৪ বছর পর মুন্সিগঞ্জ-গজারিয়া নৌরুটে ফেরি চালু

মেঘনা নদীর মুন্সিগঞ্জ-গজারিয়া নৌরুটে পারাপারে আবারও ফেরি চালু হচ্ছে বুধবার। এরমধ্যে ফেরিঘাট, পন্টুন স্থাপন ও সংযোগ সড়কের কাজ শেষ করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডাব্লিউটিএ)।

বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে নৌরুটের বহরে আনা হয়েছে সন্ধ্যামালতি, স্বর্ণচাঁপা ও কর্ণফুলী নামের তিনটি ফেরি। বেলা ১১টার দিকে এ রুটে ফেরি চালুর উদ্বোধন করা হবে৷ বিআইডব্লিউটিসির পরিচালক (বাণিজ্য) এস এম আশিকুজ্জামান জাগো নিউজকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ফেরি সার্ভিসটি চালুর মাধ্যমে নদী পারাপারে স্থানীয়দের দুর্ভোগ শেষ হবে। একই সঙ্গে দক্ষিণ বঙ্গ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে আসা যানবাহন ঢাকার যানজট এড়িয়ে মুন্সিগঞ্জ হয়ে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে যাতায়াত করতে পারবে।

এস এম আশিকুজ্জামান বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও মাঝিকান্দি নৌরুটের ফেরিগুলো স্থানান্তরের মাধ্যমে অন্য রুটে ফেরি সেবা চালু করা হচ্ছে। মুন্সিগঞ্জ-গজারিয়া রুটে আবার ফেরি সার্ভিস পরিকল্পনা নেওয়া হয়। এ ফেরি সার্ভিসটি নিয়ে আমরা আশাবাদী। দক্ষিণবঙ্গ থেকে পদ্মা সেতু হয়ে আসা যানবাহন শহরে না ঢুকে মুন্সিগঞ্জ হয়ে ফেরি দিয়ে ভবেরচর হয়ে ঢাকা-চট্রগ্রাম মহাসড়কে উঠেতে পারবে। এসব যানবাহনের ৫০-৬০ কিলোমিটার দূরত্ব কমে যাবে। এতে আর্থিকভাবেও লাভবান হবে তারা।

তিনি আরও বলেন, বর্তমানে এ রুটে তিনটি ফেরি থাকছে, আমরা যদি দেখি গাড়ির সংখ্যা বেড়ে যায় তাহলে ভবিষ্যতে ফেরির সংখ্যা আরও বাড়ানো হবে। তিনটি ফেরির মধ্যে কর্ণফুলী ফেরিটি ছোট। যখন গাড়ির সংখ্যা কম থাকবে তখন কর্ণফুলী ফেরিটি দিয়ে পারাপার করা হবে। অন্যান্য রুটে যে হারে ভাড়া নির্ধারিত সে হারেই এখানে ভাড়া নেওয়া হবে।

ফেরি ঘটি ঘুরে দেখা যায়, উদ্বোধনের জন্য মেঘনা নদীর গজারিয়া অংশ কাজিপুরা ও মুন্সিগঞ্জ অংশের চর-কিশোরগঞ্জ পাড়ে ঘাট নির্মাণ সম্পূর্ণ। স্বর্ণচাঁপা ও সন্ধ্যামালতি নামের দুটি ফেরি দুটি ঘাটে নোঙর করা।

নতুন করে ফেরি সার্ভিস চালু প্রস্তুতিতে উচ্ছ্বসিত স্থানীরা। স্থানীয়া জানান, মেঘনা নদীতে বিচ্ছিন্ন গজারিয়া উপজেলা থেকে জেলা সদরে যাতায়াতে প্রতিদিন ভোগান্তি আর জীবনের শঙ্কা নিয়ে উত্তাল নদী পারি দিতে হয় যাত্রীদের। ঝড়-ঝঞ্ঝা আর সন্ধ্যার পর দুর্ভোগ বাড়ে বহুগুণে। মানুষজন পারাপার করতে পারলেও ফেরি না থাকায় পারাপার হয়না কোন যানবাহন। ৭-৮কিলোমিটার দূরত্বের সদর উপজেলায় সড়ক পথে আসতে হয় নারায়ণগঞ্জ হয়ে অর্ধশতকিলোমিটার পথ পারি দিয়ে। ফেরি চালু হলে যাতায়াতের ঝক্কি ও দুর্ভোগ এড়িয়ে পারাপার করা যাবে।

ফেরি স্বর্ণচাঁপার ইংল্যান্ড মাস্টার অফিসার মো. ইখলাস জানান, সন্ধ্যামালতি আর স্বর্ণচাঁপা ফেরিতে যাত্রীসহ পাঁচটি ট্রাক ও চারটি ছোটগাড়ি এক সঙ্গে পারাপার করা যাবে। নদী পারি দিতে সময় লাগবে ২০-২৫মিনিট। উদ্বোধনের পর ২৪ ঘণ্টাই সচল রাখার পরিকল্পনা রয়েছে।

এরআগে ২০১৮ সালের জুনে এ নৌরুটে ফেরি উদ্বোধন করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তবে দুই পাড়ের যাতায়াতের সড়কের বেহাল দশা, যানবাহন সংকটসহ নানা প্রতিকূলতার মুখে কয়েক মাস না যেতেই বন্ধ হয়ে যায় সার্ভিসটি। এরপর সরিয়ে নেওয়া হয়েছিল ঘাটের পন্টুন।

আরাফাত রায়হান সাকিব/জেএস/এমএস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.