মুন্সীগঞ্জে সিত্রাংয়ের প্রভাবে ৭৫০ হেক্টর জমির ফসল ক্ষতিগ্রস্ত

মুন্সীগঞ্জে ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ৭৫০ হেক্টর জমির ফসলের ক্ষতি হয়েছে। এতে কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জে ইতোমধ্যে শীতকালীন সবজি চাষ শুরু হয়েছে। কিন্তু সবজি ক্ষেতগুলো ঝড়-বৃষ্টিতে তলিয়ে গেছে। এছাড়া আমন ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

সরেজমিনে মুন্সীগঞ্জ সদর ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলার বেশ কিছু গ্রাম ঘুরে দেখা যায়, ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের
প্রভাবে জেলার অনেক ফসলি জমি তলিয়ে গেছে। আগাম চাষ করা সবজি ক্ষেত তলিয়ে যাওয়ায় কৃষক ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হবেন।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মুন্সীগঞ্জ, টঙ্গিবাড়ী ও সিরাজদিখান উপজেলায় এবার সাড়ে ৪ হাজার হেক্টর জমিতে শীতকালীন সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে ৩৮৭ হেক্টর জমিতে আগাম সবজির চাষ হয়েছে। এসব সবজির মধ্যে ফুলকপি, বাঁধাকপি, টমেটো ও শালগম প্রধান। সোমবার ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে ১৯০ হেক্টর জমির সবজি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এছাড়া ২৬০ হেক্টর রোপা আমন, এক হেক্টর করে মরিচ, খেসারি, কলাইয়ের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

সদর উপজেলার রতনপুর এলাকার কৃষক মো. আবুল কাশেম বলেন, আমি ১০ শতাংশ জমিতে ফুলকপি, পালং শাক, লাল শাক, মুলা শাক ও ধনেপাতা চাষ করেছি। ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ভারী বৃষ্টি হয়েছে। এতে আমার জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। চাষ করা শাক-সবজি নষ্ট হয়ে গেছে।

চাঁপাতলা এলাকার নাসির বলেন, আমার চাচা আনিস শেখ ৮৫ শতাংশ জমিতে লাল শাক, ডাটা, ফুলকপির আবাদ করেছেন। এতে তার প্রায় ৮০ হাজার টাকার মতো খরচ হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে সব ফসল পানিতে ডুবে নষ্ট হয়ে গেছে।

একই এলাকার কৃষক মো. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, আমি ২৯ শতাংশ জমিতে আগাম ফুলকপি, মিষ্টি কুমড়া, লালশাক আবাদ করেছিলাম। হঠাৎ ঘূর্ণিঝড়ে জমিতে হাঁটু পানি জমেছে। এতে আমার কমপক্ষে ৩০ হাজার টাকা ক্ষতি হয়েছে।

উত্তর মহাখালী এলাকার কৃষক মো. শাহ আলম বলেন, ধার-দেনা করে ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ৬০ শতাংশ জমিতে লালশাক, বাঁধাকপি, ডাটা শাক আবাদ করেছি। ঝড়-বৃষ্টিতে জমিতে হাঁটু সমান পানি জমেছে। এতে করে জমির সব সবজি নষ্ট হয়ে যাবে। তিনি বলেন, নতুন করে সবজি আবাদ করবো সেই সামর্থ্য নেই।

মনির রাঢ়ী নামে এক কৃষক বলেন, ১০ একর জমিতে ৫ লাখ টাকা খরচ করে সবজি আবাদ করেছিলাম। বৃষ্টির পানিতে সব শেষ হয়ে গেছে।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. খুরশিদ আলম বলেন, সবজির ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণ করতে সপ্তাহ খানেক সময় লাগবে। সপ্তাহখানেক পর ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে। ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের জন্য সহযোগিতা চাওয়া হবে। সহযোগিতা আসলে ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের মধ্যে বণ্টন করা হবে।

ব.ম শামীম/এসপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.