অবহেলায় ধ্বংসের পথে সোনারং ‘জোড়া মঠ’

কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু: মুন্সীগঞ্জ জেলার টঙ্গীবাড়ি উপজেলার সোনারং-টঙ্গীবাড়ী ইউনিয়নের সোনারং গ্রামে দেড়শ বছরের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়ে আছে জোড়া মঠ। অষ্টাদশ শতাব্দীর স্থাপত্যশৈলীর এক অপূর্ব প্রত্নতাত্ত্বিক এ নিদর্শনটি অযত্ন-অবহেলায় ধ্বংসের পথে। জোড়া মঠ হিসেবে পরিচিত হলেও মূলত এটি জোড়া মন্দির।

প্রস্তরলিপি থেকে জানা গেছে, সোনারং গ্রামের রূপচন্দ্র নামের এক বণিক দুই ধাপে মন্দিরটি নির্মাণ করেন। খ্রিষ্টীয় ১৮৪৩ সালে নির্মিত হয় বড় মন্দিরটি, যা মূলত কালীমন্দির। ১৮৮৬ সালে নির্মিত ছোট মন্দিরটি শিবমন্দির হিসেবে ব্যবহূত হতো। মূল মন্দিরের ছাদ গোলাকার আকৃতির। অষ্টভুজাকারের মন্দির দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে ২১ ফুট।
মন্দিরের সামনের দিকে রয়েছে বড় একটি পুকুর। বড় মন্দিরটি তৈরির সময় এ পুকুরটি তৈরি করা হয়েছিল বলে এলাকার বাসিন্দারা জানিয়েছেন। যদিও তাঁরা বিষয়টি শুনেছেন পূর্বপুরুষদের কাছ থেকে। তাঁরা আরও শুনেছেন, এ মন্দিরের পাশেই প্রতিষ্ঠাতা রূপচন্দ্রের অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া হয়েছে।

সরেজমিন দেখা গেছে, মন্দির দুটির উচ্চতা ও স্থাপত্যশৈলীতে বেশকিছু পার্থক্য রয়েছে। বড় মন্দিরটির উচ্চতা প্রায় ১৫ মিটার। বারান্দা ১ দশমিক ৯৪ মিটার। ছোটটির উচ্চতা ১২ মিটার ও বারান্দা ১ দশমিক ৯৪ মিটার। দেয়ালের নানা অংশ খসে খসে পড়ছে। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের একটি সাইনবোর্ডও দেখা গেছে।

স্থানীয় বাসিন্দা সালাউদ্দিন আজাদ বলেন, এক সময় মন্দির দুটির বাইরে ও ভেতরের দিক অসাধারণ কারুকাজ ছিল। দীর্ঘদিনের অবহেলা আর অযত্নে তা এখন ধ্বংসের মুখে। এই ভগ্নদশার মাঝে মন্দিরের বিভিন্ন অংশে বাসা বেঁধেছে টিয়াপাখির ঝাঁক। তাদের কলকাকলিতে মুগ্ধতা প্রকাশ করেন দর্শনার্থীরা।

স্থানীয় সচেতন মহল মনে করছেন, দ্রুতই জোড়া মঠের তদারকি ও মেরামতের উদ্যোগ নেওয়া প্রয়োজন। তা না হলে অচিরেই ইতিহাস থেকে হারিয়ে যাবে এই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন।

সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.