মো. মাসুদ খান: নারায়ণগঞ্জের পঞ্চবটি থেকে মুন্সীগঞ্জের মুক্তারপুর পর্যন্ত দ্বিতল সড়কের মাটি পরীক্ষার (সয়েল টেস্ট) কাজ চলছে এখন পুরোদমে। ৯ কিলোমিটার দীর্ঘ দ্বিতল এ সড়কের আধুনিকায়নে ২৮৮টি পয়েন্টে মাটি পরীক্ষা করা হবে। এরই মধ্যে ১১৭ পয়েন্টে কাজ সম্পন্ন হয়েছে। চলতি বছরের মধ্যেই এই পরীক্ষার কাজ সম্পন্ন করা হবে বলে জানিয়েছেন দায়িত্বশীলরা।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, দুই হাজার ২৪২ কোটি ৭৭ লাখ ৪৫ হাজার টাকা ব্যয়ে চীনা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান স্যানডন ও সিএসআই তিন বছরের মধ্যে এর নির্মাণকাজ শেষ করবে। ডিসেম্বর কিংবা জানুয়ারির মধ্যেই মূল কাজ শুরু হতে পারে।
জানা গেছে, পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্তকরণে জমির প্রয়োজন ৫৬.৭৪৭৫ একর। তবে এর মধ্যে অধিগ্রহণ করতে হবে ৩৭.১১ একর, যার মধ্যে মুন্সীগঞ্জ জেলায় ২.৯৭ একর এবং নারায়ণগঞ্জ জেলায় ৩৪.১৪ একর জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াধীন। এ ছাড়া সরকারি খাস সম্পত্তি রয়েছে ১৪.৮৫ একর। আধুনিকায়ন হলেও টোল দিতে হবে দোতলা সড়ক ব্যবহারে। তবে নিচের সড়কে টোল থাকবে না।
প্রকল্পটির পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, মুন্সীগঞ্জ অংশে জমি অধিগ্রহণ সম্পন্ন হওয়ার পর ৯০ শতাংশেরও বেশি জমি প্রকল্প কর্তৃপক্ষকে বুঝিয়ে দিয়েছে জেলা প্রশাসন। অধিগ্রহণকৃত এলাকার স্থাপনাও অপসারণ করা হচ্ছে। নারায়ণগঞ্জ অংশের জমি অধিগ্রহণ প্রক্রিয়াও চূড়ান্ত পর্যায়ে। এটি বাস্তবায়িত হলে এই সড়ক ভ্রমণে সময় হ্রাস পাবে ৬২.৮৯ শতাংশ। আর যানবাহনগুলোর গতি বেড়ে যাবে ৪.৪৫ গুণ। তাই এই সড়ক ব্যবহারকারীরা স্বাচ্ছন্দ্যে যেমন গন্তব্যে পৌঁছতে পারবে, আবার সময় কমে যাওয়ায় জ্বালানি অপচয়ও রোধ হবে। শিল্প-কারখানাগুলোর কাঁচামাল ও উৎপাদিত পণ্য বাজারজাত সহজ হবে এবং ব্যয় কমে যাবে।
তিনি আরো জানান, এ সড়ক প্রশস্ত হলে রাজধানীর ওপর চাপ কমে যাবে। এই অঞ্চলের অনেকেই চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য কিংবা পড়াশোনার জন্য ঢাকায় বসবাস করছে। এই প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে তারা নিজ এলাকায় বসবাস করেই রাজধানীতে কাজ করতে পারবে।
গত ১১ অক্টোবর তৃতীয় শীতলক্ষ্যা সেতু চালু হওয়ার পর পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়কের গুরুত্ব আরো বেড়ে গেছে। এই সেতুতে যানবাহনের চাপ দ্রুত সামাল দিতেই সড়কটির আধুনিকায়ন জরুরি। প্রকল্পসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, পঞ্চবটি-মুক্তারপুর সড়ক প্রশস্ত ও দোতলাকরণ প্রকল্প বদলে দেবে মুন্সীগঞ্জের সড়ক নেটওয়ার্ক।
কালের কন্ঠ
Leave a Reply