শ্রীনগরে নৌকার বিপক্ষে অবস্থানকারীরা বিভিন্ন ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ লাভের দৌড়ে এগিয়ে আছে। উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের স্বেচ্ছাসেবক লীগের কমিটি গঠনের লক্ষ্যে গেলো মাসেই ইউনিয়ন ভিত্তিক কর্মী সম্মেলনের কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এতে বিভিন্ন ওয়ার্ড ও ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের জীবনবৃত্তান্ত/সিভি নেয়া হয়।
অভিযোগ উঠেছে বিগত সময়ে কোন না কোন নির্বাচনে প্রকাশ্যে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছে এমন ব্যক্তিরাই পদের দৌড়ে এগিয়ে। এ দৌড়ে সবচেয়ে এগিয়ে আছে উপজেলার বাঘড়া, কোলাপাড়া, কুকুটিয়া, আটপাড়া, তন্তর ইউনিয়নে। কারও কারও বিরুদ্ধে রয়েছে মাদকের সাথে সম্পৃত্ততার অভিযোগ। এ অবস্থায় স্থানীয় আওয়ামী পরিবারের একনিষ্ঠ ত্যাগি ও প্রবীণ নেতাকর্মীরা পড়েছেন দুশ্চিন্তায়। অন্যদিকে আগামী ১৫ নভেম্বর শ্রীনগর উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের সম্মেলন অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে। উপজেলার সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পদ প্রত্যাশীরা প্রচার প্রচারনা শুরু করেছেন। সম্মেলনকে ঘিরে শ্রীনগর স্টেডিয়ামে প্যান্ডেল, গেইট, তোড়ন তৈরীসহ চলছে ব্যাপক প্রস্তুতি।
জানা গেছে, শ্রীনগর উপজেলা পরিষদ ও বিভিন্ন ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থীর নৌকার বিপক্ষে অবস্থানকারীদের অনেকেই ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক লীগের গুরুত্বপূর্ণ এ কমিটির সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকের পদ নেয়ার দৌড়ে সক্রিয়। তাদের প্রচার প্রচারণা ও দৌড়ঝাপ দেখে মনে হচ্ছে নৌকার বিপক্ষে নির্বাচনকারীরাই যেন সংশ্লিষ্ট এসব পদপদবীর একমাত্র দাবিদার। এ অবস্থায় প্রবীন আওয়ামী লীগের ত্যাগী ও একনিষ্ট কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হচ্ছে।
তারা বলছেন, দলীয় কোন সম্মেলন শুরু হলেই পদ প্রত্যাশীদের আর অভাব হয় না। একই পদের জন্য একাধিক প্রার্থীর আগমন ঘটে। এসব প্রার্থীরা হাজার হাজার নেতা-কর্মী নিয়ে মিছিল ও মোটরবাইক শোডাউন করে সম্মেলনের মাঠ গরম করে। অথচ শ্রীনগরে বিগত নির্বাচনগুলোতে আওয়ামী লীগের সভাপতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মনোনীত নৌকা প্রার্থীদের ভরাডুবি হয়। এখনই সময় ওয়ার্ড, ইউনিয়ন ও উপজেলা পর্যায়ে যোগ্য নেতাদের হাতে দায়িত্ব ভাড় তুলে দেয়া। সংগঠনের নেতৃত্বের স্থানে যেন দলের জন্য বিপদজনক কোন ব্যক্তিকে রাখা না হয়। এসব কমিটিতে সভাপতি-সম্পাদক চুরান্তের আগে যাচাই বাছাই করার জন্য সংশ্লিষ্টজনদের প্রতি অনুরোধ করেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, আটপাড়া ও তন্তর ইউনিয়নে স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক পদ প্রত্যাশীদের মধ্যে সবাই বিগত নির্বাচনে কোন না কোন নির্বাচানে নৌকার বিপক্ষে অবস্থান করে। বাঘড়ায় সভাপতি পদে একজন ব্যতিত অন্য প্রার্থীরা নৌকা বিরোধী ছিল। কোলাপাড়ায় মোট প্রার্থীর মধ্যে ২ জন ও কুকুটিয়ায় মোট প্রার্থীর মধ্যে ২ জন বাদে সবাই নৌকার বিপক্ষে কাজ করে। এছাড়া বাকী ইউনিয়নের চিত্র প্রায় একই রকম। স্বেচ্ছাসেবক লীগের বেশীর ভাগ প্রার্থীর বিরুদ্ধেই রয়েছে নৌকার বিপক্ষে কাজ করার অভিযোগ। অথচ পদের সময় সুবিধাভোগী নেতাদের ভিড়ে ত্যাগিরা কোনঠাসায় পরেছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক নেতারা জানান, সংশ্লিষ্ট ইউনিয়নের তৃণমূলে খোঁজ নিলেই এসব বিতর্কিত প্রার্থীদের নাম বেড়িয়ে আসবে। এ বিষয়ে দলের নির্ধারকদের সুদৃষ্টি কামনা করেছেন তারা।
উল্লেখ্য, গেলো শ্রীনগর উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে নৌকার ভরাডুবি হয়। উপজেলায় ৩ জন প্রার্থীর ভোট যুদ্ধে নৌকা অবস্থান হয় তৃতীয়। এছাড়া ১৪টি ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ৫টি নৌকার জয়লাভ হয়। ৭টিতে সতন্ত্র, ১টিতে বিকল্পধারা নেতা ও ১টিতে বিএনপি নেতা জয়লাভ হয়। ৯ ইউনিয়নে নৌকার ভরাডুবির দিনে আটপাড়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে নৌকার প্রার্থী ১২১ ভোট পেয়ে জামানত হারায়।
নিউজজি
Leave a Reply