আড়িয়াল বিলে বাড়ছে সবজি চাষ, ভিট প্রস্তুতে ব্যস্ত কৃষকরা

আড়িয়াল বিল দেশের মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে বড় ও প্রাচীন বিল হিসেবে পরিচিত। দেশীয় প্রজাতির বিভিন্ন তাজা মাছ, বোরো ধান, শীতকালীন আগাম শাক সবজি ও জীববৈচিত্রময় আড়িয়াল বিখ্যাত হয়ে উঠেছে। এছাড়া হাজার হাজার মানুষের জীবন জীবিকার অন্যতম মাধ্যম এই বিলকে ঘিরে থাকে সম্ভাবনাময় আয়ের উৎস। এরই মধ্যে আড়িয়াল বিলের মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার বিভিন্ন অংশে স্থানীয় কৃষকদের আগাম শাক-সবজি চাষের জন্য কচুরিপানার ভিট প্রস্তুত করতে ব্যস্ত সময় পাড় করতে দেখা গেছে।

তবে সিত্রাংয়ের প্রভাবে এ অঞ্চলে খালে বিলে অস্বাভাবিক পানি বৃদ্ধির ফলে দীর্ঘ জলাবদ্ধতার শঙ্কা করছেন। এতে কৃষিজমিতে মৌসুমী ফসলের চাষাবাদ নিয়ে কৃষকদের কপালে পড়েছে দুশ্চিন্তার ভাঁজ।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, ফসলী জমিতে পানি বৃদ্ধির কারণে কার্তিক মাসেও যেন বর্ষায় পরিণত হয়েছে। অন্যান্য বছরের এ সময় আগাম ধান চাষাবাদে জমি পরিস্কার-পরিছন্নতা ও বীজতলা তৈরির কাজে ব্যস্ত থাকার কথা থাকলেও সিত্রাংয়ের প্রভাবে এ অঞ্চলের চিত্র ভিন রূপ নিয়েছে। তবে বির্স্তীণ আড়িয়াল বিলের বিভিন্ন স্থানে জমিতে থাকা কচুরি পানা উঠিয়ে ভিট প্রস্তুত করতে দেখা যায় স্থানীয় কৃষকদের। এসব ভিটে আগাম লাউ, মিষ্টি কুমড়া, খিরাইসহ অন্যান্য শাক-সবজির বীজ বপণের জন্য প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে।

রাঢ়িখাল এলাকার কেবল দাস, দুলাল হোসেন, প্রাণীমন্ডলের পরিমল দাস, বাড়ৈখালীর শ্রীধরপুর এলাকার পলাশ, হাঁসাড়ার আবুল হোসেনসহ অনেকেই বলেন, হঠাৎ বৃষ্টি ও জোয়ারের পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় বিলে পানির গভীরতা বেড়েছে। এ অবস্থায় কৃষিতে প্রায় এক মাসের বিরম্বনার শিকার হবার শঙ্কা করছেন।

সিত্রাংয়ের আগে বীজতলা ও আগাম সবজির চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তারা। লাগাতার বৃষ্টিতে তাদের এ স্বপ্ন ভঙ্গ হয়েছে। এখন শীতকালীন আগাম শাক-সবজির জন্য বিলে ভিট বানাচ্ছি। ভাসমান ভিট প্রস্তুত হলেই লাউ, কুমড়াসহ অন্যান্য সবজির চারা রোপণ করা হবে। পানি নামার সাথে সাথে এসব ভাসমান ভিট বিভিন্ন জমির পাশে রাখা হবে।

অন্যাদিকে উপজেলার কোলাপাড়া, সমষপুর, কামারখোলা, দক্ষিণ পাইকশা, পাটাভোগ-বাড়ৈগাঁও, বিবন্দী-ঝুলদী, বীরতারা, সাতগাঁও-তিনগাঁও, রাঢ়িখাল, ভাগ্যকুল, ষোলঘর, হাঁসাড়া এলাকার বিভিন্ন চকে জলাবদ্ধতার শঙ্কায় পড়েছেন স্থানীয় কৃষকরা। তারা জানান, এ অঞ্চলের বিভিন্ন খাল-বিল, কালভার্ট-সেতু, জলাশয় যত্রতত্র ভরাট ও দখলের কারণে অনেকাংশে পানি প্রবাহের পথ দিনদিন বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এতে করে এখানকার গুরুত্বপূর্ণ চক/বিলগুলো জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে।

স্থানীয় কৃষি অফিস সূত্রমতে জানা যায়, উপজেলায় প্রায় ২ হাজার ৩০০ হেক্টর জমিতে আলু চাষ হয়ে থাকে। ১০ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের ধান চাষ করা হয়। এর মধ্যে আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশেই ৫ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম ধানের চাষাবাদ হয়। এছাড়া অন্যান্য বিভিন্ন জমিতে আগাম শাক-সবজি ও অন্যান্য রবিশস্যর চাষ করেন স্থানীয়রা।

নিউজজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.