জমিতে পানি, বিপাকে আলু চাষিরা

মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ে অপরিকল্পিতভাবে ডোবা-নালা ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ ও পলি মাটিতে খাল ভরাট হয়ে গেছে। এতে বর্ষার পানি আটকে গেছে কৃষিজমিতে। পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে উপজেলার কয়েক হাজার হেক্টর জমি পানিতে তলিয়ে রয়েছে। ফলে আলুর আবাদ শুরু হলেও লৌহজংয়ের একাধিক গ্রামের কৃষকরা পড়েছেন বিপদে। জমি থেকে সেচের মাধ্যমে পানি সরানোর চেষ্টা করছেন তাঁরা। জমি প্রস্তুত হওয়ার পর এসব এলাকার কৃষকরা আলু আবাদ শুরু করতে পারবেন বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলার খেদেরপাড়া, খলাপাড়া, কাজিরগাঁও, খিদিরপাড়া, বনসামন্ত, ঘোলতলি, ঢোলুগাঁও, জোড়পুল এলাকার কৃষিজমি এখনও পানিতে তলিয়ে আছে। এতে এলাকার কয়েক হাজার হেক্টর জমিতে এখনও আলু আবাদ শুরু করতে পারেননি কৃষক। অথচ রোপণের মৌসুম শুরু হয়ে গেছে। পানিতে তলিয়ে থাকা জমিতে আলু আবাদ নিয়ে উদ্বেগে তাঁরা।

খেদেরপাড়া বিলে গিয়ে দেখা যায়, পানি সেচের কাজে ব্যস্ত খেদেরপাড়া গ্রামের কৃষক সবুজ মিয়া ও রোমান মিয়া। সকাল থেকে এ কাজ চালালেও পুরোপুরি পানি সরাতে পারেননি। কৃষকরা জানিয়েছেন, সেচের মাধ্যমে পানি সরিয়ে কিছু জমিতে আলু আবাদ করা সম্ভব হবে। তবে অধিকাংশ জমিতে এ বছর আলু আবাদ করতে পারবেন কিনা, তা নিয়ে শঙ্কায় রয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের অভিযোগ, পানিপ্রবাহের পথ বন্ধ করে দিয়ে যত্রতত্র স্থাপনা নির্মাণ করায় খালের মুখ বন্ধ হয়ে গেছে। অপরিকল্পিতভাবে ডোবা-নালা বালু ভরাট করা অন্যতম কারণ। অভ্যন্তরীণ খালগুলো পলি মাটিতে ভরাট হয়ে যাওয়ায় পানিপ্রবাহ বন্ধ হয়ে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে। তাই কৃষিজমি ঘেঁষে বয়ে চলা খালগুলো খননের দাবি কৃষকদের।

কৃষক আব্দুল আউয়াল মিয়া বলেন, তাঁদের ২০০ শতাংশ জমি বিলের পানির নিচে রয়েছে। অন্য বছর এ সময়ে আলু রোপণ করে ফেললেও এবার পানিতে তলিয়ে থাকায় তা সম্ভব হয়নি। পানি শুকানোর পরও জমি তৈরি করতে ২০ থেকে ২৫ দিন সময় লাগে। অথচ আলু রোপণের মৌসুম চলে যাচ্ছে। বাধ্য হয়ে জমির পানি সেচের জন্য শ্রমিক নিয়ে কাজ করছেন। একই কথা জানান কৃষক মনির হোসেনসহ কয়েকজন।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শরিফুল ইসলাম বলেন, পানি নিস্কাশনের জন্য ৩০ কিলোমিটার খাল খননের প্রস্তাবনা ইতোমধ্যে সংশ্নিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হয়েছে। আগামী ফেব্রুয়ারি মাসের মধ্যে কাজ শুরু করা যাবে।

সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.