মুন্সিগঞ্জে বিএনপির আরও ১১ নেতা–কর্মী গ্রেপ্তার

ঢাকা বিভাগীয় গণসমাবেশকে কেন্দ্র করে বিএনপির নেতা–কর্মীদের গ্রেপ্তার অব্যাহত রয়েছে। গতকাল সোমবার রাত থেকে আজ মঙ্গলবার সকাল পর্যন্ত মুন্সিগঞ্জ সদর, শ্রীনগর, সিরাজদিখান ও টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বিভিন্ন এলাকা থেকে আরও ১১ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তাঁদের বিরুদ্ধে পুলিশ ও ক্ষমতাসীন দলীয় নেতা–কর্মীদের করা মামলায় জনমনে আতঙ্ক সৃষ্টি ও ভাঙচুরের অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব মামলায় গত ৪ দিনে মুন্সিগঞ্জে বিএনপির ৩৩ জন নেতা–কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।

তবে দলের স্থানীয় নেতাদের দাবি, গ্রেপ্তারের সংখ্যা আরও বেশি। তাঁরা বলছেন, ১০ ডিসেম্বর ঢাকায় বিএনপির গণসমাবেশ ভন্ডুল করার লক্ষ্যে নেতা-কর্মীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি করতে ক্ষমতাসীন দল পুলিশকে ব্যবহার করছে। বিএনপির নেতা-কর্মীদের মিথ্যা মামলায় গ্রেপ্তার ও হয়রানি করা হচ্ছে।

মুন্সিগঞ্জ শহর বিএনপির আহ্বায়ক এ কে এম ইরাদত মানু প্রথম আলোকে বলেন, দেশের পরিস্থিতি খুব খারাপ। ১৯৭১ সালের চেয়েও ভয়াবহ। সে সময় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী মানুষকে পথ, ঘাট, বাড়ি থেকে যেভাবে ধরে নিয়ে যেত, বর্তমান সরকার পুলিশকে ব্যবহার করে সেভাবেই হামলা, মামলা, ধরপাকড়, হয়রানি করছে। বিরোধী মতের মানুষকে দমন–পীড়ন করে যাচ্ছে। চায়ের দোকান, মসজিদ, ঘুমন্ত মানুষকে ধরে নিয়ে যাচ্ছে।

নতুন করে যাঁরা গ্রেপ্তার হয়েছেন, তাঁরা হলেন মুন্সিগঞ্জ সদর উপজেলার বজ্রযোগিনী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নজরুল ইসলাম, মুন্সিগঞ্জ পৌরসভার ৪ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সভাপতি কাইয়ুম মৃধা ও সাধারণ সম্পাদক তপন মোল্লা, টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ধামারন ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপি সভাপতি জামাল মোল্লা। এ ছাড়া সিরাজদিখান থানা এলাকার বয়রাগাদি ও ইছাপুরা এলাকা থেকে তিনজন এবং শ্রীনগর থানা এলাকা থেকে চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তাৎক্ষণিকভাবে তাঁদের নাম জানা যায়নি। সংশ্লিষ্ট থানা সূত্রে এসব তথ্য জানা যায়।

কোনো নিরপরাধ মানুষকে মামলা, গ্রেপ্তার, হয়রানি করা হচ্ছে না দাবি করে মুন্সিগঞ্জের পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মাহফুজুর রহমান আল-মামুন প্রথম আলোকে বলেন, যাঁদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাঁদের বিরুদ্ধে বিভিন্ন থানায় বিস্ফোরণ, ভাঙচুর ও মারধরের ঘটনায় নিয়মিত মামলা রয়েছে। কোনো নিরপরাধ মানুষকে হয়রানি করা হচ্ছে না। আটক করে কারও নামে মামলা দেওয়া হয়নি, যাঁদের নামে মামলা রয়েছে, তাঁদেরই গ্রেপ্তার করা হচ্ছে। শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার্থে অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারে অভিযান চলমান থাকবে।

স্থানীয় বিএনপির নেতা–কর্মীরা বলছেন, ককটেল বিস্ফোরণ, ভাঙচুর ও নাশকতার অভিযোগে কয়েক দিনে জেলার ৬টি উপজেলায় প্রশাসন ও আওয়ামী লীগ নাটক সাজিয়ে বিএনপির ৫০০-৬০০ নেতা-কর্মীর নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হয়েছে। গ্রেপ্তার-মামলায় দলের নেতা-কর্মীরা আতঙ্কে আছেন। বাড়ি বাড়ি অভিযান চালাচ্ছে পুলিশ। গ্রেপ্তার এড়াতে দলীয় নেতা-কর্মীরা আত্মগোপনে রয়েছেন।

প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.