কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু: আগের মৌসুমে উৎপাদিত আলুর দাম কমে যাওয়ায় লোকসান হয়েছে কৃষকের। এরপরও চলতি মৌসুমে আলু রোপণে ব্যস্ত সময় কাটছে মুন্সীগঞ্জ জেলার কৃষকের। এখন হিমাগার থেকে বীজ নেওয়া, জমি পরিচর্যা ও রোপণের কাজ করছেন তাঁরা। তাঁদের ব্যস্ততা দেখে বোঝার উপায় নেই, আগের মৌসুমে ক্ষতির শিকার হয়েছেন। অন্য জেলা থেকে শ্রমিক এসে কাজ করছেন বিভিন্ন উপজেলায়। এবার জেলার ছয়টি উপজেলায় আগের মৌসুমের তুলনায় দুই হাজার হেক্টর কম জমিতে আলুর আবাদ হচ্ছে।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, গত বছর জেলায় ৩৭ হাজার ৯০০ হেক্টর জমিতে আলু আবাদ করা হয়েছে। এ বছর লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৩৫ হাজার ৭৯৬ হেক্টর। লক্ষ্যমাত্রা কমেছে ২ হাজার ১০৪ হেক্টর। উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ১০ লাখ ৯৭ হাজার ১৪৭ টন আলু।
টঙ্গীবাড়ির ধামারন গ্রামের গৃহবধূ জুলেখা বেগম জানান, এবার তাঁরা ৬০ শতাংশ জমিতে আলু আবাদ করছেন। কৃষক স্বামীকে সাহায্য করতে নিজ বাড়ির উঠানে আলুবীজ কেটে দিচ্ছেন। প্রতিবেশী গৃহবধূরাও মজুরির বিনিময়ে এ কাজে যুক্ত হয়েছেন।
সিরাজদীখান উপজেলার বালুরচর গ্রামের কৃষক আলী মিয়া বলেন, বালুরচর ইউনিয়ন উঁচু হওয়ায় তাঁরা আগাম আলু আবাদ করেন। এ বছর ৬০ শতাংশ জমিতে আলু চাষ করেছেন তিনি।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জে আলু রোপণের কাজ করছেন দেশের বিভিন্ন জেলার লক্ষাধিক পুরুষ ও নারী শ্রমিক। তাঁরা দৈনিক মজুরির চুক্তিতে শ্রম দিচ্ছেন। এতে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। ডিসেম্বরজুড়ে আলু আবাদে ব্যস্ত থাকবেন কৃষক। সহযোগিতা করছেন গৃহিণীরাও।
কৃষকরা জানিয়েছেন, রংপুর, দিনাজপুর, গাইবান্ধা, নীলফামারী, ময়মনসিংহ, কুড়িগ্রামসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলার শ্রমিকরা আলু রোপণের কাজে ব্যস্ত। রংপুর থেকে আসা শ্রমিক আব্বাস মিয়া জানান, কোথাও চুক্তি অনুযায়ী আবার কোথাও দিনব্যাপী মজুরিতে আলু রোপণের কাজ করছেন। ন্যায্য মজুরি পাওয়ায় তাঁরা খুশি।
মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক মো. খোরশেদ আলম বলেন, লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী জমিতে আবাদ হলে ১০ লাখ ৯৭ হাজার টন আলু উৎপাদিত হবে। শীতের শুরুতেই সদর, সিরাজদীখান, লৌহজং, টঙ্গীবাড়ি, গজারিয়া ও শ্রীনগরের বিস্তীর্ণ এলাকায় আলু আবাদ হচ্ছে। বেশি আবাদ হচ্ছে জেলা সদরে।
সমকাল
Leave a Reply