা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবস্থা অত্যন্ত নাজুক। ভবনের অবস্থা অত্যন্ত ঝুকিপূর্ন, শিক্ষক সল্পতা, যোগাযোগ সমস্যা, উপকরনের অভাব ইত্যাদি। অনেকটা কর্তৃকক্ষের অবহেলাই এ দুরবস্থার কারন বলে অভিযোগ বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদ, এলাকাবাসী ও শিক্ষকবৃন্দের।
বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সল্পতা প্রকট আকার ধারন করেছে। শিক্ষকের সমস্যা দীর্ঘদিনের। বিদ্যালয়টি শিক্ষকের সাতটি পদ থাকলেও বর্তমানে কাজ করছে মাত্র তিন জন। তার মধ্যে প্রধান শিক্ষককে অফিসের কাজে প্রায়ই উপজেলা শিক্ষা অফিসসহ বিভিন্ন কাজে ছুটতে হয়। তাই বাকী দুই জন শিক্ষকের পক্ষে দুই শত ত্রিশ জন ছাত্র-ছাত্রীর ৬ টি ক্লাসে পড়াশোনা করানো কঠিন হয়ে পরছে।স্কুল চলাকালীন সময় শিক্ষকের অভাবে ক্লাসে ছোট ছোট শিক্ষার্থীরা প্রায়ই হৈচৈ ও মারামারি করতে থাকে বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট অনেকটা কৃত্রিম। কারন বিদ্যালয়টিতে শিক্ষক সংকট থাকলেও এ বিদ্যালয় থেকে অনেক শিক্ষককে প্রেসনে অন্যত্র দায়িত্ব¡ পালন করাচ্ছে শিক্ষা কর্মকর্তা । অথচ অন্যত্র যে বিদ্যালয়ে দায়িত্ব পালন করাচ্ছেন সে বিদ্যালয়ে শিক্ষকের কোন পদ খালি নেই। এমনকি অনেক শিক্ষককে নিয়ম বহির্ভূত অন্যত্র বদলি করছে শিক্ষা কর্মকর্তা। তাই এ কৃত্রিম সংকট সৃষ্টির কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ বেলায়েত হোসেন বলেন, অনৈতিক এ কাজ গুলি আমি করেছি উপরের নির্দেশে।
এছাড়া বর্তমানে একটি পরিত্যাক্ত ভবনে চলছে শিক্ষাকার্যক্রম। ক্লাশ চলাকালীন সময় প্রায়ই ছাদের প্লাস্টার খসে শিক্ষার্থীদের উপর পরে। কিছুদিন পূর্বে কয়েক জন শিক্ষার্থী আহত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসা পর্যন্ত নিতে হয়েছে। ভবনটির ছাদ, ওয়াল ও পিলারের মধ্যে বড় বড় ফাটল ধরেছ। বৃষ্টির সময় ছাদ দিয়ে পানি পরে। তাই আকাশে মেঘ দেখলেই অনেক সময় বিদ্যালয় ছুটি দিয়ে দিতে হয়। বিদ্যালয় পরিচালনা পরিষদের সভাপতি সামসুজ্জামান পনির বলেন, উপজেলার অনেক বিদ্যালয় আছে যেগুলোর অবস্থা এ বিদ্যালয়ের চেয়ে ভাল, সেগুলো নতুনভাবে নির্মাণ করা হচ্ছে। কিন্তু অনগ্রসর এলাকায় বিমাতা সুলভ আচরণ করা হচ্ছে।
বিদ্যালয়টি পিএসসিসহ বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষা ছাড়াও বরাবর ভাল ফলাফল করে আসছে। কিন্তু বর্তমান এ দূরবস্থার কারনে ফলাফল খারাপের দিকে যাচ্ছে। বিদ্যালয়টিতে বিভিন্ন শিক্ষা উপকরনের অভাব রয়েছে। ছাত্র-ছাত্রীদের নেই কোন খেলার মাঠ। ছাত্র-ছাত্রীদের যাতাযাতের রাস্তার দুরবস্থাসহ বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত বলে জানান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ আমানুল্লাহ।
জনকন্ঠ
Leave a Reply