টেন্ডার ছাড়া সরকারি ভবন ভেঙ্গে বিক্রির অভিযোগ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে

মুন্সীগঞ্জের টঙ্গীবাড়িতে নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের পরিত্যক্ত ভবন ভেঙ্গে বিক্রি করে টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছে এক সরকারি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।

উপজেলার প্রাণী সম্পদ অধিদপ্তর কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম ভবনটি কোনো টেন্ডার ছাড়াই বিক্রি করে টাকা আত্মসাৎ করেছেন বলে জানা গেছে।

অভিযোগ সূত্র জানা যায়, ডা. মো. নজরুল ইসলাম নিজেকে মুন্সীগঞ্জ জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতার আত্মীয় পরিচয় দিয়ে থাকেন। ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে কোনো টেন্ডার ছাড়াই উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের পুরাতন একটি ভবন ভেঙ্গে মালামাল বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। সরকারি সম্পত্তি নিলাম ছাড়া বিক্রি করায় ওই কর্মকর্তার বিচার চাইছে স্থানীয়রা।

জানা গেছে, উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের প্রবেশ পথে পুরাতন প্রাণী সম্পদ কার্যালয়ের দুটি পাকা ভবন পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে ছিল বেশ কয়েক বছর যাবৎ। ওই পুরাতন ভবনের পাশেই নতুন একটি ভবন নির্মাণ করা হয়েছে। সেই নতুন ভবনেই চলছে বর্তমান কার্যক্রম। পড়ে থাকা দুইটি ভবনের মধ্যে নিলাম বা অনুমতি ছাড়াই প্রায় ৩ মাস আগে ভাঙার কাজ করে শুরু করেন প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. মো. নজরুল ইসলাম দেওয়ান। ইতোমধ্যে সর্ম্পূণ ভবনটি ভেঙ্গে মালামাল বিক্রি করে দিয়েছেন তিনি। বিক্রির টাকাও জমা দেননি সরকারি কোষাগারে।

রোববার (১১ ডিসেম্বর) বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলা প্রাণী সম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালের পুরাতন দুটি ভবনের মধ্যে একটি ভবন ভেঙ্গে সম্পূর্ণ মালামাল বিক্রি করে দেওয়া হয়েছে। যেখানে কিছুদিন আগেও সরকারি ভবন ছিল সেখানে এখোন কয়েকটি গাড়ি পার্কিং করে রাখা হয়েছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত নজরুল ইসলাম দেওয়ান জানান, তিনি জেলা আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী কয়েকজন নেতাকে জানিয়ে ভবন ভেঙ্গে ফেলেছেন। পুরাতন পরিত্যক্ত ভবনটিতে মাদকের আখড়া ছিল। এছাড়া ওই ভবনে অনেক বিষাক্ত সাপ বসবাস করতো। অপরিষ্কার নোংরা অবস্থায় পরে থাকায় উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলাপ করে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা. কুমোত রঞ্জন মিত্রকে জানিয়ে ভবনটি ভেঙ্গে ফেলা হয়েছে।

এ ব্যপারে জানতে জেলা প্রাণী সম্পদ কর্মকর্তা ডা: কুমোত রঞ্জন মিত্রের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তা বন্ধ পাওয়া যায়।

উপজেলা নিলাম কমিটি সদস্য সচিব উপজেলা প্রকৌশলী শাহ মোয়াজ্জেম হোসেন বলেন, ওই ভবনের কোনো নিলাম হয়নি।

পরিষদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান হাজী নাহিদ খান জানান, সরকারি নিয়মনীতি মেনে ভবন ভাঙ্গা প্রয়োজন ছিল। যদি তিনি নিয়ম না মেনে থাকেন তাহলে প্রশাসন বিষয়টি দেখবে।

এ ব্যাপারে টঙ্গিবাড়ী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুহাম্মদ রাসেদুজ্জামান ঢাকা পোস্টকে বলেন, বিষয়টি সম্পর্কে আজকেই আমি জানতে পেরেছি। সে কীভাবে ভবন ভাঙছে তার সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি দেখব।

ব.ম শামীম/আরকে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.