বাড়ির নির্মাণসামগ্রী কিনতে ঢাকা এসে লাশ হয়ে ফিরলেন তারেক

পড়াশোনা শেষে শুরু করেছিলেন ব্যবসা। পরিবার নিয়ে ঢাকাতেই বসবাস করতেন। সম্প্রতি বিয়ের জন্য মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় বাবার বসতভিটায় নিজেদের বাড়ি নির্মাণের কাজ শুরু করেন। আর সেই বাড়ির নির্মাণসামগ্রী কিনতে ঢাকা এসে সিদ্দিকবাজারের বিস্ফোরণে নিহত হন আবু জাফর সিদ্দিক তারেক (৩৩)। এ ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রয়েছেন তাঁর খালাতো ভাই আওলাদ হোসেন মুসা (৩৭)।

তারেক গজারিয়া উপজেলার বালুয়াকান্দি ইউনিয়নের বালুয়াকান্দি (পশ্চিমপাড়া) গ্রামের বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রয়াত মোজাম্মেল হক খোকার ছেলে। আজ বুধবার জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর সম্পন্ন করা হয়। এ সময় কথা হয় তারেকের স্বজন ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে।

পরিবারের সদস্য ও স্বজনদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, আবু জাফর সিদ্দিক তারেক নির্মাণাধীন নিজ বাড়ির স্যানিটারি পণ্য আনতে ঢাকা যান। পরে ‘ক্যাফে কুইন’ নামে একটি রেস্টুরেন্টে খাবার খাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। এ সময় বিস্ফোরণে নিহত হন তারেক। তাঁর সঙ্গে যাওয়া খালাতো ভাই আওলাদ হোসেন গুরুতর আহত হন। তাঁর শরীরের ৬০ শতাংশ দগ্ধ হয়েছে। বর্তমানে হাসপাতালে নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তাঁর অবস্থাও আশঙ্কাজনক।

তারেকের চাচাতো বোনের স্বামী আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘পরিবারে সবাইকে নিয়ে তারেক ঢাকা বসবাস করত। বিয়ে করার জন্য কিছুদিন যাবৎ পাত্রী দেখছিল। মূলত বিয়ের জন্যই নির্মাণাধীন বাড়ির কাজ করতে বাবার বাড়িতে এসেছিল।’

নিহতের বড় ভাই পুলিশ সদস্য মো. মাসুদ বলেন, ‘নির্মাণাধীন বাড়ির স্যানিটারি পণ্য আনতে গিয়ে ক্যাফে কুইন রেস্টুরেন্টে ইফতারের প্রস্তুতির নিচ্ছিল তারেক। এ সময় হঠাৎ বিস্ফোরণ হলে ঘটনাস্থলেই মারা যান। তারেকের সঙ্গে থাকা আমার চাচাতো ভাই মুসাও বিস্ফোরণে গুরুতর দগ্ধ হয়েছে। তার শরীরের প্রায় ৬০ শতাংশ পুড়ে গেছে। মুসাকে শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি রাখা হয়েছে।’

মাসুদ জানান, আজ বুধবার সকাল ৮টার দিকে বালুয়াকান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে তারেকের জানাজা হয়। এরপর পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হয়।

নিহত তারেকের ভাই আরও বলেন, ‘তারেকের সঙ্গে বিকেলে সাড়ে চারটার দিকে মোবাইল ফোনে ভিডিও কলে কথা হয়। মালামালের ছবি ভিডিও কলে দেখায়। এটিই ছিল তারেকের সঙ্গে শেষ কথা। এক ঘণ্টার পর খবর শুনতে পাই আমার ভাই আর নেই।’

দুই ভাই ও এক বোনের মধ্যে তারেক ছিলেন সবার ছোট। ঢাকা কলেজ থেকে ইংরেজি অনার্স ও মাস্টার্স পাস করেন। বর্তমান সুতার ব্যবসায় করে বলে জানান তাঁর বড় ভাই।

আজকের পত্রিকা

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.