প্রকাশ্যে ঘুরছেন যুবলীগ নেতা শিপনসহ অভিযুক্তরা, মামলা

মুন্সীগঞ্জ সদরের মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন যুবদল সভাপতি জিয়া সরদারকে কুপিয়ে আহত করার ঘটনার দু’দিন পর সদর থানায় মামলা হয়েছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় জিয়ার স্ত্রী সুমী রহমান ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি শিপন পাটোয়ারীসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ করে সদর থানায় মামলা করেন। তবে অভিযুক্ত যুবলীগ নেতা শিপন ও তাঁর সহযোগীদের এখনও গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাঁরা এখনও জেলার চরাঞ্চলে প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়াচ্ছেন বলে জানিয়েছেন একাধিক প্রত্যক্ষদর্শী।

তাঁদের অভিযোগ, পুলিশ শিপন ও তাঁর সহযোগীদের দেখেও না দেখার ভান করছে। এর আগেও শিপনের বিরুদ্ধে একাধিক সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ থাকলেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা না নেওয়ায় তিনি আরও বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন।

স্থানীয়দের অভিযোগ, ইউনিয়নের আমঘাটা এলাকার খবির পাটোয়ারীর ছেলে তিনি। তাঁর বড় ভাই রিপন হোসেন পাটোয়ারী মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক। মূলত বড় ভাইয়ের প্রভাব ও যুবলীগের পদ-পদবি ব্যবহার করেই শিপন এলাকায় প্রভাব বিস্তার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড চালাচ্ছেন। তবে সব অভিযোগ মিথ্যা, বানোয়াট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করে শিপন বলেন, ইউপি নির্বাচন নিয়ে বিরোধের কারণে অন্য কেউ যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম করেছে। এখন ওই ঘটনায় তাঁকে জড়ানোর চেষ্টায় মাঠে নেমেছেন তাঁদের প্রতিপক্ষ সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনা।

এ বিষয়ে আওয়ামী লীগ নেত্রী ও সাবেক চেয়ারম্যান মহসিনা হক কল্পনার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ইউপি নির্বাচনের পর থেকেই বর্তমান চেয়ারম্যান রিপন পাটোয়ারীর ভাই শিপনের সন্ত্রাসী বাহিনীর হাতে তাঁর অনুসারী ও সমর্থকরা নির্যাতিত। শিপন এলাকায় একের পর এক সন্ত্রাসী কার্যক্রম চালাচ্ছে। সর্বশেষ গত মঙ্গলবার হামলার শিকার হয়েছেন যুবদল নেতা জিয়া সরদার।

ভাইয়ের কর্মকাণ্ডের বিষয়ে মোল্লাকান্দি ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রিপন পাটোয়ারী বলেন, যুবদল নেতা জিয়ার সঙ্গে আমার কোনো বিরোধ নেই। কে বা কারা তাঁকে কুপিয়েছে জানি না। আমার ভাই এর সঙ্গে জড়িত না।

মুন্সীগঞ্জ সদর থানার এসআই মো. ফরিদ জানান, ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম করার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তারে পুলিশ অভিযান চালাচ্ছে। মামলা হয়েছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িতরা আত্মগোপনে থাকায় গ্রেপ্তারে বিলম্ব হচ্ছে। অপরাধী যেই হোক, পুলিশ তাকে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসবে।

ইউপি নির্বাচন নিয়ে পূর্ববিরোধের জেরে মঙ্গলবার বিকেলে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার বেশনাল এলাকা থেকে ডিবি পুলিশ পরিচয় দিয়ে যুবদল নেতা জিয়াকে মোল্লাকান্দি ইউনিয়নের আমঘাটা গ্রামে নিয়ে যায় একদল লোক। সেখানে জিয়াকে পায়ে ও শরীরের বিভিন্ন স্থানে কুপিয়ে আহত করে ফেলে যায় তারা।

খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় জিয়াকে উদ্ধার করে মুন্সীগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। অবস্থার অবনতি হলে পরে তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। সেখানে গত বুধবার জিয়ার হাতে ও পায়ে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। বর্তমানে জিয়া সেখানে চিকিৎসাধীন বলে জানিয়েছেন তাঁর ভাই সাইফুল সরদার।

সমকাল

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.