ঝুঁকিপূর্ণ দুই বাঁশের সাঁকো দিয়ে উঠতে হয় ৭০ লাখ টাকার সেতুতে

মুন্সীগঞ্জের লৌহজং উপজেলার পূর্ব বুড়দিয়া পশ্চিমপাড়া জামে মসজিদের সংযোগ সড়কের খালের ওপর নির্মিত সেতুতে উঠতে স্থানীয়দের দুই পাশের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয়। এতে যেকোনো সময় ঘটতে পারে দুর্ঘটনা।

জানা গেছে, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের অধীনে ২০২১-২২ অর্থবছরে ৭০ লাখ ১ হাজার ৭৩৩ টাকা ব্যয়ে ১৪ মিটার দৈর্ঘ্যের সেতুটি নির্মাণ করে মের্সাস রেজাউল এন্টারপ্রাইজ। সেতুর নির্মাণকাজ ৬ মাস আগে শেষ হলেও সেতুর দুই পাশে অ্যাপ্রোচ সড়কের মাটি ফেলা হয়নি। ফলে সেতুতে উঠতে গেলে স্থানীয়দের ঝুঁকিপূর্ণ বাঁশের সাঁকো ব্যবহার করতে হয়।

সরেজমিনে দেখা যায়, লৌহজং উপজেলার মাওয়া থেকে সদর উপজেলার মুক্তারপুর সংযোগ সড়কের সঙ্গে উপজেলার গাওদিয়া ইউনিয়নের পূর্ব বুড়দিয়া ও বন সামন্ত গ্রাম থেকে একটি রাস্তা মিলিত হয়েছে। মূল রাস্তায় মিলিত হওয়ার জায়গায় রাস্তার দক্ষিণ প্রান্তের পূর্ব বুড়দিয়া গ্রামের খালের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। সেতুর দক্ষিণ প্রান্তের পূর্ব বুড়দিয়া ও বন সামন্ত গ্রামের মানুষের যাতায়াতের প্রধান সড়কের ওপর নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। কিন্তু দুই পাশে মাটি দিয়ে ভরাট না করায় সেতুটি ওই দুটি গ্রামসহ আশপাশের মানুষের কোনো কাজেই আসছে না।

পূর্ব বুড়দিয়া গ্রামের মো. নিলয় হালদার বলেন, আমাদের গ্রাম থেকে বের হওয়ার একমাত্র রাস্তার ওপরে নির্মাণ করা হয়েছে সেতুটি। ৪-৫ মাস আগে ঠিকাদার সেতুর কাজ শেষ করেছে। কিন্তু সেতুর গোড়ার দুই পাশে কোনো মাটি দেয়নি। আমরা গত বছর বর্ষার সময় আমাদের গ্রাম থেকে ২-৩ কিলোমিটার ঘুরে প্রধান সড়ক দিয়ে যাতায়াত করেছি। সেতুর গোড়ায় মাটি না থাকায় আমাদের কোনো কাজেই আসছে না।

একই গ্রামের ইমন ভূঁইয়া বলেন, সেতু হওয়ার পর ভাবছিলাম আমাদের দুর্ভোগ শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু ঠিকাদার সেতু নির্মাণ করে লাপাত্তা। এখন দেখছি সেতু হওয়ার চেয়ে না হওয়ায় ভালো ছিল।

স্থানীয় কৃষক আলমগীর হোসেন বলেন, আমি কৃষিকাজ ও গরু লালন-পালন করি। গরুর জন্য আমাকে প্রতিদিন ঘাস সংগ্রহ করতে হয়। ঘাস নিয়ে সেতুর ওপর দিয়ে পারাপার হতে হয়। কিন্তু সেতুর কাজ শেষ করলেও সেতুর গোড়ায় মাটি দেয়নি ঠিকাদার। আমরা সেতুর দুই গোড়ায় বাঁশ দিয়ে সাঁকো নির্মাণ করছি। কিন্তু সাঁকো দুটি অনেক উঁচু ও ঝুঁকিপূর্ণ। ঘাসের বোঝা মাথায় নিয়ে পার হতে খুব কষ্ট হয়। কবে যে পড়ে গিয়ে ব্যথা পাই সেই ভয়ে থাকি।

গাওদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, আমি এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করছি। তারা বলছে, দ্রুত সেতুর গোড়া ভরাট করে দেবে।

লৌহজং উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মোসা. সাজেদা সরকার বলেন, আমদের তত্ত্বাবধায়নে সেতুর কাজ হচ্ছে। এখনো সেতুর কাজ চলমান রয়েছে। কাজটি দ্রুত শেষ করার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে তাগিদ দেওয়া হবে।

ব.ম শামীম/এসপি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.