আলু রোপণে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়েছে গজারিয়ায়

চলতি মৌসুমে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া উপজেলায় আলু রোপনে লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। প্রথম দিকে প্রবল বর্ষণে বপনকৃত আলুর জমি নষ্ট হয়ে গেলেও চাষিরা হাল ছাড়ে নাই। এ বছর চড়া দামে বীজ, লাঙ্গল চাষ, শ্রমিক মজুরি থাকা সত্বেও আলু বপনে পুনরায় ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে চাষিদের মধ্যে। বাউসিয়া গ্রামের আলী দেওয়ান ও রুহুল আমিন জানান, অতিরিক্ত বৃষ্টির দরুণ রোপনকৃত জমিগুলো সব নষ্ট হয়ে গেছে। বীজ কিনে আবার রোপন করতে অতিরিক্ত খরচ পড়ছে প্রায় পঁচিশ হাজার টাকা। তারা আরো জানান, গত দশ বছরে আলু চাষে আমাদের ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এ বছর ৩/৪ গুণ লাভ হয়েছে। মূলধন ফিরে পেয়েছি। ফলে আমরা নতুন উদ্যমে আলু চাষে নেমে গেছি আরো পাবার প্রত্যশা নিয়ে। করিম খাঁ গ্রামের মিন্টু মিয়া বলেন, এ বছর প্রতি বিঘায় ৪০ হতে ৪৫ হাজার টাকা খরচ পড়বে।
উপজেলা কৃষি স¤প্রসারণ অধিদফতর সূত্রে জানা যায়, এ বছর উপজেলায় দুই হাজার তিনশত পঞ্চাশ হেক্টর জমি আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা তৌফিক আহমদ নুর বলেন, এ বছর উপজেলায় দুই হাজার চারশ’ পঞ্চান্ন হেক্টর জমিতে আলু চাষ করা হয়।

যা লক্ষ্যমাত্রার বেশি। কৃষি স¤প্রসারণ অফিসার নাহিদ হাসান বলেন- এ বছর আলুর দাম বেশি পাওয়ায় চাষিদের মাঝে আবাদী জমির পরিমান বেড়েছে। রোপনের সময় বীজ আলুর লোকাল আলু প্রতি বস্তা (৫০ কেজির) কিনতে খরচ পড়েছে ২ হাজার হতে দুই হাজার দুইশ’ টাকা। হল্যান্ডের নতুন বাক্র (৫০ কেজি) ৫৮০০-৬০০০ টাকা কিনতে হয়েছে। রোপনের শেষের দিকে দাম কমে ঐ বাক্র ২৫০০ টাকায় নেমে আসে। ফলে বীজ আলু বপনে চাষিরা আরো ঝুঁকে পড়ে। এ বছর চাষিরা ডায়মন্ড, এলগা আলু রোপন করেন।

এ দিকে আলু চাষের জন্য চাষিদের মধ্যে টিএসপি সারের সঙ্কট দেখা দিয়েছে। টিএসপির পরিবর্তে ডাই- এ্যমোনিয়াম ফসফেট (ড্যাপ) সার বাজারে সরবরাহ থাকলেও চাষিরা নিতে নারাজ। চাষিদের ফসল উৎপাদন আশানুরুপ হবে বলে আশ্বাস দিয়ে সামান্য পরিমান বিতরণ করছে। বাউসিয়া ইউনিয়নে নিযুক্ত বিসিআইসি ও বিএডিসি ডিলার মেসার্স হিমাকনস্ট্রাকশন জানান, টিএসপি›র বরাদ্ধ কম। কারণ সরকার ডাই-এ্যামোনিয়া ফসফেট (ড্যাপ) সার কৃষক বা চাষিদের মধ্যে সরবরাহ বেশি করতে চাচ্ছে। উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর সূত্র আরো জানা যায়, এ বছর রবিশস্য মৌসুমে উপজেলায় ইউরিয়া ৪০১৫ মে. টন, টিএসপি ২৭৯৩ মে. টন, ড্যাপ ২৭৯৩ মে. টন, ও মটারেট অব পটাশ ২৪৬৮ মে. টন এর চাহিদা রয়ছে। কিন্তু প্রথম দিকে সারের সরবরাহ কম থাকে। পরে সারের দাম স্থিতাশীল থাকায় কৃষকদের সার ক্রয় করতে ব্যাঘাত হয়নি।

এদিকে জমিতে আলুর চারা গজিয়ে উঠছে। চাষিরা জমিতে চারার পরিচর্যা ও সেচ ব্যবস্থা করছে। পরিচর্যার জন্য ময়মনসিংহ, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী হতে মহিলা শ্রমিকরা আসছে।

মোহাম্মদ সাহাব উদ্দিন
ইনকিলাব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.