শীতকালীন সবজিতে দ্বিগুণ লাভ

কাজী সাব্বির আহমেদ দীপু: ২০০ শতাংশ জমিতে এবার শীতকালীন সবজি চাষ করেছেন রাসেল ফরাজী। তাঁর জমিতে রয়েছে শিম, লাউ, ফুলকপি, চালকুমড়া, মিষ্টি কুমড়া ও টমেটো। স্থানীয় বাজারে এবার ভালো দামেই বিক্রি করছেন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার মহাকালী ইউনিয়নের উত্তর মহাকালী গ্রামের এ চাষি। পাশাপাশি পাইকারদের কাছেও বিক্রি করছেন।

পুরো জেলায় চলতি মৌসুমে শীতকালীন সবজির ভালো ফলন হয়েছে। বাজারে চাহিদা থাকায় দামও বেশ চড়া। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে উৎপাদিত সবজি ঢাকা-নারায়ণগঞ্জসহ আশপাশের জেলার বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে। ফলে হাসি ফুটেছে রাসেলের মতো কৃষকদের।

চরকেওয়ার ইউনিয়নের দক্ষিণ চরমশুরা গ্রামের চাষি জুলহাস দেওয়ান বলেন, এবার ১২ হাজার বাঁধাকপি ও তিন হাজার ফুলকপি চাষ করেছেন। প্রতিটি কপির জন্য ৮-১০ টাকা খরচ হয়েছে। পাইকারি দরে প্রতিটি বিক্রি করছেন ২২-২৫ টাকায়। ফলনও হয়েছে ভালো। লাভ হয়েছে খরচের দ্বিগুণ।

জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, এবার লাউ, মিষ্টি কুমড়া, বাঁধাকপি, ফুলকপি, বেগুন, টমেটো, শিম, মুলা, করলা, লালশাক ও বেগুন চাষ হয়েছে বেশি। কিছু জমিতে ধনিয়াপাতা, গাজরসহ অন্যান্য সবজিও আবাদ হয়েছে। এসব বেশি উৎপাদিত হচ্ছে মুন্সীগঞ্জ সদর, টঙ্গিবাড়ী ও সিরাজদীখান উপজেলায়।

সরেজমিন মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার রামপাল, বজ্রযোগিনী, দক্ষিণ চরমশুরা, টঙ্গিবাড়ীর ধীপুর, সিরাজদীখানের কয়েকটি গ্রামে দেখা গেছে, কৃষকদের কর্মব্যস্ত সময় কাটছে। কোনো কোনো জমিতে পরিচর্যা করছেন। কেউ আবার সবজি তোলায় ব্যস্ত। তাঁরা বলছেন, গত কয়েক মৌসুমে আলু চাষ করে লোকসান গুনেছেন। ফলে এবার সবজি চাষে ঝুঁকেছেন। শীতকালীন সবজি বিক্রি করে প্রায় সবারই দ্বিগুণ লাভ হয়েছে।

সদর উপজেলার রামপাল ইউনিয়নের রামসিং এলাকার শাহ আলম বলেন, ‘৩৫ শতক জমিতে দেশীয় জাতের শিম চাষ করেছি। সব মিলিয়ে খরচ হয়েছে ৫০ হাজার টাকা। গত দেড় মাসে শিম বিক্রি করে ইতোমধ্যে ৬০ হাজার টাকা আয় করেছি।’ আরও তিন মাস শিম বিক্রির আশা করছেন তিনি।

রামপাল গ্রামের সালাম ফরাজী বলেন, এবার ২৮৮ শতাংশ জমিতে মরিচ, বেগুন, শিম, ফুলকপি, লাউ, লালশাক ও টমেটো বুনেছেন। এতে সাড়ে ৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে। মৌসুম শেষে বিপুল অঙ্কের লাভের আশা করছেন।

টঙ্গিবাড়ী উপজেলার ধীপুর এলাকায় বেশি চাষ হয়েছে লাউ। এ ছাড়া শ্রীনগর উপজেলার আড়িয়ল বিলে মিষ্টি কুমড়া ও সিরাজদীখান উপজেলায় করলার ফলন হয়েছে ভালো।

মুন্সীগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক খুরশীদ আলম বলেন, এবার জেলায় যে লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন, তা ছাড়িয়ে যাওয়ার আশা করছেন। জেলার ৬ উপজেলায় ৪ হাজার ১০০ হেক্টর জমিতে চলতি মৌসুমে সবজি আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল অধিদপ্তরের। আর উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রা ১০ হাজার ৭০০ টন।

সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.