চিরচেনা জৌলুস হারালেও দর্শনার্থীদের কাছে কদর কমেনি মুন্সীগঞ্জের লৌহজংয়ের শিমুলিয়া ঘাটের। প্রতিদিন পর্যটকদের কমবেশি আনাগোনা লেগেই আছে। বিশেষ করে বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার সন্ধ্যা হলেই এখানে পর্যটকদের ভিড় বেড়ে যায়। গত শুক্রবার সরেজমিনে এমন চিত্রই দেখা গেছে।
পদ্মা সেতু চালুর পর কোলাহলমুখর এ ঘাটটি তার জৌলুস হারিয়েছে। প্রতিদিন হাজার হাজার গাড়ি পারাপার, ফেরি ও লঞ্চ চলাচল, পুলিশ ও প্রশাসনের ব্যস্ততাসহ সব কিছুই এখন স্মৃতি। তবে দিনের বেলায় এখানে যাত্রীদের পদচারণ না থাকলেও সন্ধ্যার পর দর্শনার্থীদের ভিড় বাড়ে। এদেরই কেন্দ্র করে শিমুলিয়া ৩ নম্বর ফেরিঘাটের কাছে গড়ে উঠেছে দেশীয় লোকজ মেলা। এখানে বিক্রি হয় নানা ধরনের গরম গরম পিঠা, আলুর চিপস, পানিপুরি, তান্দুরি চা আর মসলাদার পান। ডিনারের জন্য রেস্টুরেন্টপাড়ায় ইলিশ ভাজা খেতে ভিড় জমায় অনেকেই। শিশুদের জন্য আছে নানা রকমের খেলার আয়োজন।
দর্শনার্থীরা জানায়, এই ঘাটে দাঁড়িয়ে উপভোগ করা যায় পদ্মার নির্মল বাতাস, স্বচ্ছ পানি আর পদ্মা সেতুর নয়নাভিরাম দৃশ্য। ঢাকার সিসাযুক্ত বাতাস থেকে বেরিয়ে একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস নিতে অনেকে ছুটে আসে শিমুলিয়া ঘাটে। কেউ আসে পরিবার-পরিজন নিয়ে, কেউ বা আসে বন্ধুবান্ধবসহ। দেশীয় পর্যটকের পাশাপাশি বিদেশি পর্যটকদেরও দেখা যায় এখানে। প্রবাসী কেউ বাড়িতে বেড়াতে এলে তাঁকেও এখানে নিয়ে আসা হয় আনন্দ উপভোগ করতে।
ঘুরতে আসা পুরান ঢাকার বাসিন্দা আসোয়াদ জানালেন, ভারতের গুজরাট থেকে এক আত্মীয় বেড়াতে এসেছেন তাঁর বাসায়। তাঁকে নিয়ে এসেছেন ইলিশ খাওয়াতে ও রাতের পদ্মা সেতুর দৃশ্য দেখতে। গুজরাটি ওই পর্যটক পানিপুরি খেতে খেতে জানালেন, ‘এটা স্বাদে ও মানে খুবই ভালো। তা ছাড়া জায়গাটিও বেশ ভালো লেগেছে।’
নারায়ণগঞ্জের চাষাঢ়ার বাসিন্দা আসাদুজ্জামান খান বেড়াতে এসেছেন সপরিবারে। তিনি জানালেন, কাজের চাপে অনেক দিন স্বজনদের নিয়ে একসঙ্গে আসা হয় না। তাই আজ সবাইকে নিয়ে এসেছেন। রাতে রেস্টুরেন্টে ইলিশ ভাজা খেয়ে বাড়ি ফিরবেন।
পানিপুরির দোকানি আরাফাত হোসেন জানান, বৃহস্পতি, শুক্র ও শনিবার এখানে পর্যটকদের ভিড় বেশি থাকে, তাই বেচাকেনাও বেশ ভালো হয়।
তান্দুরী চায়ের দোকানদার জানালেন, তাঁর কাছে ৩০ থেকে ৯৫ টাকা দরের তান্দুরি চা রয়েছে। এই চা খেতে পর্যটকরা ভিড় করে।
পান দোকানদার আলতু মিয়া জানালেন, ১০ টাকা থেকে ৫০০ টাকা পর্যন্ত দামের পান রয়েছে তাঁর কাছে।
লৌহজং উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ডা. মো. আব্দুল আউয়াল জানান, ঘাটে এখন ফেরি পারাপার না থাকলেও পর্যটকদের সমাগম রয়েছে। রেস্টুরেন্টসহ ঘাটে পর্যটনকেন্দ্রিক বেশ কিছু দোকানপাটও গড়ে উঠেছে।
কালের কন্ঠ
Leave a Reply