এককালের ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ ২০৩৫ সালে হতে যাচ্ছে বিশ্বের ২৫তম বৃহৎ অর্থনীতি। বাংলাদেশ যখন স্বাধীন হয়, মুন্সীগঞ্জের আহসান উল্লাহ তখন ১৬ বছরের কিশোর। পরিবারে বাবা নেই। জায়গা-জমি কিংবা সম্পদও নেই। অগত্যা কৃষি কাজে দিনমজুরিই একমাত্র ভরসা।
অন্যের জমিতে আহসান উল্লাহ’র ভাষায় “কামলা দিয়ে” সংসার চালাতে থাকেন তিনি। কিন্তু পঞ্চাশ বছর পর আবুল হোসেন এখন এলাকায় বেশ স্বচ্ছল হিসেবে পরিচিত। ১৮ একর জমিতে করছেন আলু চাষ করেন।
পাশাপাশি গড়ে তুলেছেন কৃষি বীজের ব্যবসা। মুন্সীগঞ্জ ছাড়িয়ে যেটি বিস্তৃত হয়েছে অন্যান্য জেলাগুলোতেও।
আহসান উল্লাহ তার গল্প বলতে শুরু করলেন।
“শুরুটা করেছিলাম অল্প কিছু জমি লিজ নেয়ার মাধ্যমে। তখন সরিষা, গম এসব আবাদ হইতো। ৮০ সালের পর শুরু করলাম আলু চাষ। নতুন জাতের আলু’র বীজ, আধুনিক সার ব্যবহার শুরু করলাম। অন্যদের চাইতে ফলন বেশি হইতে থাকলো। লাভও বাড়তে থাকলো। এইভাবে বলতে পারেন তিলেতিলে আজকের এই অবস্থায়।”
গত পঞ্চাশ বছরে কৃষক আহসান উল্লাহ’র নিজের যেমন উন্নয়ন হয়েছে তেমনি কৃষি খাতেও নতুন নতুন জাতের ফলন শুরু হয়েছে।
গতানুগতিক ধান, গম, আলু, ভুট্টা ছাড়াও ক্যাপসিকাম, ড্রাগন ফল কিংবা স্ট্রবেরির মতো নতুন কৃষি পণ্যের উৎপাদন শুরু হয়েছে।
যেগুলোতে অনেক কৃষক যেমন লাভবান হয়েছেন, তেমনি কর্মসংস্থানও হয়েছে। উৎপাদন বাড়ায় দেশটি এখন খাদ্যেও স্বয়সম্পূর্ণ।
যদিও কৃষি নির্ভর অর্থনীতির দেশ হয়েও স্বাধীনতার পরে খাদ্য ঘাটতি ছিলো ব্যাপক।
সেই সময়ে দারিদ্র এবং ভঙ্গুর অর্থনীতির কারণেও বিশ্বে আলোচনায় ছিলো দেশটি। বাংলাদেশকে তাচ্ছিল্য করা হতো ‘তলাবিহীন ঝুড়ি’ বলে।
তাফসীর বাবু
বিবিসি বাংলা
Leave a Reply