সিরাজদিখানে জায়ে জায়ে ভোট যুদ্ধ

মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানের মালখানগর ইউপিতে চেয়ারম্যান পদে বর্তমান চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগের সানজিদা আক্তার জোসনা নৌকা মার্কা, স্বতন্ত্র প্রার্থী আওয়ামী লীগ প্রার্থীর ছোট জা নাজমা আক্তার অটোরিক্সা মার্কা, স্বতন্ত্র প্রার্থী বিপ্লব মাদবর রজনী গন্ধা মার্কা এবং বিল্লাল খান আনারস মার্কা ও বিএনপির আজিজুল হক খান ধানের শীষ মার্কায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছে। নির্বাচনের ১ম ধাপে ২২ মার্চ সিরাজদিখান উপজেলার ১০টি ইউনিয়নে এ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। তবে জৈনসার ইউনিয়নে একাধিক প্রার্থী না থাকায় আওয়ামী লীগ প্রার্থী রফিকুল ইসলাম দুদু বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

এলাকার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, আওয়ামী লীগের সানজিদা আক্তার জোসনার বিরুদ্ধে পারিবারিক বিদ্রোহী প্রার্থী হয়ে মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন তার ছোট জা নাজমা আক্তার। সানজিদা আক্তার জোসনা ২ বারের নির্বাচিত উপজেলা চেয়ারম্যান ও ১৯৯৪ সাল থেকে অদ্যাবধি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, মালখানগর ইউনিয়ন পরিষদের পাঁচবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন আহমেদের সহধর্মিনী। অপর দিকে নাজমা আক্তার মহিউদ্দিন আহমেদের ছোট ভাই সালাউদ্দিন আহমেদের সহধর্মিনী।

পারিবারিক মতবিরোধ ও নীতিগত অনেক কারণে মহিউদ্দিন আহমেদ ও সালাউদ্দিন আহমেদের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্যে এভাবে রূপ নেয়। এছাড়াও সালাউদ্দিন আহমেদের ছেলে মামুন আহমেদের সাথেও অনেক কারণে বিরোধ জড়িয়ে যায়। জানা যায়, মামুন আহমেদ ইউরোপ প্রবাসী হওয়ায় এবং তার ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ায় তার মা নাজমা আক্তারকে নির্বাচনে প্রার্থী হতে হয়।

নির্বাচনে জোসনা আক্তারের সাথে রয়েছে মহিউদ্দিন আহমেদের আকাশ ছোয়া জনপ্রিয়তা, ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি ক্লিন ইমেজের রাজনৈতিক আনিসুর রহমান মৃধা ও অঙ্গসংগঠনের নেতা কর্মীরা। সানজিদা আক্তার জানান, আমি বিগত পাঁচ বছর চেয়ারম্যান থাকাকালীন একজন মানুষও বলতে পারবেনা আমি কাউকে অন্যায়ভাবে কোন ক্ষতি সাধন করেছি। তারপরও না জেনে যদি কারও কোন প্রকার ক্ষতি হয়ে থাকে আমি আপ্রাণ চেষ্টা করব যেন ভবিষ্যৎ ততটুকুও না হয়। আমি জেনে শুনে ক্রাও উপর কোন অবিচার বা প্রতিশোধমূলক কিছু করিনি। আমি এতটুকু বলতে পারি কোন প্রকার অর্থমোহ আমাকে ছুঁতে পারেনি। জেলার একমাত্র মহিলা চেয়ারম্যান হিসেবে আমি পরপর তিনবার পুরস্কার অর্জন করেছি যা মালখানগরবাসীকে উৎসর্গ করেছি। আমি আশা করছি এবারও আমি জয়ী হব ইনশাল্লাহ।

অপরদিকে নাজমা আক্তারের সাথে রয়েছে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও মহিউদ্দিন আহমেদের আপন ভগ্নিপতি মাসুদ খান ও তার সহধর্মিনী, মহিউদ্দিন আহমেদের উত্তরোত্তর সাফল্যে ঈর্ষান্বিত একটি মহল যাদের সংখ্যা ফেলে দেয়ার মত নয়। নাজমা আক্তার পাশের ইউনিয়নের মেয়ে হওয়ায়ও কিছু সুবিধা ভোগ করছে। তাছাড়া ছেলের ও কিছু কর্মী বাহিনী রয়েছে। তিনি জানান, নির্বাচন সুষ্ঠু হলে আমি বিপুল ভোটে পাস করব, কেননা তাদেরতো মানুষ অনেক দেখল, এখন মালখানগরবাসী নতুন নেতৃত্ব চায়। মানুষ মুখ খোলতে সাহস পাচ্ছে না, তবে নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে আমার পক্ষে ভোট বিপ্লব হবে।

বিএনপি প্রার্থী আজিজুল হক খান মালখানগর ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক। তার সাথে রয়েছে জেলা ছাত্রদলের সভাপতিসহ দলের নেতা কর্মীরা। নিরপেক্ষ নির্বাচন হলে তিনিও ভাল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন বলেও জানান এলাকাবাসী।

তবে এখানে দুই জা-এর নির্বাচনী যুদ্ধ এবার এলাকাবাসীর মধ্যে বেশ আলোড়ন তুলেছে।

বাসস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.