রাহমান মনি: ১৭ মার্চ শুক্রবার টোকিওর অদূরে চিবা প্রিফেকচারের কিসারাযু’র রিয়ুগুজু স্পা ‘হোটেল মিকাযুকু’-তে এক অনাড়ম্বর অভিষেক অনুষ্ঠানের মধ্য আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাপানে বসবাসরত বিভিন্ন দেশের মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যবসায়ীদের এই সংগঠনটি ।
অভিষেক অনুষ্ঠানে বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক(উজবেকিস্তান, পাকিস্তান, ব্রুনেই এবং মালয়েশিয়া)স্থানীয় জাপানি জনপ্রতিনিধি, ব্যবসায়ী প্রতিনিধি , উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তাগন, বিভিন্ন দেশের চেম্বার প্রতিনিধিগন, জাপানি এবং বিভিন্ন দেশের স্থানীয় প্রবাসী মিডিয়া প্রতিনিধিগন উপস্থিত ছিলেন ।
অভিষেক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আয়োজন শহরের সিটি মেয়র ওয়াতানাবে ইয়শিকুনি। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন কিসারাযু চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি ইয়ই ইকেদা, কিসারাযু সিটি পর্যটন এসোসিয়েশন এর চেয়ারম্যান ইয়শিনোবু নোগুচি, কিসারাযু সিটি আন্তর্জাতিক এসোসিয়েশন এর চেয়ারম্যান কেইকো সুযুকি, এশিয়ান পিপলস ফ্রেন্ডশিপ সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা কাতসুও ইয়োশিনারি , বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এর সভাপতি বাদল চাকলাদার।
অভিষেকে জনাব মোঃ জলিল এম, জেসলি (শ্রীলঙ্কা)কে চেয়ারম্যান, মিয়াঁ রমজান সিদ্দিক(পাকিস্তান) ও এমডি এস ইসলাম নান্নু(বাংলাদেশ)কে ভাইস চেয়ারম্যান, মোহাম্মদ যুবায়ের(পাকিস্তান)কে জেনারেল সেক্রেটারি, জারুক মোহাম্মদ(শ্রীলংকা)কে কোষাধ্যক্ষ, মোহাম্মদ হামিদ রমজান(শ্রীলঙ্কা), আসলাম কোরেশী(পাকিস্তান), শরীফ কিমুরা (বাংলাদেশ/জাপান) ও বাদল চাকলাদার (বাংলাদেশ) চারজন কে বোর্ড অফ ডাইরেক্টর করে প্রতিষ্ঠা কমিটি হিসেবে পরিচয় করে দেয়া হয়।
জাপান মুসলিম চেম্বার অফ কমার্স এর সাফল্য কামনা করে অভিনন্দন জানিয়ে বক্তব্য রাখেন আমন্ত্রিত অতিথি এবং বিভিন্ন দেশের কূটনৈতিক নেতৃবৃন্দ।
স্বাগত বক্তব্যে অভিষিক্ত উদ্যোক্তারা বলেন, জাপান মুসলিম চেম্বার অফ কমার্স বা জে,এ্সি,সি একটি Nonprofit organization (NPO) সংগঠন । জাপানের ব্যবসায়ী সম্প্রদায়, সরকারী বিভাগ, আঞ্চলিক ব্যবসায়িক সংস্থা এবং ইসলামিক দেশগুলির সাথে সম্পর্ক জোরদার এবং প্রচার করার মাধ্যমে জাপানে মুসলিম সম্প্রদায়ের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে একীভূত করার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়।
সংস্থার লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল জাপানে মুসলমানদের ব্যবসায়িক কার্যক্রমকে সমর্থন করা, জাপানের মুসলিম সম্প্রদায় এবং জাপানি সমাজের মধ্যে ব্যবসায়িক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ককে ব্যাপকভাবে উন্নীত করা।
উদ্যোক্তারা জানান , সংস্থার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য হল জাপান ও মুসলিম বিশ্বের মধ্যে সেতুবন্ধনের ভূমিকা পালন করা, জাপান ও ইসলামী বিশ্বের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বৃদ্ধি করা এবং নতুন প্রবণতা এবং ব্যবসার সুযোগ সম্পর্কে আপডেট তথ্য প্রদান করা।
তারা বলেন , জাপানে প্রায় ৪ লাখেরও বেশি মুসলিম রয়েছে। প্রবাসী মুসলিম ব্যবসায়ীরা বিক্ষিপ্তভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছিলেন। এবারই সংগঠিত হয়ে সবার অংশগ্রহণে গঠিত হয় মুসলিম চেম্বার অব কমার্স। তাই এই সংগঠিত হওয়ার মাধ্যমে তাঁদের অনেক সমস্যার সমাধান মিলবে বলে তারা আশা প্রকাশ করেন ।
জাপানের বেশিরভাগ মুসলমান ব্যবহৃত গাড়ি রপ্তানি শিল্প, হালাল খাদ্য আমদানি ও রপ্তানি ব্যবসা, কৃষি, পর্যটন, আইটি ইত্যাদির সাথে জড়িত। উল্লেখযোগ্য সংখ্যক মুসলমান টোকিও, চিবা, সাইতামা, কানাগাওয়া, শিজুওকা, আইচি, ইবারাকি গুনমা, তোয়ামা, নিগাতা, ওসাকা, হিয়োগো, হিরোশিমা, মিয়াগি, ইওয়াতে এবং হোক্কাইডো সহ বিভিন্ন শহরে বসবাস করছেন । জাপানের প্রতিটি অংশের সাথে মুসলিম সম্প্রদায়ের সাংস্কৃতিক, সামাজিক এবং ব্যবসায়িক সম্পর্ক সুসংহত করার জন্য করার লক্ষ্যে সংগঠন কাজ করবে বলে উদ্যোক্তারা জানান ।
আয়োজক নেতৃবৃন্দ জাপানে বসবাসরত মুসলিম ব্যবসায়ীদের JMCC-এ যোগদানের আহবান জানিয়ে বলেন, এর মাধ্যমে আপনার ব্যবসাকে জাপানে অভিজ্ঞ এবং অগ্রগামী মুসলিম ব্যবসার সাথে সংযুক্ত করার অসংখ্য সুযোগ উপভোগ করতে পারেন। অটোমোবাইল, তথ্য প্রযুক্তি, হালাল ফুড, পর্যটন, রেস্তোরাঁ, হোটেল, লজিস্টিকস এবং কৃষি ইত্যাদি শিল্পের জন্য দুর্দান্ত সুযোগ ঘটবে।
প্রবাসী বাংলাদেশিরা বিক্ষিপ্তভাবে ব্যবসা-বাণিজ্য করছিলেন। তবে এবারই প্রথম নিবন্ধন পেয়েছে তাঁদের অংশগ্রহণে গঠিত চেম্বার অব কমার্স। তাই এর মাধ্যমে তাঁদের অনেক সমস্যার সমাধান মিলবে।
অভিষেক আয়োজন শেষে আমন্ত্রিত অতিথিদেরকে নৈশ ভোজে আপ্যায়িত করা হয় ।
Leave a Reply