থামেনি গার্মেন্টস কর্মীদের ঢাকামুখী যাত্রা। প্রতিদিনই ছুটছে কষ্ট আর দুর্ভোগ নিয়ে কর্মস্থল ঢাকা, নারায়নগঞ্জ কিংবা গাজীপুরের উদ্দেশ্যে। আজ শনিবার মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার শিমুলিয়া-কাঁঠালবাড়ি নৌরুটে ষষ্ঠ দিনের মতো ঢাকামুখী গার্মেন্টস শ্রমিকদের ঢল অব্যাহত ছিল। ঢাকার কর্মস্থলে যেতে শিমুলিয়া ঘাটে হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন শ্রমিকরা।
শনিবার পর্যন্ত টানা ছয় দিন ধরে দক্ষিণবঙ্গের কাঁঠালবাড়িঘাট থেকে ফেরি ও ট্রলারে করে শত শত শ্রমিক পদ্মা পাড়ি দিয়ে মুন্সীগঞ্জের শিমুলিয়া ঘাটে আসছেন। করোনা ঝুঁকির মধ্যে ফেরি ও ট্রলারে গাদাগাদি করে ঢাকামুখী শ্রমিকরা ছুটে আসছেন।
শিমুলিয়া ঘাটে এসে যানবাহনের অভাবে পড়ছে এসব যাত্রীরা। তার উপর আবার মাঝে মধ্যেই বৃষ্টি যেনো আরও বিপাকে ফেলছে যাত্রীদের। কোন প্রকার বাস না পেয়ে তারা বিকল্প পথে ছোট ছোট যানবাহনে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ঢাকায় যাচ্ছেন।
সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, আজ শনিবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে একটি ফেরি কাঠালবাড়ি থেকে শিমুলিয়া ঘাটে এসে নোঙর করে। কিন্তু নোঙর করার আগেই ফেরি থেকে যাত্রীরা লাফিয়ে লাফিলে পল্টুনের উপর নামতে থাকে। কার আগে কে নামবে অনেকটা এ রকম প্রতিযোগিতা ছিল। করোনার কোন ভয় যেনো তাদের মধ্যে দেখা যায়নি। আগে চাকুরী তার পরে প্রান, অনেকটা এরকমই ভাব ছিল তাদের মধ্যে।
মাওয়া নৌ-ফাঁড়ির ইনচার্জ সিরাজুল ইসলাম জানান, দক্ষিণবঙ্গের কাঁঠালবাড়িঘাট থেকে ফেরি ও ট্রলারে করে সকাল থেকেই শিমুলিয়াঘাটে আসতে শুরু করে শত শত শ্রমিক। ফেরিগুলোতে গাদাগাদি করে যাত্রীদের আসার চিত্র দেখা যায়। এদের বেশির ভাগই ঢাকা,গাজীপুর ও নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন গার্মেন্টসের কর্মী।
তিনি আরো জানান, ফেরি ও ট্রলারে গাদাগাদি করে শ্রমিকরা ছুটে আসার কারণে করোনা সংক্রমণের ঝুঁকি থেকে যাচ্ছে। তবু তাদের ঢাকায় ছুটে চলায় থামানো যাচ্ছে না। সামাজিক দুরত্ব না মেনেই ফেরি ও ট্রলারে ছুটে আসছেন গার্মেন্টস কর্মীরা।
বিআইডব্লিউটিসির শিমুলিয়াঘাটের উপ-মহাব্যবস্থাপক মো. শফিকুল ইসলাম জানান, সীমিত আকারে এ নৌরুটে ফেরী চলছে। জরুরী সেবার যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। একই সঙ্গে যাত্রী সাধারণ ফেরিতে পারাপার হচ্ছে। এদের বেশির ভাগই গার্মেন্টস কর্মী। তবে গেল কয়েক দিনের তুলনায় শনিবার সকাল থেকে কম সংখ্যক যাত্রী পারাপার হতে দেখা গেছে।
এদিকে শিমুলিয়াঘাটে আসার পর শ্রমিকরা বাস না পেয়ে অটোরিকশা, রিকশা কিংবা সিএনজিতে করে ঢাকার উদ্দেশ্যে রওনা দিচ্ছে। শ্রমিকদের কথা হচ্ছে, কষ্ট যতই হোক, আগে চাকরি বাঁচাতে হবে। তাই ছোট ছোট যানবাহনে চড়ে সড়কে ভেঙ্গে ভেঙ্গে ঢাকায় ছুটছেন তারা। আবার যানবাহনের অভাবে কেউ কেউ পায়ে হেটেই ছুটে যাচ্ছেন ঢাকায়। এতে অবর্ণনীয় দুর্ভোগের কবলে পড়েছেন গার্মেন্টসকর্মীরা। তার উপর মাঝে মধ্যে বৃষ্টি যেনো তাদের দুর্ভোগের মাত্রা বাড়িয়ে দিচ্ছে অনেকটা।
কালের কন্ঠ
Leave a Reply