লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে

মুন্সিগঞ্জ জেলায় লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসীর সংখ্যা দিন দিন বেড়েই চলছে। এক শ্রেণীর অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ী শহর থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জের আনাচে কানাচে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন নিম্নমানের ওষুধের ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। মুন্সিগঞ্জের ওষুধ প্রশাসন দীর্ঘদিন ধরে এসব লাইসেন্সবিহীন ফার্মেসীর বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করেনি। একাধিক ফার্মেসীতে অবাধে বিক্রি হয় নেশাজাতীয় ও যৌন বিষয়ক ওষুধ।

এছাড়া গ্রামগঞ্জের অনেক মুদি ও মনিহারি দোকানে অবাধে বিক্রি হচ্ছে জন্ম নিয়ন্ত্রণ ওষুধসহ নানা রকমের নিম্নমানের ওষুধ। ফলে ভোগান্তির শিকার হচ্ছে নিরীহ জনসাধারণ। সদরে লাইসেন্সপ্রাপ্ত ওষুধ বিক্রেতার ফার্মেসীতে চিকিৎসক থাকলেও অন্যরা রাখে না। কিন্তু বড় কোন ডাক্তারের নাম ভাঙ্গিয়ে তারা ঠিকই দোকান চালাচ্ছে। সরেজমিনে বিভিন্ন ফার্মেসীতে ঘুরে দেখা গেছে, প্রায় প্রতিটি দোকানের সাইনবোর্ডে এমবিবিএস ডাক্তারের নাম বড় বড় অক্ষরে লিখে রাখা হয়। কিন্তু সেখানে আদৌ কোন ডাক্তার বসে কিনা সন্দেহ রয়েছে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফার্মেসীর মালিক ওষুধ বিক্রি করতে করতে বা কোন ক্ষেত্রে এলএমএ এফ নামধারী স্বল্পমেয়াদী ট্রেনিং নিয়ে নিজেদের দোকান বা এলাকায় ডাক্তার হিসাবে পরিচয় দিয়ে রোগীদের ডাক্তারের কাছে না পাঠিয়ে নিজেরাই ব্যবস্থাপত্র দিয়ে থাকে।

বেশীরভাগ ফার্মেসীতে মালিকের নামের পূর্বে লিখা থাকে ডাক্তার। মুন্সিগঞ্জ শহর ও গ্রামগঞ্জের গরীব নিরীহ মানুষ ছোটখাটো অসুখে অনেক সময় সুচিকিৎসা লাভের আশায় কখনো ভিজিটের ভয়ে রেজিস্টার্ড ডাক্তারের কাছে যেতে পারে না। রোগীরা সরাসরি ফার্মেসীতে গিয়ে রোগের বর্ণনা দিয়ে ওষুধ চান। আর এক্ষেত্রে ঐ নামধারী ডাক্তারদের দেয়া উচ্চমাত্রার এন্টিবায়োটিক ওষুধ প্রয়োগের ফলে হিতে বিপরীত হয় প্রতিনিয়তই। বাংলাদেশ কেমিস্ট ও ড্রাগ সমিতি ও ওষুধ প্রশাসনের আইন অনুযায়ী ওষুধ বিক্রয় ও প্রদর্শনকারী প্রতিষ্ঠানের স্বত্বাধিকারীকে অবশ্যই ড্রাগ লাইসেন্স গ্রহণ করতে হবে। অন্যথায় ১৯৪০ ও ১৯৪৫ সালের ড্রাগ লাইসেন্স আইনে কোর্টে মামলার বিধান থাকলেও এখানে কার্যকরের কোন উদ্যোগ নেয়নি ওষুধ প্রশাসন।

ফার্মেসীতে আসা রোগী আছমা বেগম জানান, আমরা এসব দোকান থেকে ওষুধ কিনে ফল পেয়েছি বলে অন্ধ বিশ্বাসে কিনে খাই। তাছাড়া ডাক্তারের ভিজিট আর কোন পরীক্ষা-নিরিক্ষা লাগে না। আরেক রোগী কুলসুম বলেন, এসব ফার্মেসীতে যেসব ওষুধ দেয় সেগুলো নি¤œমানের আবার এমন ওষুধ কোম্পানির নামও কোনদিন শুনেনি আমরা। এসব ওষুধ খেয়ে রোগীরা আরো অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে।

বাংলাদেশ এ কেমিস্ট, ড্রাগ সমিতি, ওষুধ প্রশাসন ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ এসব বিষয়ে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ গ্রহণ করে দেশের অসাধু ওষুধ ব্যবসায়ীদের আইনের আওতায় আনা জরুরি হয়ে পরেছে। শহর থেকে শুরু করে গ্রামগঞ্জের আনাচে-কানাচে ড্রাগ লাইসেন্সবিহীন ওষুধ ব্যবসায়ীদের মধ্যে পরিবর্তন আনতে না পারলে নিরীহ জনসাধারণ আরো ভোগান্তিতে পরবে বলে আশংকা জনসাধারণের।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জের সিভিল সার্জন ডা. শহিদুল ইসলামের সাথে ফোনলাপকালে তিনি জানান, কেউ যদি নামের আগে ডাক্তার লাগিয়ে রোগীদেরকে কোন ব্যবস্থাপত্র দেয় তাহলে অভিযোগের ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংগ্রাম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.