জমে উঠেছে মুন্সিগঞ্জের পদ্মার শাখা নদীর তীরের ভাসমান পাটের হাট। সারি সারি নৌযানে চলে কেনাবেচা। প্রতি সোম ও শুক্রবার কৃষকরা পাট নিয়ে এখানে আসেন। এ বাজার থেকে পাইকাররা পাট কিনে কারখানা মালিকদের কাছে বিক্রি করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, ক্রেতা-বিক্রেতাদের হাঁকডাকে সরব এ হাট। নৌকা ও ট্রলারযোগে হাজার হাজার মণ পাট আসছে এখানে। মুন্সিগঞ্জ ছাড়াও চাঁদপুর, শরীয়তপুর, মাধারীপুরসহ আশপাশের এলাকা থেকে পাট আসছে বলে জানান কৃষকরা।
স্থানীয়রা জানান, মৌসুমে ৩-৪ মাস পাটের এ হাট বসে। প্রতি সপ্তাহে ৫-১০ হাজার মণ পাটের কেনাবেচা হয় এ হাটে। প্রতি হাটবার কোটি টাকা ছাড়ায় ক্রয়বিক্রয়।
নূর উদ্দিন নামের এক কৃষক জানান, অনেক বছরের পুরোনো হাট এটি। বিভিন্ন জেলা থেকে অনেক কৃষক, পাইকার, ব্যাপারী আসে৷ বাজার ভালো থাকলে ভালো দাম পাওয়া যায়। খারাপ হলে লোকসান।
মো. ইসলাম নামের এক পাইকার জানান, ২৫ বছর ধরে ব্যবসা করি। নারায়ণগঞ্জ, নরসিংদী, ঘোড়াশাল থেকে এখানে আসি। দুই হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজারে পাট কিনছি।
মো. দিদার হালদার নামের এক পাট বিক্রেতা জানান, দেড় কানি জমিতে গত বছর পাট চাষ করি। সে সময় ৬০ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবার ৯৫ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। কামলা খরচ বাড়ছে, যাতায়াত খরচ বাড়ছে। এতে আমাদের লাভ কম হচ্ছে।
আব্দুর রব হাওলাদার জানান, পানি নাই, ঠিকমত পাট পচাতে পারি না। তবে বাজারে দাম ঠিক আছে। চালান পেয়ে সব পাট বিক্রি করে দিছি।
এ বিষয়ে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশীদ আলম জাগো নিউজকে জানান, এ বছর জেলার ৬ উপজেলায় দুই হাজার ৯০৫ হেক্টর জমিতে পাটের আবাদ হয়েছে। বাজারে দুই হাজার থেকে তিন হাজার টাকা মূল্য পাট বিক্রি হচ্ছে। তেলের দাম বৃদ্ধিতে পরিবহন খরচ বেড়েছে। সেক্ষেত্রে কৃষকের লাভও কিছুটা কমেছে।
তিনি বলেন, পাটের মোটামুটি ভালো ফলন হচ্ছিলো। বৃষ্টি না হওয়ায় পানির সংকট দেখা দিয়েছে। এতে পানির অভাবে পাটের যে গুনগত মান সেটি কৃষকরা পাচ্ছে না। যার কারণে বাজারমূল্য কিছুটা কম।
আরাফাত রায়হান সাকিব/জাগো নিউজ
Leave a Reply