লৌহজং হানাদারমুক্ত দিবস পালন করা হয়নি, ক্ষুব্ধ মুক্তিযোদ্ধারা

মিজানুর রহমান ঝিলু: ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে তৎকালীন মুন্সীগঞ্জের লৌহজং থানা পাক হানাদারমুক্ত হয়েছিল। এরপর থেকে প্রতি বছর ১৪ নভেম্বর স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা পাক হানাদারমুক্ত দিবস পালন করা হয়। গত বছরও দিবসটি জাঁকজমকভাবে পালন করা হয়। কিন্তু ১৪ নভেম্বর দিবসটি পালন করা হয়নি। এতে সাধারণ মুক্তিযোদ্ধারা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন।

এ বছর দিবসটি পালন না করার কারণ হিসেবে জানা যায়, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের ডেপুটি কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মহিউদ্দিন বাবুল মুন্সী ভারত সফরে আছেন। এ ছাড়া সাবেক কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহবুব-উল-আলম বাহার অসুস্থ থাকায় দিবসটিতে কোনো কর্মসূচি রাখা হয়নি।

তবে মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল গফুরকে এ বছর হানাদারমুক্ত দিবস পালনের আয়োজন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনিসহ আরও কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা গত রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আব্দুল আউয়ালের সাথে দেখা করতে যান এবং তাঁকে অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য অনুরোধ করেন।

মুক্তিযুদ্ধকালীন কমান্ডার বীর মুক্তিযোদ্ধা অ্যাডভোকেট ঢালী মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, ডেপুটি কমান্ডার বিদেশে অবস্থান করায় মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল গফুরকে হানাদারমুক্ত দিবস পালনের আয়োজন করার দায়িত্ব দেওয়া হয়। দাঁতের ব্যথা থাকায় আমার অনুষ্ঠানে না থাকার বিষয়টি জানিয়ে দিই।

মুক্তিযোদ্ধা ডা. আব্দুল গফুর জানান, আমিসহ ২০ জন মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমপ্লেক্সে ১১টায় উপস্থিত ছিলাম। ইউএনও না আসায় আমরা কোনো কর্মসূচি পালন না করেই চলে আসি।

উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের প্রশাসক ও নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ আব্দুল আউয়াল বলেন, স্থানীয়ভাবে হানাদারমুক্ত দিবস পালন একটি বেসরকারি প্রোগ্রাম। আমার কাছে কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধা এলে আমি তাঁদের অনুষ্ঠানে থাকার সম্মতি দিই। কিন্তু একই দিন উপজেলা আইনশৃঙ্খলা কমিটির মাসিক সভা ও ডিজিটাল উদ্ভাবনী মেলা থাকায় বেলা ১ টায় জানতে পারি ডেপুটি কমান্ডার বিদেশে অবস্থান করায় এবং কয়েকজন দায়িত্বশীল ব্যক্তি অসুস্থ থাকায় দিবসটি পালন করা হয়নি।

মুক্তিযোদ্ধা নজরুল ইসলাম লাল জানান, দুপুর ২টায় মুক্তিযোদ্ধা কমপ্লেক্সে গিয়ে গেট তালাবদ্ধ দেখতে পাই। কাকে অনুষ্ঠান আয়োজনের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে জানি না। মুক্তিযোদ্ধাদের মধ্যে মাহবুবুল আলম মনির, নুরুল আমিন মোড়ল ও দিদার হোসেন হানাদারমুক্ত দিবস পালন করা নিয়ে তাঁদের কেউ কিছু জানা যায়নি বলে জানান।

গত ৫ নভেম্বর ২৯০ জীবিত মুক্তিযোদ্ধার মাঝে ডিজিটাল সনদ ও স্মার্ট আইডি কার্ড বিতরণ করা। এত সংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা থাকা সত্ত্বেও হানাদারমুক্ত দিবস পালন না করাটা দুঃখ ও লজ্জাজনক বলে মনে করেন স্থানীয় সচেতন মহল।

গ্রামনগর বার্তা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.