মুন্সীগঞ্জে অধিগ্রহণের নামে ভূমি দখলের অভিযোগ

মুন্সীগঞ্জের সদর উপজেলার চরমশুরা এলাকায় প্রায় ৫০ একর ভূমি দখলচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এর প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন কয়েকজন বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ দেড় শতাধিক কৃষক। যদিও ‘অভিযোগ বানোয়াট’ দাবি করেছেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) স্নেহাশীষ। তিনি বলেছেন, জমি পরিমাপের কাজ চলছে, জোরপূর্বক দখল করে সীমানা দেওয়া হয়নি।

আজ শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে মুন্সীগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাংবাদিক শফি উদ্দিন আহমেদ মিলনায়তনে এ সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন চরকেওয়ার ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক সোহাগ ভুঁইয়া।

সোহাগ ভুঁইয়া লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন, মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার চরকেওয়ার ইউনিয়নের চরমশুরা মৌজার ম্যাপের ৫ নং শিটের ১২৩ একর সম্পত্তি অধিগ্রহণ হয়েছে। এরপরও মুন্সীগঞ্জে জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ অধিগ্রহণকৃত সম্পত্তির বাইরের দেড় শতাধিক কৃষকের মালিকাধীন প্রায় ৫০ একর ভূমি দখলের চেষ্টা করছে। চরমশুরা মৌজার ম্যাপের ০২ নং শিটের ব্যক্তিমালিকানাধীন ওই ভূমির মধ্যে ৯ বীর মুক্তিযোদ্ধার জমিও রয়েছে।

সোহাগ ভুঁইয়া আরও বলেন, ইলেকট্রিসিটি কোম্পানি অব বাংলাদেশ লিমিটেডের মুন্সীগঞ্জ জেলায় ৩০০ থেকে ৪০০ মেগাওয়াট সুপার ক্রিটিক্যাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র স্থাপনা প্রকল্পের কাজ চলছে। এই প্রকল্পের আওতায় চরমশুরা মৌজার ১২৩ একর জায়গা অধিগ্রহণ করা হয়।

পরে গত ২১ ডিসেম্বর মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) স্নেহাশীষ দাস ও ভূমি অধিগ্রহণ প্রধান কর্মকর্তা রিগ্যান চকমা এবং ভূমি অধিগ্রহণ শাখার সার্ভেয়ার হুমায়ন কবীরসহ কর্মচারীরা অধিগ্রহণ করা জায়গার বাইরের সম্পত্তি চরমশুরা মৌজার ম্যাপের ২ নং শিটের ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে সীমানা পিলার দেওয়ার চেষ্টা করেন। এ সময় গ্রামবাসী প্রশাসনের কর্মকর্তাদের বাধা দিতে গেলে তারা গ্রামবাসীকে ভয়ভীতি দেখিয়ে কারাগারে ঢুকিয়ে দেবেন বলে হুমকি দেন।

সংবাদ সম্মেলনে সোহাগ ভূঁইয়া তার লিখিত বক্তব্যে গ্রামবাসীকে উন্নয়নের স্বার্থে অধিগ্রহণ করা চরমশুরা মৌজার ২ নং শিটের ভূমির ক্ষতিপূরণ দেওয়া দাবি করেন।

এ সময় সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. ছায়েব আলী সিকদার, মো. মনির হোনেসন মাহমুদ, আবুল খায়ের পাইক, কৃষক মিরাজুল ইসলাম, হারেছ পাইক, মো. ইদ্রিস আলী, মো. শফি মিজি, আব্দুল রহমান, মো. জালাল বেপারী, আব্দুল আউয়াল, নুর হোসেন প্রমুখ।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে মুন্সীগঞ্জের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (রাজস্ব) স্নেহাশীষ বলেন, ‘মামলা হুমকি-ধমকির বিষয়টি একেবারে বানোয়াট। মূলত বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ সংস্থা এবং স্থানীয়দের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আমরা জমি মাপতে গিয়েছিলাম। সেখানে জমি পরিমাপ করা হয়েছে। কারও জমি জোরপূর্বক দখল করে সীমানা দেওয়া হয়নি। এরপর আবারও ডিজিটাল পদ্ধতিতে জমি মাপার কাজ করবে বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণকারী সংস্থা।’

এনটিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.