শ্রীনগরে নিষিদ্ধ চায়না দোয়াইর কারখানায় শিশুশ্রম

শ্রীনগর উপজেলার বাঘড়া ইউনিয়নের ছত্রভোগ গ্রামে গড়ে উঠেছে চায়না দোয়াইর (ম্যাজিক চাই) তৈরির কারখানা। নিষিদ্ধ জাল তৈরির কাজে ব্যবহার করা শিশু শ্রমিক। নিষিদ্ধ এসব ফাঁদ এ অঞ্চল থেকে ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন স্থানে। ছত্রভোগের প্রভাবশালী দ্বিন ইসলাম ও আব্দুল জলিলের নেতৃত্বে ওই কারখানায় এসব নিষিদ্ধ চাই বানানোর অভিযোগ উঠেছে।

এছাড়াও উপজেলার রাঢ়িখালের বালাশুর, নতুন বাজার, ভাগ্যকুলের কামারগাঁও পাকাব্রিজ, মান্দ্রা এলাকায় বেশকিছু চায়না দোয়াইরের কারখানা গড়ে উঠেছে। এ অঞ্চলের বিভিন্ন খাল, বিল, জলাশয় ও নদী নালায় নিষিদ্ধ ফাঁদটির ব্যবহারে মাছের প্রজনন ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ হুমকির মুখে পড়েছে।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাঘড়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ছত্রভোগের ইট ভাটার পাশে একটি বড় টিনের শেডে তৈরি করা হচ্ছে চায়না দোয়াইর। এ সময় বেশকিছু শিশুকে জাল তৈরির কাজ করতে দেখা গেছে। সাংবাদিকদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিশুসহ অন্যান্য শ্রমিকরা কারখানার পিছনের দরজা দিয়ে পালিয়ে যায়। লক্ষ্য করা যায়, কারখানায় নিষিদ্ধ জাল তৈরির বিপুল পরিমাণ উপকরণ রাখা হয়েছে। নানা সাইজের চাই প্রস্তুত করে বস্তাবন্দি করা হচ্ছে।

বাঘড়া ইউপি চেয়ারম্যান আবু আল নাসের তানজিল জানান, আমি উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা ও উপজেলা পরিষদের মাসিক সভায় কারখানাটির বিষয়ে উপস্থাপন করেছি। সংশ্লিষ্টগণ যদি ব্যবস্থা না নেন আমরা এলাকায় কি করতে পারি। চায়না দোয়াইরের ব্যবহারে মাছের প্রজনন হুমকির মুখে পড়েছে। খাল-বিল, নদী-নালা ও পুকুরে মাছের পরিমান অনেকাংশে কমে গেছে।

অভিযুক্ত দ্বিন ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি দম্ভ করে বলেন, চায়না দোয়াইর নিষিদ্ধ না বৈধ আমি জানি না। দেশের আইন কানুন কিছু বুঝি না। আপনাদের যা মন চায় লেখেন।

আব্দুল জলিলের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি আগে কারখানায় যাওয়া আসা করতাম। এখন ওই খানে যাওয়া হয় না বলে তিনি এড়িয়ে যান।

শ্রীনগর সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সমীর কুমার বসাক এ বিষয়ে বলেন, ছত্রভোগের কারখানাটিতে একদিন গিয়েছিলাম। গিয়ে দেখতে পাই কারখানাটি বন্ধ। সুনিদিষ্ট তথ্য পেলে তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, গত ৬ সেপ্টেম্বর (শুক্রবার) তারিখে শ্রীনগর উপজেলা পরিষদে পদ্মা সেতু বন্যপ্রাণী অভয়ারণ্য বাস্তাবায়ন কমিটির জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণের আওতায় সচেতনতামূলক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এক কথা প্রসঙ্গে উপজেলায় গড়ে ওঠা এসব চায়ানা দোয়াইর কারখানার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে আলোচনা সভায় উঠে আসে। এ সময় চায়না দোয়াইর উৎপাদন ও নিষিদ্ধ জাল ব্যবহার বন্ধের তাগিদ দেন সংশ্লিষ্টরা।

নিউজজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.