শহর ছাড়লো জেসির পরিবার, ১১ দিনেও অধরা প্রধান আসামি

মুন্সিগঞ্জের কোটগাঁও এলাকায় এক ব্যবসায়ী নেতার বাড়িতে ডেকে নিয়ে হত্যাকাণ্ডের শিকার স্কুলছাত্রী জেসির পরিবার কোটগাঁওয়ের বাসা ছেড়ে চলে গেছে। জেলা সদরের মহাকালী ইউনিয়নের কেওয়ার গ্রামে ফিরে গেছেন তারা।

রোববার (১৫ জানুয়ারি) জেসির ভাই জিদান বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

ভুক্তভোগী পরিবার সূত্র জানায়, শনিবার (১৪ জানুয়ারি) সকালে কোটগাঁওয়ের বাসা থেকে আববাসপত্র নিয়ে দুই ছেলে জিদান, হান্নান ও জিদানের স্ত্রী সিনথিয়াকে নিয়ে নিজ গ্রাম কেওয়ারে ফিরে যান জেসির মা মিনা বেগম।

জেসির মা মিনা বেগম বলেন, ‘বিশেষ করে জেসির লেখাপড়ার জন্য আমরা মুন্সিগঞ্জে বসবাস করেছি। জেসির বাবা সৌদি আরব থেকে বলেছেন, যেখানে মেয়ের লেখাপড়ার জন্য শহরে এসেছিলাম সেখানে ঘাতকরা যখন জেসিকে বাঁচতে দিলো না তখন এখানে থেকে আর কী হবে? তাই নিজের বাড়ি কেওয়ার গ্রামের স্বজনদের কাছে সন্তানদের পাঠিয়ে দিয়েছি।’

গত ৩ জানুয়ারি সন্ধ্যায় শহরের কোটগাঁও এলাকায় প্রেমঘটিত বিরোধের জেরে স্কুলছাত্রী জেসি মাহমুদকে বাড়িতে ডেকে নিয়ে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে আহত করেন বন্ধু বিজয় রহমান ও তার প্রেমিকা আবিদা। পরে ছাদ থেকে পড়ে যাওয়ার ঘটনা সাজান। হাসপাতালে নেওয়ার পথে একইদিন রাত ৮টায় মৃত্যু হয় জেসির। এ ঘটনায় হত্যা মামলা করে নিহতের পরিবার। অভিযুক্ত আবিদা আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠায় পুলিশ। পরে ১৬৪ ধারায় হত্যাকাণ্ডের কথা স্বীকার করে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি।

গ্রেফতার আদিবা স্থানীয় পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদ হাসানের মেয়ে।

এদিকে আদিবার স্বীকারোক্তিতে হত্যার রহস্য উদ্ঘাটন হলেও ঘটনার ১১ দিনেও মূলহোতা বিজয় রহমান বিজুকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। পলাতক বিজয় মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আরিফুর রহমানের ছেলে।

নিহত জেসির বাবা সেলিম মাহমুদ বলেন, অমানবিক নির্যাতন করে আমার আদরের মেয়েটিকে হত্যা করা হয়েছে। প্রধান খুনি বিজুকে গ্রফতারসহ হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাই।

এ বিষয়ে মুন্সিগঞ্জ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তারিকুজ্জামান বলেন, জেসি হত্যা মামলার প্রধান আসামি বিজয়কে গ্রেফতার করতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তাকে গ্রফতারে ঢাকার একাধিক স্থানে, টঙ্গীবাড়ী থানা এলাকায় ও তার কোটগাঁওয়ের বাড়িতে অভিযান চালানো হয়েছে। আশা করি খুব শিগগির তাকে ধরতে পারবো।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জিকেএস

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.