আসামি বিজয়কে মুন্সিগঞ্জ সদর থানায় হস্তান্তর

মুন্সিগঞ্জে স্কুলছাত্রী জেসিকা মাহমুদ (১৬) হত্যা মামলায় গ্রেফতার প্রধান আসামি বিজয় রহমানকে সদর থানা পুলিশে হস্তান্তর করেছে র‌্যাব। রোববার (৫ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র‌্যাব মিডিয়া সেন্টারে প্রেস ব্রিফিং শেষে তাকে পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এর আগে শনিবার (৪ ফেব্রুয়ারি) রাতে রাজধানীর ওয়ারী থেকে বিজয়কে গ্রেফতার করে র‌্যাব।

বিজয়কে গ্রেফতারে স্বস্তির কথা জানিয়েছেন নিহত জেসির স্বজনরা। মামলার বাদী জেসির ভাই জিদান জাগো নিউজকে বলেন, ‘বিজয়কে গ্রেফতারের খবর পেয়েছি। ও পলাতক ছিল। মনে হয়েছিল ধরা পড়বে কি পড়বে না। এখন ধরা পড়ায় আমাদের কিছুটা হলেও স্বস্তি লাগছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বোন হারিয়েছি কিন্তু বোনকে তো আর পাবো না। তবে দুই অপরাধীর সর্বোচ্চ শাস্তি যেন হয়।’

প্রেস ব্রিফিংয়ে র‌্যাবের লিগ্যাল উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন জানান, আদিবা আক্তারের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়ান বিজয়। এ সম্পর্ক চলাকালীন গত বছরের জানুয়ারিতে জেসির সঙ্গে প্রেম শুরু করেন বিজয়। এরপর দুজনের সঙ্গেই প্রেমের সম্পর্ক বজায় রাখেন তিনি। এ অবস্থায় আদিবাকে গোপনে বিয়ে করেন বিজয়। বিষয়টি জানতে পেরে বিজয়ের সঙ্গে তার বিভিন্ন কথোপকথনের স্ক্রিনশট আদিবাকে মেসেঞ্জারে পাঠান জেসি। এর পরই সম্পর্কের অবনতি শুরু হয় বিজয়-আদিবার, যা নিয়ে পরে বিজয়-আদিবার মধ্যে অশান্তি শুরু হয়।

এ অবস্থায় বিজয় ও আদিবা মিলে জেসিকে হত্যার পরিকল্পনা করেন। পরে গত ৩ জানুয়ারি বিজয়ের মুন্সিগঞ্জের কোর্টগাও এলাকায় জেসিকে বাসার ছাদে ডেকে নিয়ে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।

র‌্যাব আরও জানায়, ঘটনার পর নিজেদের নির্দোষ প্রমাণ করার চেষ্টা করেন বিজয়-আদিবা। জেসি ছাদ থেকে লাফিয়ে পড়েন বলে নাটক সাজান। পরে হাসপাতালে জেসিকে মৃত ঘোষণা করলে পালিয়ে যান বিজয়-আদিবা। ঘটনার পর গ্রেফতার করা হয়েছিল আদিবা আক্তারকে। হত্যাকাণ্ডের পর চারদিন মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান ও পরে ফরিদপুরের একটি মাজারে ছদ্মবেশে ২২ দিন পলাতক ছিলেন বিজয়।

হত্যার ঘটনায় বাদী হয়ে বিজয় ও আদিবাকে অভিযুক্ত করে মামলা করেন নিহত জেসির ভাই জিদান। পরে আবিদা আক্তারকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠালে তিনি হত্যার কথা স্বীকার করেন।

অভিযুক্ত আদিবা সদর উপজেলার পঞ্চসার ইউনিয়ন যুবলীগের সভাপতি জাহিদ হাসানের মেয়ে। বিজয় মুন্সিগঞ্জ শহর ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা আরিফুর রহমানের ছেলে।

নিহত জেসি জেলা শহরের সরকারি এভিজেএম বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের ছাত্রী ও সদর উপজেলার কেওয়ার এলাকার সেলিমের মেয়ে।

আরাফাত রায়হান সাকিব/এসআর/জেআইএম

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.