সিরাজদিখানে বাহারি ফুলে রঙিন নার্সারি

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলার নার্সারিগুলো শীতের বাহারি ফুলে নতুন ভাবে সেজেছে। লাল, সাদা, হলুদ, বেগুনী, গোলাপীসহ বিভিন্ন ফুলের রঙে নার্সারি যেন আরো রঙিন হয়ে উঠেছে। এক নজরেই ফুল প্রেমিদের মন কেড়ে নেয় নার্সারিগুলো।

এবার শীতের শুরু থেকেই ফুলে ফুলে নতুন এক রূপ ধারণ করেছে উপজেলার ৬টি নার্সারি। রাস্তার পাশে নার্সারিগুলো দেখলে চোখ জুড়িয়ে যায়। ফুলের সাথে রয়েছে ফলজ ও বনজ গাছ। এছাড়া বিভিন্ন সবজির চারাও রয়েছে। বাসাবাড়ি বা অফিসের সৌন্দর্য বর্ধনের জন্য নার্সারিগুলোতে ফুলের গাছের কদর বেড়েছে।

প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে লোকজন এসে নিজেদের পছন্দের ফুল গাছ কিনে নিচ্ছেন। সিরাজদিখানের ৬টি নার্সারিতে আশ্বিন থেকে ফাল্গুন পর্যন্ত ফুল গাছ ও চৈত্র থেকে আশ্বিন পর্যন্ত ফলজ ও বনজ গাছ বেশি বিক্রি হয়।
অভিযোগ রয়েছে, অনেক নার্সারি রেজিস্ট্রেশন ছাড়াই ফুল, ফল ও বনজ গাছের চারার ব্যবসা করছে। অপরদিকে কোনো কোনো নার্সারি বিভিন্ন মিথ্যা তথ্য দিয়ে গাছ বিক্রি করে। কিন্তু এসব দেখার মত কেউ নেই। সচেতন মহল বলছে, সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের নজরদারি বাড়ানোর দরকার যাতে করে কোনো ক্রেতা প্রতারিত না হয়।

সরেজমিনে নার্সারিগুলো ঘুরে দেখা যায়, এই শীতে শোভা পাচ্ছে গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, সালফিয়া, ডেন্টাস, স্টার, ক্যালেন্ডুলা, জিনিয়া, কসমস, গেলেরিয়া, নয়নতারা, দুপাটি, স্নোবল, চন্দ্রমল্লিকা, ডেজিসহ নানা ধরনের মৌসুমী ফুল। এছাড়া বারো মাসি ফুলের মধ্যে রয়েছে, এনোমেটিক জুই, এডিনিয়াম, আন¤ডা নিপাট, জবা, কামেনি, রঙ্গন, হাসনাহেনা, বেলি, কাটগোলাপ, রাধাচূড়া ও জুই।

শ্রাবন্তি নামে একটি নার্সারির মালিক সাইফুল ইসলাম বলেন, সিরাজদিখান ইছাপুর সড়কের পাশেই আমার নার্সারি। ১৫ বছর ধরে এ ব্যবসা করে আসছি। গোলাপ, গাঁদা, ডালিয়া, সালফিয়া, ডেন্টাস, দোপাটি ফুল রয়েছে। এছাড়া বিদেশি ফুলের মধ্যে রয়েছে চায়না গোলাপ, হাজারী গোলাপ, ভ্যানেলা গোলাপ, ডাবল রিলেট, কাটাছাড়া গোলাপ ব্ল্যাকরুবি এর ফুল দুই মাসেও গাছ থেকে ঝরে পড়ে না। এর বাইরে ইন্ডিয়ান গোলাপ, দেশি গোলাপতো রয়েছেই। এগুলোর একেকটা একেক ধরনের সৌন্দর্য ছড়ায়।

নার্সারিতে আছে ভিয়েতনাম, ভারতের কেরেলা ও দেশি জাতের নারিকেলের চারা। বিদেশি ফলের মধ্যে রয়েছে, রাম্বুটান, ডুরিয়ান, চেরি, পরছিমুল, এবকাঁঠাল, ম্যাঙ্গোস্টিন, স্ট্রবেরি, পেয়ারা, পিছফল, একফ্রুট, ড্রাগন, লাল কাঁঠাল, গোলাপি কাঁঠাল, আপেল ও আঙ্গুর। দেশি ফলের মধ্যে আছে বারোমাসি কাঁঠাল, আম, কমলা লিচু, সফেদা, ডালিম, আতা, শরিফা, জলপাই, কমলা, মালটা, জামবুরা, লেবু। সবজির চারা হিসেবে ক্যাপসিকাম, বেগুন, মরিচ, পেঁপে, লাউ, সিম গাছ রয়েছে। তবে ভিয়েতনামের নারকেল গাছ তিন বছরে ফলন দিবে গ্যারান্টি। তবে গাছের যত্ম করতে হবে।

শ্রাবন্তি নার্সারিত মাসে ১৫ হাজার টাকা বেতনে দিনে ১২ ঘণ্টা চারজন শ্রমিক কাজ করে। এছাড়াও নার্সারির মালিকের পরিবারের সবাই সহযোগিতা করে। অন্য কোনো কাজ নয়, সংসার ভালোই চলছে একমাত্র নার্সারি দিয়েই। বছরে সব খরচ বাদ দিয়ে প্রায় এক লাখ টাকার মতো থাকে। সব সময় নার্সারি খোলা থাকে। বিভিন্ন বাজারে হাটের তিন ধরনের গাছের চারা বিক্রি করা হয়।

দৈনিক ইনকিলাব

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.