মোজাম্মেল হোসেন সজল: আগামী ১২তম জাতীয় সংসদ নির্বাচন ঘিরে টঙ্গিবাড়ী ও লৌহজং উপজেলা নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-২ নির্বাচনী আসনে আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থীরা তৎপর হয়ে উঠেছেন। প্রার্থীরা আলাদাভাবে বিভিন্ন সভা-সমাবেশ করছেন। দলীয় কর্মকান্ড ছাড়াও বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানেও তারা অংশগ্রহণ করছেন। সীমানা পরিবর্তনের কারণে ২০০৮ সালে নির্বাচনে মুন্সীগঞ্জে একটি আসন কমে তিনটি আসন হয়।
টঙ্গিবাড়ী ও লৌহজং উপজেলা নিয়েই ছিলো মুন্সীগঞ্জ-২ ও ৩ আসন। টঙ্গিবাড়ী উপজেলার সবক’টি ইউনিয়ন এবং মুন্সীগঞ্জ সদরের আংশিক ইউনিয়ন নিয়ে ছিলো মুন্সীগঞ্জ-৩ নির্বাচনী এলাকা। আবার লৌহজং উপজেলার সবকটি ইউনিয়ন ও সিরাজদিখান উপজেলার আংশিক ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত ছিলো মুন্সীগঞ্জ-২ নির্বাচনী আসন।



ডান থেকে সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি, সোহানা তাহমিনা, অধ্যাপক ডা. মো. আবু ইউসুফ ফকির ও ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বাদল
২০০৮ সালের আগে মুন্সীগঞ্জ-৩ নির্বাচনী আসনে ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য ছিলেন আওয়ামী লীগের মরহুম আবদুল করিম বেপারী, ১৯৭৮ সালে বিএনপির মরহুম সিদ্দিকুর রহমান, ৮৬ সালে জাতীয় পার্টির কে. এম আমিনুল ইসলাম, ৮৮ সালে জাতীয় পার্টির জামাল হোসেন, ৯১-২০০১ সালে বিএনপির সাবেক তথ্যমন্ত্রী প্রয়াত এম শামসুল ইসলাম। মুন্সীগঞ্জ-২ নির্বাচনী আসনে ১৯৭৩ সালের প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সংসদ সদস্য ছিলেন মরহুম এম কোরবান আলী, ১৯৭৮ সালে বিএনপির উইং কমান্ডার (অব.) মরহুম হামিদুল্লাহ খান, ১৯৮৬ সালে জাতীয় পার্টির এম কোরবান আলী, ৮৮ সালে ইকবাল হোসেন, ৯১ সালের ১৫ ফেব্রুিয়ারি বিএনপির উইং কমান্ডার (অব.) মরহুম হামিদুল্লাহ খান, ১৯৯৬ সালের জুন ও ২০০১ সালের নির্বাচনে বিএনপির মিজানুর রহমান সিনহা সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
এরপর একটি আসন কমে ২০০৮ সালে সীমানা পরিবর্তন হয়ে টঙ্গিবাড়ী ও লৌহজং-এই দুইটি উপজেলা নিয়ে গঠিত মুন্সীগঞ্জ-২ নির্বাচনী আসন আওয়ামী লীগের দখলে চলে আসে। ২০০৮ ২০১৪ ও ২০১৮ সালের তিনটি নির্বাচনেই এই আসনে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি। সরাসরি ভোটে জনপ্রতিনিধি হওয়ার আগে ১৯৯৬ সালে সাগুফতা ইয়াসমিন এমিলি মুন্সীগঞ্জ-নারায়ণগঞ্জ সংরক্ষিত আসনের নারী এমপি ছিলেন।
এমিলি আগামী নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের সম্ভাব্য প্রার্থী। তিন মেয়াদে সংসদ সদস্য হওয়ার পরও এই নির্বাচনী আসনে তেমন উন্নয়ন ঘটাতে পারেননি। মানুষের ভাগ্যর পরিবর্তনও হয়নি। তবে, জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে দক্ষিণ বঙ্গের মানুষের সরাসরি যোগাযোগের জন্য পদ্মা সেতু ও পদ্মা সেতু ঘিরে এই নির্বাচনী আসনের জরাজীর্ণ ব্রিজ, কালভাট পুনঃনির্মাণ ও রাস্তাঘাটের সংস্কার কাজ হয়েছে। দলের মধ্যে রয়েছে তীব্র বিরোধ, গ্রুপিং।
এছাড়াও সম্ভাব্য প্রাথী তালিকায় আছেন, ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ই.এন.টি বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান ও স্বাস্থ্য শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক অতিরিক্ত মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. মো. আবু ইউসুফ ফকির। তবে, চাকুরি থেকে অবসর নেয়ার তিনবছর পার না হওয়ায় সরকারি বিধিমতে তিনি প্রার্থী হতে পারছেনা এবারের নির্বাচনে।
প্রার্থী তালিকায় আছেন টঙ্গিবাড়ী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ডা. হেদায়েতুল ইসলাম বাদল। তিনি ৯০ দশকে ঢাকা কলেজ ও শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজে ছাত্রলীগের ছাত্রনেতা ছিলেন। ডা. বাদল আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ উপকমিটির কেন্দ্রীয় সমন্বয়কারী। গত নির্বাচনেও তিনি এই আসন থেকে মনোনয়ন চেয়েছিলেন এবং মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করে তা জমাও দিয়েছিলেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূলের পাশে থেকে কাজ করে চলেছেন।
প্রার্থী তালিকায় রয়েছে মিষ্টিমুখ হিসেবে পরিচিত সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী সোহানা তাহমিনা। তিনি মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক এবং বঙ্গবন্ধুর একান্ত সহচর, মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ মহিউদ্দিনের সহধর্মিণী। তিনি জেলা থেকে প্রকাশিত দৈনিক ‘মুন্সীগঞ্জের খবর’ পত্রিকার সম্পাদক ও প্রকাশক।
অ্যাডভোকেট সোহানা তাহমিনা মুন্সীগঞ্জের বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সাথে জড়িত। তিনি দীর্ঘদিন ধরে তৃণমূল পর্যায়ে কাজ করে চলেছেন।
অবজারভার
Leave a Reply