পাশে বসা ব্যক্তিকে গুনতে দিয়ে ৮১ হাজার টাকা হারালেন নারী

মুন্সীগঞ্জ শহরের বঙ্গবন্ধু সড়কের ডাচ বাংলা ব্যাংকের শাখা থেকে এক লাখ ২৩ হাজার টাকা উত্তোলন করেছেন এক নারী। তবে ছেঁড়া নোট পরিবর্তনের কথা বলে গুনতে নিয়ে ৮১ হাজার টাকা নিয়ে চম্পট দুই প্রতারক।

বুধবার (৭ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ঘটনাটি ঘটে। ভুক্তভোগী ওই নারীর নাম ইয়াসমিন বেগম। তিনি মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের কাউয়াদি গ্রামের বাসিন্দা।

ভুক্তভোগী নারী দাবি করেন, এক বছর আগে গ্রামের এক নারীর কাছ থেকে তিন লাখ টাকা সুদে নেন। সেই টাকা দিয়ে তিনি তার ছেলেকে সৌদি আরব পাঠান। সেই টাকা এক বছরে সুদে-আসলে তিন লাখ ৬০ হাজার টাকা হয়েছে। আজকে পরিশোধের কথা ছিল। কয়েক দিন আগে তার ছেলে বিদেশ থেকে বেতন এবং কিছু টাকা ধার করে এক লাখ ২৩ হাজার টাকা পাঠায়। গ্রামের আত্মীয়র কাছ থেকেও তিনি কিছু টাকা ধার করেন। সবমিলিয়ে আজকেই ধার করা টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার কথা ছিল। এ কারণে ছেলের পাঠানো টাকা তুলতে সকালে ব্যাংকে আসেন তিনি।

তিনি বলেন, ‘ব্যাংক থেকে টাকা তুলে অফিসের চেয়ারে বসে গুনছিলাম। আমার দুপাশে দুজন মধ্য বয়স্ক পুরুষ বসেছিল। সেই টাকার মধ্যে কয়েকটি নোট ছেঁড়া ছিল। আমি ছেঁড়া টাকাগুলো পাল্টানোর জন্য চেয়ার থেকে উঠছিলাম। তখন পাশ থেকে ওই দুজনের মধ্যে একজন বলেন, তিনি ব্যাংকে টাকা জমা দিতে এসেছেন। আমার ছেঁড়া টাকা তিনি নিয়ে আমাকে ভালো টাকা দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে আমার টাকা গুণে দেবেন। এই বলে আমার ব্যাগে থাকা সব টাকা তারা নেন। ৩৭টি এক হাজার ও ৫০টি ১০০ টাকার নোট দিয়ে সব টাকা নিয়ে ব্যাংক থেকে বেরিয়ে যান।’

ব্যাংকের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে এই ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বেলা ১১টা ৭ মিনিটের দিকে ওই নারী ক্যাশ কাউন্টার থেকে টাকা তুলছেন। এ সময় ওই প্রতারক চক্রের দুজন ভুক্তভোগীর আশপাশে ছিলেন। টাকা তুলে তিনি চেয়ারে বসার সময় একজন পাঞ্জাবি গায়ে মুখে মাস্ক পরিহিত ছিলেন। আরেকজন শার্ট পরা মধ্যবয়স্ক লোক। তারা দুজন ভুক্তভোগীর দুই পাশে বসেন। প্রতারক চক্রের দুজন ওই মহিলার সঙ্গে কথা বলছিলেন।

ভুক্তভোগী ইয়াসমিন বেগম বলেন, ‘আমার ছেলে বিদেশের মাটি থেকে কত কষ্ট করে একটু একটু করে টাকা জমিয়ে দেশে পাঠালো। ভেবেছিলাম আজকে সব ধার শোধ করবো। ব্যাংকের ভেতর থেকে প্রতারক চক্র আমার সব নিয়ে নিলো। আমি এখন কীভাবে বাড়িতে যাবো? কীভাবে দেনা শোধ করবো?’

এই বিষয়ে ডাচ বাংলা ব্যাংক মুন্সীগঞ্জ শাখার ব্যবস্থাপক রাসেল আহমেদ বলেন, ‘ব্যাংকের নিয়ম অনুযায়ী টাকা উত্তোলন করে টাকা নিজ দায়িত্বে কাউন্টার থেকে বুঝে নেওয়ার কথা। প্রতারকরা কীভাবে টাকা নিয়ে চলে গেলো সেটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে। আমরা আর কিছু করতে পারবো না।’

সোনালীনিউজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.