শ্রীনগরে রাস্তা উন্নয়ন কাজে অনিয়ম

শ্রীনগর উপজেলার বাড়ৈখালী ইউনিয়নে কয়েকটি রাস্তা উন্নয়ন কাজে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। গত ২০১৬-২০১৭, ২০১৫-২০১৬ ও ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত টাকায় এসব রাস্তা উন্নয়ন কাজের নামে আংশিক কাজ করা হয়েছে। এর মধ্যে দাড়গা বাড়ির সামনে একটি নির্মিত রাস্তা দুই বছরের মাথায় ঢালাই ভেঙেচূরে একাকার হয়ে গেছে। স্থানীয়রা বলেন, সিডিউলে রাস্তাটির ঢালাই কাজে যদি রড ব্যবহারের বিধান থেকে থাকে তাহলে এখানে কোনও রডের ব্যবহার করা হয়নি।

খোঁজ খবর নিয়ে জানা যায়, বাড়ৈখালী ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ডের সরকারি পুকুর পাড় থেকে কবরস্থান হয়ে দাড়গা বাড়ি মসজিদ পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজে ২০১৬-১৭ অর্থবছরে জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত টাকার পরিমান ১০ লাখ, পশ্চিম বাড়ৈখালী সালামের বাড়ি থেকে আইলার জোল পর্যন্ত রাস্তার উন্নয়ন কাজে ২০১৫-২০১৬ অর্থবছরের জেলা পরিষদের বরাদ্দকৃত টাকার পরিমান ১৫ লাখ। বাড়ৈখালী স্কুল রোড থেকে জামাল মুন্সীর বাড়ি পর্যন্ত ও নান্নুদের মসজিদের সামনে থেকে পুকুর পাড়ে গাইড ওয়াল নির্মাণ ও রাস্তার উন্নয়ন কাজে ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরের জেলা পরিষদের বরাদ্দের ৬ লাখ ২৩ হাজার ৭’শ টাকা। এসব কাজের কোনটা অর্ধেক ও কোনটায় নি¤œমানের ঢালাই কাজ করা হয়েছে। এতে করে নির্মাণের কয়েক মাস পরেই এসব ঢালই ভাঙতে শুরু করে। অভিযোগ উঠে কাজের সঠিক তদারকির অভাবে এমনটা হয়েছে।

সরেজমিনে দেখা গেছে, দাড়োগা বাড়ির পাশে নির্মাণাধীণ ওই রাস্তার ঢালাই ধ্বসে পড়ছে। রাস্তার অনেকাংশে বড় বড় ফাটল ধরেছে। এছাড়াও সরকারি পুকুর পাড়ের রাস্তাটির মাত্র ৩০০-৪০০ ফুট ঢালাই কাজ করে বাকি অংশ ফেলে রাখা হয়েছে। অপরদিকে আইলার জোলের দিকের রাস্তাটির একই অবস্থা। এসব রাস্তার কাজ করে মেসার্স রাতুল এন্ড ব্রাদার্স, মেসার্স এসআর এন্টারপ্রাইজ, মেসার্স তামিম এন্টারপ্রাইজ। এছাড়াও লক্ষ্য করা গেছে, কয়েকটি রাস্তার নামের ফলক যেখানে সেখানে পরে আছে। এরমধ্যে একটি ফলক স্থানীয় এক বাসিন্দার গোয়াল ঘরের পাশে ময়লার স্তুপের নিচে চাপা পড়ে থাকতে দেখা গেছে।

এছাড়াও একটি ফলক কাঠামো রাস্তার পাশের খাদে পরে থাকতে দেখা গেলেও সেখানে কোনও লেখা (প্লেট) দেখতে পাওয়া যায়নি। এছাড়াও বাড়ৈখালী ভূমি অফিসের নির্মাণাধীন একটি রাস্তার গাইড ওয়ালের কাজেও অনিয়ম করা হয়েছে। জানা গেছে, নির্মাণের কয়েক মাস পরেই গাইড ওয়াল ধ্বসে গেলে রাস্তার ঢালাই কাঠামোর নিচ থেকে মাটি সরে গিয়ে রাস্তাটি ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে উঠে। যেকোনও সময়ে প্রায় ৫০০ ফুটের রাস্তাটি ধ্বসে পরতে পারে। এসময় তাহের আলী, মনির মিয়া, ছালেম হোসেনসহ অনেকেই বলেন, দাড়গা বাড়ির সিসি ঢালাই রাস্তাটি ভেঙেচূরে বেহাল হয়ে পরছে। এছাড়াও অন্যান্য রাস্তায় অর্ধেক কাজ হয়েছে। এসব কাজে সংশ্লিষ্টরা যদি ঠিকমত তদারকি করতেন তাহলে এমনটা হতোনা বলে দাবী করেন তারা।

এবিষয়ে জানতে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করেও তাদের সাথে কথা বলা সম্ভব হয়নি।

বাড়ৈখালী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান সেলিম তালুকদারের কাছে এবিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিছুটা অনিয়ম তো হয়েছে। কাজগুলো তো জেলা পরিষদের তাই এই বিষয়ে জেলা পরিষদের সদস্য ইকবাল হোসেন মাস্টার ভাল বলতে পারবেন। এব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদের সদস্য ইকবাল হোসেন মাস্টারের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, যতটুকু বরাদ্দ হয়েছে ততটুকু কাজ হয়েছে। পুরো কাজ করতে আমি কোথায় টাকা পাবো?

এব্যাপারে জেলা পরিষদের নির্বাহী প্রকৌশলী আবুল হোসেন মিয়া জানান, যে পর্যন্ত কাজ হওয়ার কথা অর্থের অভাবে সে পর্যন্ত কাজ করা সম্ভব হয়নি।

ভোরের সংবাদ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.