মহিউদ্দিন ২০১৬ সালের প্রথম নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। মুন্সীগঞ্জে জেলা পরিষদ নির্বাচনে চেয়ারম্যান পদে একক প্রার্থী হিসেবে আওয়ামী লীগ প্রার্থী মো. মহিউদ্দিন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হতে যাচ্ছেন।
মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বিকাল ৩টা পর্যন্ত কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে নিয়ে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয়ে মনোনয়ন দাখিল করেন প্রার্থীরা।
মুন্সীগঞ্জ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা ও সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা মোহাম্মদ বশির আহমেদ জানান, মহিউদ্দিনের পক্ষে তার ছোট ভাই মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান অনিসুজ্জামান আনিস মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। এছাড়া সদস্য পদে মোট ৪০ প্রার্থী মনোনয়নপত্র জমা দিয়েছেন।
জমা পড়া এসব মনোনয়নপত্র বাছাই করা হবে ১৮ সেপ্টেম্বর, মনোনয়নপত্র বাছাইয়ের বিরুদ্ধে আপিল দায়েরের সময় ১৯ থেকে ২১ সেপ্টেম্বর, আপিল নিষ্পত্তি ২২ থেকে ২৪ সেপ্টেম্বর, প্রার্থিতা প্রত্যাহারের শেষ সময় ২৫ সেপ্টেম্বর।
এরপরই চূড়ান্ত প্রার্থী ঘোষণা করে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ২৬ সেপ্টেম্বর। ইভিএম পদ্ধতিতে ১৭ অক্টোবর সকাল ৯ টা থেকে দুপুর ২টা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হবে।
মুন্সীগঞ্জ জেলা পরিষদ থেকে পাওয়া তথ্য অনুযায়ী, মহিউদ্দিন ২০১৬ সালের প্রথম নির্বাচনেও আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। এর আগে জেলা পরিষদের প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ পান। বর্তমানেও তিনি জেলা পরিষদের প্রশাসকের দায়িত্ব পালন করছেন।
মহিউদ্দিন ১৯৪১ সালের ১০ মে মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বাংলাবাজার ইউনিয়নের পদ্মা তীরের কাইজ্জার চর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম ওসমান গণি ও মায়ের নাম মলুদা বেগম।
তিনি ১৯৬১ সালে মুন্সীগঞ্জ বহুমুখী উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পাশ করেন। পরে সরকারি হরগঙ্গা কলেজ থেকে এইচএসসি ও স্নাতক পাশ করে পরবর্তীতে তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন।
রাজনৈতিক জীবনে মহিউদ্দিন তিনবার কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের ক্রীড়া সম্পাদক ছিলেন। ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৫৪ সালের যুক্তফ্রন্ট নির্বাচন ও মুক্তিযুদ্ধসহ তৎকালীন সকল রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে তিনি সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ১৯৮৬ সালের তৃতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে তৎকালীন মুন্সীগঞ্জ-৪ আসন থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন।
তাছাড়া জাতীয় পর্যায়ের একজন ক্রীড়াবীদ হিসাবে তার সুখ্যাতি রয়েছে। সাঁতারে চমৎকার ক্রীড়া নৈপুণ্যের কারণে ‘রাজহংস’ খ্যাতি লাভ করেন তিনি। তিনি যুদ্ধকালীন বিএলএফ এর ঢাকা বিভাগীয় কমান্ডার হিসাবে দায়িত্ব পালন করেন।
২০০০ সালে তৎকালীন সরকার নতুন করে জেলা পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। এরপর জোট সরকারের আমলে এ নিয়ে কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার পুনরায় ক্ষমতায় আসার পর ২০১১ সালে প্রশাসক নিয়োগ দিয়ে জেলা পরিষদ পরিচালনা করে।
এরপর প্রথমবারের মতো স্থানীয় এই সরকারে নির্বাচন হয় ২০১৬ সালের ২৯ ডিসেম্বর। সে সময় ৬১টি জেলায় (তিন পার্বত্য জেলা বাদে) নির্বাচন হয়েছিল। এর মধ্যে ১৯টি জেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হন।
বিডিনিউজ
Leave a Reply