চলাচলের সড়ক বন্ধ না করার দাবিতে ছয় গ্রামের বাসিন্দাদের মানববন্ধন

মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার তেতৈতলা-আবদুল্লাহপুর সড়ক দিয়ে ছয় গ্রামের মানুষ ও যানবাহন চলাচল করে। সড়কটি বন্ধের পাঁয়তারা করা হচ্ছে অভিযোগ করে সেটি খোলা রাখার দাবিতে মানববন্ধন করেছেন স্থানীয় লোকজন।

সোমবার দুপুরে উপজেলার তেতৈতলা এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়। এতে ছয় গ্রামের ৫০০ থেকে ৬০০ নারী-পুরুষ অংশ নেন।

মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘এটি আগে কাঁচা সড়ক ছিল। কয়েক বছর আগে আব্দুল মোমেন রেডিমিক্স কোম্পানি ওই জমি কিনে নেয়। এরপর ওই সড়কের মুখে গেট (ফটক) নির্মাণ করা হয়। তবে মানুষজন ও যানবাহনের চলাচলের জন্য তখনো গেটটি খোলা রাখা হতো। চার থেকে পাঁচ মাস আগে প্রতিষ্ঠানটি গেট আটকে দেয়। এতে আমাদের যাতায়াত বন্ধ হয়ে যায়। কয়েক দিন আগে আমরা গেট কেটে যাতায়াত শুরু করি। এখন আবার গেটটি বন্ধের পাঁয়তারা করা হচ্ছে। আমরা চাই, এ গেট যেন সব সময় খোলা থাকে।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে গজারিয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) জিয়াউল হক প্রথম আলোকে বলেন, এ সড়ক দিয়ে অনেক আগে থেকে লোকজন যাতায়াত করে আসছে। সড়কটি যদি সরকারি প্রকল্পের মাধ্যমে হয়ে থাকে, তাহলে কোনোভাবেই বন্ধ করা যাবে না। যদি প্রতিষ্ঠানের সড়ক হয়, সে ক্ষেত্রে সরেজমিনে গিয়ে মানুষের চলাচলের বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হবে।

স্থানীয় একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, তেতৈতলা-আবদুল্লাহপুর সড়ক দিয়ে আবদুল্লাহপুর, আড়ালিয়া, মুদারকান্দি, বড় রায়পাড়া, ছোট রায়পাড়া ও তেতৈইতলা গ্রামের ৮-১০ হাজার মানুষ নিয়মিত যাতায়াত করে আসছে। গ্রামগুলোর মানুষ মেঘনা সেতু হয়ে রাজধানীর ঢাকায় আসা-যাওয়ার ক্ষেত্রে এ সড়ক ব্যবহার করে থাকে। বড় রায়পাড়া উচ্চমাধ্যমিক বিদ্যালয়, বড় রায়পাড়া ইসলামিয়া মাদরাসা, সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ইউপি কার্যালয়, ইউনিয়ন ভূমি অফিস এবং ইউনিয়ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাওয়ারও পথ এটি।

মানববন্ধনে উপস্থিত ৪ নম্বর ইউপি সদস্য মুক্তার হোসেন বলেন, সড়ক বন্ধ করার জন্য কোম্পানি টালবাহানা করছে। এ সড়ক বন্ধ হলে এলাকার মানুষকে চরম দুর্ভোগে পড়বে। ছয় গ্রামের বাসিন্দাদের কথা ভেবে হলেও সড়কটি মানুষ ও যানবাহন চলাচলের জন্য সচল রাখতে হবে।

ছোট রায়পাড়া গ্রামের ৮৫ বছর বয়সী প্রবীণ সাহারা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছোটবেলা থেকে আমরা এ সড়ক দিয়ে যাতায়াত করতাম। তখন মাটির সড়ক ছিল। কোম্পানি এলাকায় জায়গা কেনার পর সড়ক পাকা হয়। গেট করার পর থেকে এখন তারা আমাদের সড়ক বন্ধ করে দিতে চাচ্ছে।’

এ সড়কের ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চালান মো. ইসলাম। তিনি বলেন, ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে তিন চাকার যানবাহন চলাচল নিষেধ। উঠলেই তিন হাজার টাকা জরিমানা গুনতে হবে। সড়কটি বন্ধ করা হলে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক দিয়ে ইউনিয়ন ভূমি অফিস, স্বাস্থ্যকেন্দ্র, বিদ্যালয়ে যেতে হবে। অন্যথায় ছয় গ্রামের মানুষকে হেঁটে যাতায়াত করতে হবে।

প্রথম আলো

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.