দূষ্প্রাপ্য এমন দৃশ্য মিলল রামপালে

জসীম উদ্দীন দেওয়ান : জীবনে একবার প্রত্যেকটা পুরুষ মানুষকেই বর সেজে শ্বশুড় বাড়ি যেতে হয় বিয়ে নামক বন্ধনের উদ্দেশ্য। কেবল গোটা কিছু পুরুষ মানুষ যারা পিতা- মাতাকে না জানিয়ে বা তাদের অবাদ্য হয়ে জীবনের অতি গুরুত্বপূর্ণ এই কাজটি গোপনে সেরে ফেলে তাদের ব্যাতীত। আমাদের দেশে বিয়ে মানে পরিবার বা পরিবারের বাইরের আত্মীয় স্বজন এবং পাড়া প্রতিবেশীদের অংশ গ্রহনে আনন্দ উৎসবে মেতে ওঠা। আর সেই আনন্দের মাত্রার জোর খুব বেশি দেখা যেতে গ্রামাঞ্চলে। তেম্নি গ্রামের কনের বাড়িতে কনেদের মতো লাজুক কোন অংশে কম ছিলোনা বরদের চেহারা জুড়ে।

আর সেই লজ্জার ছাপ কিছুটা ঢেকে রাখতে বর সাহায্য নিতো রুমালের । যে রুমালের সাহায্যে নাকের পুরো ও মুখের কিছুটা অংশ ঢেকে রেখে লজ্জা নিবারনের চেষ্টা করতো বর। ইদারিং বা এক দেড় দশকে বরদের নাকে রুমাল ব্যবহার করার দৃশ্য আর চোখে পড়েনা। এর অর্থ এই নয় বর্তমানে যারা বর বেশে শ্বশুড় বাড়িতে যাচ্ছেন তাদের লাজের ঘাটতি ঘটেছে। রুমালে নাক ঢেকে লাজ ঢাকা যায় এমনটা বিশ্বাস করেনা বলে বর্তমানে রুমাল ব্যবহার ছেড়ে দিয়েছেন বর বেশিরা।

তবে সেই সংস্কৃতি পুরোটা হারিয়ে যায়নি আমাদের দেশ থেকে। যার নিদর্শন দেখা গেলে রামপাল ইউনিয়নের পানহাটা গ্রামের মন্টু মোল্লার বাড়িতে। রোববার রাতে মন্টু মোল্লার মেয়ে বর্ণা, নানা বর্ণে নিজেকে সাজিয়ে বিয়ের সাজে বধূ বেশে বসে, বজ্রযোগিনী ইউনিয়নের মুক্তিযোদ্ধা ও সাবেক ইউপি সদস্য হাছান আলী মোল্লার প্রবাসী ছেলে ওমর ফারুকের জন্য। আর লাজুক ওমর ফারুক শ্বশুড়ালয়ে প্রবেশ করার পূর্ব মূহুূর্তে তাঁর নাকে বসিয়ে দেয় লাজ রক্ষার রুমালটি। বার বার তাঁর স্বজন এমনকি কনে পক্ষের লোকেরা রুমাল সরানোর অনুরোধ করার পরও নাক থেকে সরে যায়নি রুমাল। কেউ কেউ আবার আধুনিকতার দোয়াই দিতেও দ্বিধা করেনি।

তবুও রুমালের জয় হয়েছে অবলীলায়। রুমাল নিয়ে যখন এতো কথা,বর ফারুকের কাছে রুমাল ব্যবহারের কারণটা জানতে না চাইলে কি হয়! জবাবে মৃদু স্বরে ফারুক জানলেন, কেমন জানি শরম লাগে, যা কিছুই কন ভাই রুমালটায় আমারে সাহায্য করছে!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.