শ্রীনগরে ছাড়পত্রবিহীন কারখানায় মানহীন পণ্য

শ্রীনগর উপজেলার ভাগ্যকুল ইউনিয়নের কামারগাঁও ঘোষবাড়ি রাস্তার পাশে ‘ত্বয়াম এগ্রো ফুড এন্ড বেভারেজ’ নামক ছাড়পত্র ও সাইনবোর্ডবিহীন একটি কারখানায় তৈরি করা হচ্ছে পেপকো পাওয়ার ব্রান্ডের টয়েলেট ক্লিনার, হ্যান্ড ওয়াস, সয়াবিন তেলসহ বিভিন্ন মানহীন পণ্য। কামারগাঁও ঘোষবাড়ির পাশে অবস্থিত ওই কারখানায় নারায়ণগঞ্জ রূপগঞ্জের তারাব এলাকার এসআর কনজ্যুমার প্রোডাক্টস্রে জম জম ব্রান্ডের সয়াবিন তেলের বোতলের গায়ে স্টিকার লাগাতে দেখা গেছে।

একই সাথে ভাগ্যকুলের ঠিকানায় ‘ত্বয়াম এগ্রো ফুড এন্ড বেভারেজ’ প্রস্তুতকারক কারখানায় ত্বয়াব সয়াবিন তেল, পেপকো পাওয়ার টয়েলেট ক্লিনার ও পেপকো হ্যান্ড ওয়াস তৈরি করা হচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, কয়েক বছর ধরে এ কারখানায় মানহীন পণ্য সামগ্রী উৎপাদনের ক্ষেত্রে সরকারের কোন নীতিমালা মানা হচ্ছে না। উৎপাদিত পণ্যের সামগ্রীর গায়ে ব্যাচ নং, উৎপাদনের তারিখ, মেয়াদ উত্তীর্ণের তারিখসহ তথ্যসমূহে নানা অনিয়ম করা হচ্ছে। মান নিয়ন্ত্রণহীন পণ্যগুলোতে আর্কষনীয় মোড়কে বাজারকরণ করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন স্থানীয়রা।

একটি সূত্র জানায়, বেশীরভাগ সময় রাতে কারখানার গেইট বন্ধ করে নিন্মমানের উপকরণ সামগ্রী হাতে মিশিয়ে বিভিন্ন বোতলে ভরা হয়। এর আগে কারখানার কয়েকজন শ্রমিককে বেতন না দেয়ার অভিযোগ রয়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, শ্রীনগর-দোহার আঞ্চলিক সড়কের বটতলা সংলগ্ন সড়কের উত্তর দিকে কামারগাঁও ঘোষ বাড়ির শাখা রাস্তার পাশে সাইন বোর্ডবিহীন কারখানাটির অবস্থান।

কারখানায় জম জম ব্রান্ডের পণ্য সামগ্রী মোড়কে রূপগঞ্জের এসআর কনজ্যুমার প্রোডাক্টস্ ও ত্বয়াব ব্রান্ডের সয়াবিন তেলের অসংখ্য বোতলে মুন্সিগঞ্জ শ্রীনগরের ভাগ্যকুলের ঠিকানাযুক্ত স্টিকার লাগানো হচ্ছে। লক্ষ্য করা যায়, বড় বড় প্লাষ্টিকের পাত্রে হাতের সাহায্যে বিভিন্ন উপকরণ মিশিয়ে পেপকো হ্যান্ড ওয়াস ও টয়েলেট ক্লিনার বোতলজাত করা হচ্ছে। কারখানার একটি শেডে যত্রতত্রভাবে ক্যামিকেল-রাসায়নিক দ্রব্য ও ড্রামভর্তি সয়াবিন তেল রাখা হয়েছে। পরিশোধিত করার তেমন কোন মেশিন চোখে না পড়লেও বড় ড্রামের সয়াবিন তেল ঢেলে বিভিন্ন সাইজের বোতলে ভরে প্রস্তুতকারক হিসেবে বাজারজাত করা হচ্ছে।

এ সময় মো. রিয়াদ নামে কারখানার এক শ্রমিক বলেন, মাসিক বেতনে তিনি কাজ করেন। তিনিসহ মোট ৪ জন শ্রমিক আছেন এখানে। কারখানার মালিক মো. লিটন মাঝে মধ্যে এখানে আসেন। এখন কোন ক্যামিস্ট নেই। কারখানায় কাজের চাপ থাকলে দৈনিক রোজে স্থানীয়ভাবে জলবল নেয়া হয়। আপনাদের কিছু জানার হলে মালিকের সাথে যোগাযোগ করুন।

শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিস স্টেশন সাব-অফিসার শাহে আলম জানান, কারখানার কোন বৈধ কাগজপত্র নেই। এমনকি ফায়ার সার্ভিসের লাইসেন্সের জন্যও কারখানার কর্তৃপক্ষ কোন আবেদেন করেনি।

কারখানার কর্ণধার মো. মাহাবুব আলম লিটনের কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, বাংলাদেশের কোন খানেই শতভাগ পরিপূর্ণ কারখানা নাই আমারটাও তাই। আমি কোন নকল মাল তৈরি করি না।

বিএসটিআইয়ের অনুমতি আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এটা বিএসটিআই সংস্থা দেখবে। আপনাদের কাছে বলবো কেন।

এ বিষয়ে শ্রীনগর উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ হোসেন পাটওয়ারী জানান, আপনাদের মাধ্যমে বিষয়টি জানতে পারলাম। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

নিউজজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.