সিরাজদিখানে কক্ষে তালা মেরে প্রধান শিক্ষককে অবরুদ্ধ!

শিক্ষার্থীদের ক্লাস বর্জন ও বিক্ষোভ প্রদর্শন
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির শিক্ষানুরাগী সদস্য পদে প্রস্তাব না করায় মুন্সীগঞ্জের সিরাজদিখানে একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে কক্ষে তালা মেরে অবরুদ্ধ করে স্থানীয় যুবলীগ ও স্বেচ্ছা সেবক লীগের দুই নেতা ও তার দলবল। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ছাত্রছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে বিক্ষোভ করেছে। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিয়ে শেখর নগর ইউনিয়নের রায় বাহাদুর শ্রীনাথ ইনিষ্টিটিউট-এ এ ঘটনা ঘটে।

ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে অবরুদ্ধ প্রধান শিক্ষক বিশ্বনাথ তালুকদার জানান, গত মাস খানেক আগে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নতুন ম্যানেজিং কমিটি বিদ্যালয়ের শিক্ষানুরাগী (কো আপ) সদস্যের জন্য শেখর নগর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সিনিয়র শিক্ষক রবিউল আউয়ায়ের নাম প্রস্তার করে গত সোমবার ঢাকা শিক্ষাবোর্ডে প্রেরণ করে। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে শেখর নগর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি আসিফ খন্দকার রিজু ও স্বেচ্ছা সেবক লীগ সভাপতি লেলিন খন্দকার মঙ্গলবার সকালে বিদ্যালয়ে এসে আমার সাথে খারাব ব্যবহার শুরু করে। এ সময় তারা দিলিপ দে নামে আমার এক স্টাফকে মারধর করে ও পানির বোত ছুড়ে মারে। এক পর্যায়ে তারা আমাকে একটি কক্ষে নিয়ে তালা বদ্ধ করে অবরুদ্ধ করে রাখে। পরে খবর পেয়ে ম্যানেজিং কমিটি স্থানীয় জনতার সহায়তার আমাকে উদ্ধার করে। এ ঘটনায় বিক্ষুব্ধ ছাত্র ছাত্রীরা ক্লাস বর্জন করে ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে।

জানা যায়, যুবলীগ নেতা রিজু বিদ্যালয় ম্যনেজিং কমিটির ওই পদের জন্য কোন আবেদনও করেনি। শিক্ষক রবিউল আউয়াল আবেদন করায় অন্য কোন প্রতিদ্বন্দ্বি না থাকায় সঙ্গত কারণেই তাঁর নাম প্রস্তার পাঠায় ম্যানেজিং কমিটি। তবে একটি সূত্র জানিয়েছে, প্রতিবছরের ন্যায় কিছুদিন আগে বিদ্যালয় মাঠে এ অঞ্চলের একটি মেলা অনুষ্ঠিত হয়ে গেলো। মাঠের অস্থায়ী স্টল হতে মেলা পরবর্তী মাঠের সংস্কার ও বিদ্যালয়ের উন্নয়ন ফান্ডের জন্য রেজুলেশন নিয়ে স্কুল কমিটি রিসিটের মাধ্যমে দোকানীদের নিকট থেকে কিছু চাঁদা নিয়ে থাকেন। কিন্তু এ বছর ওই দুই নেতা এ চাঁদার ভাগ বসাতে চেয়েছিল। কিন্তু খুব একটা সুবিধা না করতে পারায় তারা ক্ষুব্ধ ছিল। যার ফলশ্রুতিতে গতকাল সামান্য অজুহাতে এ ঘটনা ঘটানো হয়।

এ ব্যাপারে ইউপি যুবলীগ সভাপতি আসিফ খন্দকার রিজু বলেন, মেলার মাঠের চাঁদা তোলায় বিষয়টি সম্পূর্ণ মিথ্যে। তবে গতকাল প্রধান শিক্ষকের সাথে একটু ভূল বোঝাবুঝি হয়েছিল। পরে তা মিমাংশা হয়ে গেছে।

এ ব্যাপারে বিদ্যালয় ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন দেলু ঘটানার সত্যাতা স্বীকার করে বলেন, সব কিছুই বিধি মোতাবেক করা হয়েছে। কিন্তু গতকাল তারা যে ঘটনা ঘটিয়েছে তার জন্য আমারা আইনের আশ্রয় নিবো।

জনকন্ঠ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.