মুন্সীগঞ্জে আড়িয়াল বিলে বীজতলা তৈরী কাজে ব্যস্ত কৃষক

মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে বোর মৌসুমকে সামনে রেখে বীজতলা তৈরীর কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করেছেন স্থানীয় কৃষক। পানি পানি নামার সাথে সাথে রোপন করা হবে আগাম ধানের চারা। বিখ্যাত আড়িয়াল বিলের ধানি জমিগুলো এরই মধ্যে শুরু হয়েছে পরিস্কার পরিচ্ছন্নতার কাজ।

বিস্তীণ আড়িয়াল বিলে বিভিন্ন স্থানে বীজতলা প্রস্থত ও জমি পরিস্কার পরিচ্ছন্নতাসহ অন্যান্য চাষাবাদে হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক মাঠে কাজ করছেন। উপজেলায় ১০ হাজার হেক্টর অধিক জমিতে বিভিন্ন জাতের ধানের চাষ করা হয়। এর মধ্যে আড়িয়াল বিলের শ্রীনগর অংশেই ৫ হাজার হেক্টর জমিতে বিভিন্ন জাতের আগাম ধান চাষ করা হয়ে থাকে।

সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, আড়িয়াল বিল এলাকার বিভিন্ন স্থানে আগাম ধান চাষের জন্য বীজতলা প্রস্থত করছেন। এ অঞ্চলে হাইব্রিড ২৯ ও ২৮ জাতের ধানের বীজতলা অনেকাংশে বেশী প্রস্থত করা হচ্ছে। অপরদিকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বিলের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য কৃষি শ্রমিককে ধানি জমিতে থাকা কচুরিপানা ও জঙ্গল পরিস্কারের কাজে ব্যস্ত সময় পাড় করতে দেখা গেছে।

লক্ষ্য করা যায়, আড়িয়াল বিল পাড় এলাকার আলমপুর, শ্রীধরপুর, বাড়ৈখালী, মদনখালী,গাদিঘাট, শ্যামসিদ্ধি, বালাশুর এলাকার নতুন বাজার, ছত্রভোগ, ষোলঘরে এক ফসলী ধানি জমিগুলোতে হাঁটু পানি ও কোমর পানি রয়েছে। এর মধ্যে মদনখালী এলাকায় কোন কোন জমিতে এরই মধ্যে হালচাষ শুরু করতে দেখা গেছে। এসব জমিতে স্থানীয়রা বীজতলা প্রস্থত ও আগাম সরিষার বীজ বপণ শুরু করেছেন।

স্থানীয়রা জানান, সিত্রাংয়ের প্রভাবে পানি বৃদ্ধির ফলে কিছুটা বিড়ম্বনার শিকার হচ্ছেন। এতে আড়িয়াল বিলসহ উপজেলার বিভিন্ন চকে জলাবদ্ধতার শঙ্কা করা হচ্ছে। তার পরেও বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে বীজতলা প্রস্থত ও জমি গোছগাছ করা হচ্ছে। তারা বলছেন, পৌষ মাসের প্রথম দিকে জমিতে ধানের চারা রোপণের কাজ পুরোদমে শুরু হবে। ডিজেলসহ অন্যান্য কৃষি উপকরণের দাম বৃদ্ধির কারণে অধিক খরচ করে ধান চাষ করা নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন।

তারা বলছেন, জমিতে প্রতিমণ ধান উৎপাদণে খরচ পড়বে হাজার টাকার ওপরে। মো. সাদেক মিয়া (৫০), মো. নাসির, রানা খানসহ বেশ কয়েকজন কৃষি শ্রমিক বলেন, দৈনিক ৬শ’ টাকা রোজে জমিতে কাজ করছেন। জমির মালিকরা তিন বেলা খাবার ও থাকার জন্য জায়গা দিচ্ছেন।

তারা জানান, বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে নেত্রকোনা, দিনাজপুর, রংপুর, কুরিগ্রাম, চাপাই নবাবগঞ্জ, সুনামগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার কৃষি শ্রমিক এ অঞ্চলে কাজ করতে আসছেন।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, স্থানীয় হাটবাজারে ২৯ জাতের ধানবীজের ১০ কেজির প্যাকেট ৫৪০-৫৫০ টাকা ও সমপরিমাণ ২৮ ধান বীজের প্যাকেট বিক্রি হচ্ছে ৪৬০-৬০০ টাকা। তবে এসব বীজ ধানের মানের দিকে দিয়ে দাম কমবেশী হতে পারে।

খোলা কাগজ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.