মোজাম্মেল হোসেন সজল: মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে দির্ঘদিন ধরে সরকারি রাস্তা দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণের কারণে কয়েকটি পরিবার ১২ মাস যাতাযাত করেন নৌকায়। উপজেলার শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়নের গাদিঘাট গ্রামের মাঝেরহাটি এলাকার প্রভাবশালী আবুল হাসেম মুন্সী দীর্ঘদিন যাবৎ রাস্তাটি দখল করে রাখায় ভোগান্তিতে পড়েছে এলাকাবাসি। শুধু তাই নয়, পাশের বাড়ির নুরুল হক, আয়নাল হকসহ অনেকককে সরকারি রাস্তা ব্যবহার করতে দিচ্ছেন না এই দখলদার।
বাধ্য হয়ে অসহায় দরিদ্ররা নৌকা দিয়ে ঘুরে রাস্তায় আসতে দেখা যায় প্রায় তিন বছর ধরে। সীমাহীন দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এই পরিবারগুলোকে। কয়েক দফা শালিস দরবার করেও হয়নি কোন সমাধান।
গাদিঘাট মাঝের হাটির মুন্সীবাড়ি ও হাটি পাড়ায় ২ শতাধিক পরিবারের বসবাস। এই ৩টি পাড়া মহল্লায় যাতায়াতের একমাত্র ভরসা এই রাস্তাটি। গাদিঘাট মৌজার আর.এস ০১ খতিয়ানের আর.এস ২৫১২ দাগের রাস্তা, যা ২শত মিটার অধিক দীর্ঘ ও ৯ ফুট প্রস্তস্থ। সরকারি এস.এ ও আর.এস পর্চা ও ম্যাপে থাকলেও তা বাস্তবে নেই।
দেখা গেছে, কোথাও ৪ ফুট আবার কোথাও ৬ ফুট কোথাও রাস্তাটি পুরোপুরি ক্ষমতাশীলদের দখলে ও রাস্তার দুই পাশেই আরো ৮-১০টি বাড়ি ২-৩ফুট করে দখল করে রেখেছে। রাস্তায় শেষের দিকে বাড়ি মালিক হাসেম মুন্সী পুরো রাস্তাটি দখল করে পাকাবাড়ি নির্মাণ করায় রাস্তাটি সরকারি ম্যাপের জায়গায় নেই। পাশের বাড়ির উপর দিয়ে সরু হয়ে গেছে।
তাতে ওই বাড়ির মালিক নিজ বসতঘর সরিয়ে দিয়েছেন মানুষের চলাচলের সুবিধার্থে। দুর্ভোগের কারণে গত কয়েক বছর আগে এই রাস্তাটি ইউনিয়ন পরিষদ থেকে ইট বিছানোর কাজ শুরু করলেও রাস্তার জায়গাটি দখল করে রাখার কারণে পুরো কাজটি সংস্কার সম্পূর্ণ করা হয়নি। এরপর থেকে আজও রাস্তাটি সংস্কার করা হয়নি।
এই রাস্তাটি উদ্ধার এবং সংস্কারের দাবীতে এলাকাবাসীর পক্ষে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর লিখিত অভিযোগ করেন গাদিঘাট মাঝের কান্দি গ্রামের ভুক্তভোগীরা।
এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সহকারি কর্মকর্তা টুটুল আহমেদ ঘটনাস্থল তদন্তে যান। সেখানে একজন এলাকার ভুক্তভোগী নুরুল হক জানান, হাসেম মুন্সীর অত্যাচারে আমরা এলাকাবাসী অতিষ্ট। আমাদের বাড়ির পশ্চিম পাশ দিয়েই একশ’ বছরের পুরোনো সরকারি রাস্তা থাকলেও দখলদার হাসেম মুন্সী রাস্তা আটকে দেওয়ায় আমরা বাড়ি থেকে সরাসরি রাস্তায় যেতে পারি না।
এবিষয়ে হাসেম মুন্সী জানান, আমার জায়গার উপর দিয়ে রাস্তা গেছে। আমার বাড়ির পশ্চিমে রাস্তা ছেড়েছি। এরপরও আমার জায়গা আছে। আমি কারো জায়গা দখল করিনি।
শ্যামসিদ্ধি ইউনিয়ন নায়েব নজরুল ইসলাম জানান, সহকারি কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। তার রিপোর্ট পাওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবেন।
উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান জিঠু জানান, এটা দীর্ঘ দিনের সমস্যা। এক সময় পায়ে হেটে চলা মুশকিল ছিল। আমরা যুবকরা উদ্যোগ নিয়ে অনেকের ঘরবাড়ি সরিয়ে রাস্তা বের করেছি। কিন্তু এখনো ৮-১০টি বাড়ি ২-১ ফুট করে রাস্তায় আছে। তাই তাদের কে নিয়ে বসে সমাধানের একটা কথা রয়েছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান রতন মিয়া জানান, বিষয়টি আমি শুনেছি। শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও সহকারি কমিশনার (ভূমি) অফিস থেকে ফোনে জানিয়েছে আমাকে। এটি বহুদিনের সমস্যা।
অবজারভার
Leave a Reply