ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালে নেওয়ার পথে এক ব্যক্তির মৃত্যুর পর মুন্সীগঞ্জে জানাজার খবরে আতঙ্ক ছড়িয়েছে। তবে এই ব্যক্তিকে কুর্মিটোলা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়নি এবং তিনি হার্টঅ্যাটাকে মারা গেছেন বলে কুর্মিটোলা হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে। মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার পশ্চিম শিয়ালদা গ্রামের এই ব্যক্তি একটি মাদ্রাসায় মুহতাতিম ছিলেন।
কুর্মিটোলা হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল জামিল আহমেদ বলেন, বুধবার বিকালে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে ওই রোগীকে তাদের হাসপাতালে পাঠানো হয়। কিন্তু পথেই তিনি মারা যান। হাসপাতালে আসার পর মরদেহ গাড়িতেই ছিল।
“তার নভেল করোনাভাইরাসের কোনো লক্ষণ ছিল না। আমরা তার কাগজপত্র, রোগ হিস্ট্রি দেখেছি। করোনাভাইরাসে (কোভিড-১৯) আক্রান্ত হওয়ার কোনো লক্ষণ ছিল না তার। তিনি হার্টঅ্যাটাকে মারা গিয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন। আগেও স্ট্রোক করার ইতিহাস আছে তার। কোভিড-১৯ রোগী আক্রান্ত হওয়ার পর হঠাৎ করে মারা যায় না। পুরো শরীরে রোগের প্রভাব পড়ে ধীরে ধীরে।”
তবে তারা তার নমুনা পরীক্ষা করতে পারেননি।
জামিল আহমেদ বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “আমরা ওই ব্যক্তির মরদেহ হাসপাতালে রেখে আইইডিসিআরে নমুনা পাঠাতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তার স্বজনরা এতে রাজি হননি। তারা মরদেহ নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে খুবই অ্যাগ্রেসিভ ছিলেন। যেহেতু তারা রাজি হচ্ছিলেন না আর করোনাভাইরাসের লক্ষণও ছিল না, এ কারণে আমরা তাদের ছেড়ে দিয়েছি। তারা কোনো ডেথ সার্টিফিকেটও নেননি। আমাদের এখানে ভর্তি রোগী হলে আমরা কখনোই ছাড়তাম না।”
এদিকে সিরাজদিখানে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় স্থানীয় প্রশাসন অতিরিক্ত সতর্কতা হিসেবে ব্যবস্থা নিয়েছে।
সিরাজদিখান থানার ওসি মো. ফরিদ উদ্দিন বলেন, ওই ব্যক্তি করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে বৃহস্পতিবার রাতে খবর আসে। ঢাকার কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল থেকে গোপনে লাশ এনে মুন্সীগঞ্জে বড় জানাজা হওয়ার খবরও ছড়িয়ে পড়ে। এতে এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ায় তার মৃত্যুর আগে ও পরে যারা তার সংস্পর্শে এসেছিলেন তাদের বাড়ি পুলিশ অবরুদ্ধ করেছে। ওই ব্যক্তি ঢাকার গেন্ডারিয়ায় বাস করতেন। সেখানে গোসল করিয়ে সিরাজদিখানে তার ভাইয়ের বাড়িতে লাশ এনে জানাজার পর দাফন করা হয়। তার ঢাকার বাড়িও সেখানকার পুলিশ অবরুদ্ধ করেছে।
তবে অবরুদ্ধ করার আগে খবর শুনে মৃত ব্যক্তির ছেলে পালিয়ে গেছেন বলে জানিয়েছেন সিরাজদিখান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আশফিকুন নাহার।
তিনি বলেন, তাছাড়া এলাকার লোকজন জানাজায় অংশ নেওয়ায় পুরো শিয়ালদা গ্রামটি অবরুদ্ধ করা হচ্ছে। বাইরে থেকে আর কেউ তার সংস্পর্শে এসেছিলেন কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। যারা কবরে লাশ নামিয়েছেন তাদের শনাক্ত করার চেষ্টা চলছে।
বিডিনিউজ
Leave a Reply