কাজী সাবি্বর আহমেদ দীপু: মুন্সীগঞ্জ জেলার অতি পুরনো ঠোঙ্গাশিল্প বর্তমানে বিলুপ্তির পথে। এক সময় এ শিল্পের সঙ্গে ১০ থেকে ১২ হাজার পরিবার জড়িত ছিল। অনেক পরিবার এ শিল্পের ওপর নির্ভর করে জীবিকা নির্বাহ করত। এ শিল্পকে ঘিরে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার কমলাঘাট, রিকাবীবাজার, কাগজীপাড়া, মস্তানবাজার, ফিরিঙ্গিবাজারসহ জেলার ৬টি উপজেলার বিভিন্ন স্থানে ঠোঙ্গার বাজার গড়ে উঠেছিল। প্রতিদিন এ বাজারগুলোতে কম করে হলেও দুইশ’ মণ ঠোঙ্গা বেচাকেনা হতো। সারাদিন ঠোঙ্গা ক্রেতা-বিক্রেতার কোলাহল ছিল চোখে পড়ার মতো। কালের বিবর্তনে আজ এই ঠোঙ্গাশিল্প বিলুপ্তির পথে। ফলে এ পেশায় নিয়োজিত লোকজন এ শিল্পের প্রতি উৎসাহ হারিয়ে ফেলেছে। তারা অন্য পেশায় যুক্ত হয়ে পড়েছে। বর্তমানে এ পেশায় নিয়োজিত পরিবারের সংখ্যা ৫শ’ থেকে এক হাজারে নেমে এসেছে। ফলে অতি পুরনো এ ঠোঙ্গাশিল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।
এ পেশার সঙ্গে জড়িত মীরকাদিম পৌরসভার মস্তানবাজারের ব্যবসায়ী ফরিদ হোসেন জানান, ৪০ বছর ধরে তিনি ঠোঙ্গাশিল্প ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। বর্তমানে বৃদ্ধ হয়ে যাওয়ায় ছেলে মাসুদ রানা ব্যবসা দেখাশোনা করছেন। ৬০ জন নারী কর্মচারী নিয়ে তিনি এ ঠোঙ্গাশিল্প ধরে রেখেছেন। নারায়ণগঞ্জের দিগুবাবুর বাজার, মুন্সীগঞ্জ সদর বাজার ও মুন্সীরহাট বাজারে বিভিন্ন দোকানে ঠোঙ্গা বিক্রি করে থাকেন। এক হাজার বড় ঠোঙ্গা ৪শ’ টাকা, মাঝারি ধরনের ৩শ’ টাকা ও ছোট আকারের ঠোঙ্গা ২শ’ টাকায় বিক্রি করে থাকেন।
তিনি বলেন, এক সময় এই ঠোঙ্গাশিল্পে অনেক ব্যবসায়ী জড়িত থাকলেও পুঁজির স্বল্পতা, উৎপাদন খরচ বৃদ্ধি, উৎপাদিত ঠোঙ্গার সঠিক বাজার মূল্য না পাওয়া, পুরুষ শ্রমিকের অভাব এবং পলিথিন ব্যাগের ছড়াছড়ির কারণে অনেকেই এ ব্যবসা ছেড়ে অন্য ব্যবসায় জড়িত হয়ে পড়েছেন। বর্তমানে মস্তানবাজার এলাকার মজিবর মিয়া, ফিরোজ হোসেন, আমির হোসেন, বারেক বেপারীসহ ৬ থেকে ৭ জন ঠোঙ্গাশিল্পের ব্যবসায় জড়িত আছেন। এ ছাড়া ফিরিঙ্গিবাজার এলাকায় দুই থেকে তিনজনসহ জেলার ৬টি উপজেলার কয়েকশ’ ব্যবসায়ী এ পেশা ধরে রেখেছেন।
সমকাল
Leave a Reply