মুন্সিগঞ্জের গজারিয়ায় স্বামীর সঙ্গে পরকীয়ার সন্দেহে এক নারীকে রাস্তা থেকে তুলে নিয়ে শারীরিক নির্যাতনের পর চুল কেটে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে আরেক নারীর বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর মেয়ে বাদী হয়ে গজারিয়া থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগী নারী জানান, দীর্ঘ ১২ বছর আগে তার স্বামী আবুল কালাম তাকে ছেড়ে অন্য আরেক জনকে বিয়ে করে নতুন করে সংসার শুরু করেন। দাম্পত্য জীবনে তার তিন মেয়ে রয়েছে। অভাবের সংসারে হাল ধরতে বাধ্য হয়ে তিনি একটি কারখানায় শ্রমিক হিসেবে কাজ শুরু করেন। পরবর্তীকালে ফেরি করে কাপড় বিক্রির ব্যবসা শুরু করেন।
গত শনিবার দিন রাতে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে তিনি সিলেট হযরত শাহ জালাল ও শাহ পরান (রা.) মাজার জিয়ারতের উদ্দেশে রওয়ানা হন। গাড়িতে প্রায় ৪৭ জন যাত্রী ছিলেন। তাদের মধ্যে একজন ছিলেন পাশের দৌলতপুর গ্রামের তাইজুদ্দিন। এতে তাইজুদ্দিনের স্ত্রী ফরিদা বেগমের সন্দেহ হয় তার স্বামী ভুক্তভোগী নারীকে নিয়ে সিলেটে মাজার জিয়ারত করতে গিয়েছেন।
গত সোমবার দিনগত রাত ১টার দিকে মাজার জিয়ারত শেষে তারা গজারিয়া ভবেরচর বাসস্ট্যান্ডে নামেন। সেখানে নামার পরই আগ থেকে ওঁত পেতে থাকা তাইজুদ্দিনের স্ত্রী ফরিদার নেতৃত্বে ৭/৮ জন তাকে গাড়িতে তুলে নেন। পরে ভবেরচর বাসস্ট্যান্ড থেকে ৭/৮ কিলোমিটার দূরে রসুলপুর খাদ্য গুদাম সংলগ্ন একটি নির্জন জায়গায় নিয়ে তাকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেন তারা। ছুরি দিয়ে তার গায়ের বিভিন্ন অংশ কেটে সেখানে মরিচের গুড়া ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এলাকাবাসীর কাছে কলঙ্কিনী প্রমাণ করতে কেটে দেওয়া হয় মাথার চুলও। তাদের মারধরে তিনি জ্ঞান হারান। পরবর্তীকালে স্থানীয়রা তাকে উদ্ধার করে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে পাঠায়।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের দায়িত্ব চিকিৎসক ডা. কান্তা রানী দাস বলেন, ওই নারীর শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। তাকে কয়েকজন মিলে মারধর করেছে। তবে আঘাত গুরুতর না হওয়ায় তাকে এ হাসপাতালেই ভর্তি করা হয়েছে।
বিষয়টি সম্পর্কে গজারিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোল্লা সোহেব আলী বলেন, ঘটনার প্রাথমিক সত্যতা পাওয়া গেছে। জিজ্ঞাসাবাদের জন্য দুজনকে আটক করা হয়েছে। মামলার প্রক্রিয়া চলছে।
আরাফাত রায়হান সাকিব/এমআরআর/এমএস
Leave a Reply