রাস্তা নির্মাণের নামে প্রবাসীর বাড়িঘর গুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ

শ্রীনগরে এক ইউপি চেয়ারম্যানের নির্দেশে বিনা নোটিশে রাস্তা নির্মাণের নামে স্ক্যাভেটর মেশিন দিয়ে সৌদি প্রবাসীর বসত ঘরবাড়ি গুড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত শুক্রবার সকালে উপজেলার রাঢ়িখাল ইউনিয়নের বালাশুর এলাকার ২নং ওয়ার্ডের বাঘাডাঙ্গায় এ ঘটনা ঘটে। ঘটনাস্থলে রাঢ়িখাল ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হানিফ বেপারীর উপস্থিতিতে ও ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক খান বারীর নির্দেশে রফিক মোল্লা, মো. ইলিয়াছ, কালু, মতি শেখ, জালাল, নুরুল হকরা প্রভাব খাটিয়ে বসতবাড়ির ২টি টয়েলেট, একটি থাকার পাকাঘর ও একটি রান্নাঘর, একটি টিউবওয়েল এবং সীমানা প্রাচীর গুড়িয়ে দেয় বলে অভিযোগ করেন বাঘাডাঙ্গার ইলিয়াছ ফকির ও প্রবাসী চুন্নু ফকিরের পরিবারের লোকজন।

এ ঘটনায় এলাকাবাসীর মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করতে দেখা গেছে। শনিবার (১২ মার্চ) দুপুরে প্রবাসীর ভাই বিল্লাল ফকির বাদি হয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যানকে অভিযুক্ত করে শ্রীনগর থানায় অভিযোগ দায়ের করেন।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঘাডাঙ্গা ইট সলিং রাস্তার পাশে ইলিয়াছ ফকির ও চুন্নু ফকিরের বসতবাড়ি। দুই পরিবারের বসতবাড়ির মাঝখান দিয়ে একটি দু’পায়া রাস্তার প্রস্থস্ত করণের কাজের জন্য আনা স্ক্যাভেটর মেশিনে বসতবাড়ির স্থাপনাগুলো ভাঙ্গা হয়েছে।

জানা যায়, রাঢ়িখাল মৌজার বালাশুর এলাকার ৫৬০/১৫৯৩ দাগে ৭০ শতাংশ নাল জমির মধ্যে ৭ শতাংশ করে মালিক ইলিয়াছ ফকির ও চুন্নু ফকির। প্রতিবেশী মান্নান ফকির, খালেক মাদবর, ফারুক হাওলাদার, রেনু বেগম, বাচ্চু ফকির, সুফিয়া বেগম বলেন, আনরেকর্ডকৃত দৃশ্যমান দু’পায়া রাস্তার ওই জমিও ইলিয়াছ ফকির ও চুন্নু ফকির দান করেন। স্থানীয় চেয়ারম্যান কোনো নোটিশ বা কথা না বলে এভাবে তাদের বসতবাড়ি ঘর ভেঙে দিতে পারে না। এ ঘটনার নিন্দা জানান তারা।

ভুক্তভোগী ইলিয়াছ ফকির ও চুন্নু ফকিরের পরিবারের লোকজনরা কান্নাজড়িত কন্ঠে বলেন, হানিফ বেপারীর উপস্থিতিতে ও চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক খান বারীর নির্দেশে তার লোকজন আমাদের বাড়িঘর ভাঙে। আমরা বিনয়ের সাথে তাকে অনেক অনুরোধ করেছি আমাদের কয়েকটা দিন সময় দেন। তিন কোনো সময় দেননি। আমাদের বাড়িঘর ভেঙে প্রায় ২০ লাখ টাকার ক্ষতিসাধন করা হয়েছে। আমরা এর সুষ্ঠু বিচার চাই।

আওয়ামী লীগ নেতা মো. হানিফ বেপারীর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, কিসের প্রকল্প আমি জানি না। চেয়ারম্যান আমাকে ডেকেছেন তাই আমি গিয়েছি।

স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রফিক মোল্লা জানান, ওই সময় চেয়ারম্যান ও আমি উপস্থিত ছিলাম। তবে রাস্তাটি কিসের বরাদ্দে হচ্ছে এটা আমি জানি না। এটা চেয়ারম্যান বলতে পারবে। রাঢ়িখাল ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল বারেক খান বারীর বক্তব্যের জন্য চেষ্টা করে তার মোবাইল ফোন নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে।

উপজেলা পিআইও কর্মকর্তা আশেকুর রহমান ও এলজিইডি প্রকৌশলী মো. রাজিউল্লাহর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তারা জানান, ওই রাস্তায় আমাদের কোনো বরাদ্দ নেই।

এ বিষয়ে শ্রীনগর থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আমিনুল ইসলাম জানান, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজজি/

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.