রাহমান মনি: ভ্রমণ ব্যয়বহুল হলেও অনেক ভ্রমণ পিয়াসুদের স্বপ্নের দেশ জাপান । বিশেষ করে আমাদের মতো তৃতীয় বিশ্বের দেশ গুলির জন্য । সেই জাপান যখন ঘোষণা দেয় যে ‘জাপান ভ্রমণে আর পূর্ব ভিসা লাগবেনা বা অন এরাইভ্যাল ভিসা পাওয়া যাবে তখন সবাই যে হুমড়ি খেয়ে যে পড়বে একথা বলার আর অপেক্ষা রাখে না।
হয়েছেও তাই ।
গত ২৩ সেপ্টেম্বর সিএনএন এর এক প্রতিবেদন সূত্রে জানা যায় যে ‘সীমান্তে কড়াকড়ি আরও শিথিল করতে যাচ্ছে জাপান। কোভিড-১৯ নিয়ন্ত্রণে এতদিন তাতে বিধিনিষেধ আরোপ করা ছিল। আগামী অক্টোবর থেকে তা তুলে নিচ্ছে দেশটি। ফলে তখন থেকে ভিসা ছাড়াই দেশটিতে ঢুকতে পারবেন বিদেশিরা’।
প্রধানমন্ত্রী কিশিদা জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের জন্য নিউইয়র্ক সফরের সময় বহুল প্রতীক্ষিত ঘোষণাটি দিয়েছিলেন।
প্রধানমন্ত্রী ফুমিও কিশিদা ঘোষণাবলেন , সীমান্তে নীতি আরও সহজ করা হবে। ফলে আগামী ১১ অক্টোবর থেকে ভিসা ছাড়াই দেশটিতে প্রবেশ করতে পারবেন পর্যটকরা। এজন্য ট্রাভেল এজেন্সির দ্বারস্থ হতে হবে না।
সাথে সাথে হুমড়ি খেয়ে পরে এক শ্রেনীর দালাল । তারা প্রচার করতে থাকে যে , জাপানে যেতে আর ভিসার প্রয়োজন নেই , টাকা থাকলেই জাপান যাওয়া যাবে।
তাই , ‘চলো চলো , জাপান চলো’ ।
কিন্তু আসলেই কি তাই ?
ঘটনা সত্য হলেও সব দেশের জন্য নয় ।
বাংলাদেশ তো নয়-ই , সার্কভুক্ত কোন দেশ ভিসা বিহীন ভ্রমনের সুবিধার আওতায় পরবেনা ।
মিনিস্ট্রি অফ ফরেন এফেয়ারস অফ জাপান এর তথ্য সুত্র অনুযায়ী, ভিন্ন ভিন্ন শর্ত সাপেক্ষে ৬৮ টি দেশের নাগরিকগন এই সুবিধার আওতায় ভিসা ছাড়া জাপান ভ্রমণের সুযোগ পাবে ।
দেশ গুলি হচ্ছে –
ইন্দোনেশিয়া ( শর্ত নং ১ বা নোট 1) , আইসল্যান্ড, সিঙ্গাপুর আয়ারল্যান্ড (নোট 6) , থাইল্যান্ড (নোট 2, ১৫ দিনের মধ্যে) , অ্যান্ডোরা , মালয়েশিয়া (নোট 2) , ইতালি , ব্রুনাই (১৪ দিনের মধ্যে) , এস্তোনিয়া , দক্ষিণ কোরিয়া , অস্ট্রিয়া (নোট 6) ,তাইওয়ান , নেদারল্যান্ডস , হংকং (নোট 3) ,সাইপ্রাস ,ম্যাকাও (নোট 4) , গ্রীস , উত্তর আমেরিকা , ক্রোয়েশিয়া , মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র , সান মারিনো , কানাডা , সুইজারল্যান্ড (নোট 6) ,লাতিন আমেরিকার সুইডেন , আর্জেন্টিনা স্পেন ,উরুগুয়ে স্লোভাকিয়া , এল সালভাদর স্লোভেনিয়া , গুয়াতেমালা , সার্বিয়া (নোট 2) , কোস্টারিকা চেক প্রজাতন্ত্র , সুরিনাম ,ডেনমার্ক, চিলি জার্মানি (নোট 6), ডোমিনিকান রিপাবলিক নরওয়ে , বাহামা হাঙ্গেরি , বার্বাডোস (নোট 5) ফিনল্যান্ড , হন্ডুরাস , ফ্রান্স , মেক্সিকো (নোট 6) , বুলগেরিয়া , ওশেনিয়া ,বেলজিয়াম , অস্ট্রেলিয়া , পোল্যান্ড ,নিউজিল্যান্ড , পর্তুগাল , মধ্যপ্রাচ্য , উত্তর মেসিডোনিয়া , সংযুক্ত আরব আমিরাত (নোট 7) , মাল্টা , ইসরায়েল মোনাকো , তুরস্ক (নোট 5) লাটভিয়া , আফ্রিকা লিথুয়ানিয়ান , তিউনিসিয়া, লিচেনস্টাইন (নোট 6) , মরিশাস রোমানিয়া , লেসোথো (নোট 5) , লুক্সেমবার্গ এবং যুক্তরাজ্য (নোট 6) সহ ইউ ইউরোপের অধিকাংশ দেশ সমুহ । ।
https://www.mofa.go.jp/mofaj/toko/visa/tanki/novisa.html
১১ অক্টোবর থেকে তা কার্যকর শুরু হবে ।
উল্লেখ্য বিশ্বজুড়ে করোনা প্রাদুর্ভাবের শুরু থেকে সীমান্তে বিধিনিষেধ দেয় জাপান। তবে গত জুন থেকে ধীরে ধীরে পর্যটকদের জন্য সীমান্ত খুলে দেয় দেশটি। এরপর জুলাই পর্যন্ত মাত্র ৮ হাজার বিদেশি দেশটি ভ্রমণ করে। এতে ওই খাতে লোকসানের শঙ্কা দেখা দেয়।
জাপানের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির অন্যতম উৎস পর্যটন খাত। ২০১৯ সালে দেশটিতে ৩ কোটি ২০ লাখ পর্যটক প্রবেশ করেন। এতে বিপুল পরিমাণ বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন করতে সক্ষম হয় জাপান ।।
Leave a Reply