আরএস নকশায় ও বাস্তবে খাল,নাল দেখিয়ে নামজারী করে দখল

জসীম উদ্দীন দেওয়ান: মুন্সীগঞ্জে অস্তিত্ব হারাতে বসেছে কাটাখালি খাল। বাস্তবে বয়ে যাওয়া খালটির সর্বশেষ প্রকাশিত নকশা ও খতিয়ানে খাল হিসেবে চিহৃিত এবং উল্লেখ থাকলেও, ভুমি অফিস থেকে বিভিন্ন জন নিজেদের নামে নামজারী করে নেওয়ার ফলে বেদখল হয়ে আছে খালটি। খাল ভরাট করে স্থাপনা নির্মাণ করায় পানি সরবরাহ বন্ধ হয়ে কয়েকশ একর জমিতে আবাদ করতে মারাত্মক সমস্যায় পড়েছে কৃষকরা।

এক সময়ের ভরা যৌবনের কাটাখালি খাল এখন শুকনো মরু ভূমি। স্থানীয়দের দাবি প্রবাহমান খাল প্রভাবশালীরা দখল করে নেওয়ায় বন্ধ হয়ে গেছে পানি সরবরাহের পথ।

স্থানীয় সত্তর উর্ধ্ব বৃদ্ধ সাত্তার মিয়া জানান, মুন্সীগঞ্জ সুইমিংপুল থেকে শুরু করে কাটাখালি পর্যন্ত বয়ে যাওয়া খালে তারা সাঁতার কেটে গোসল করেছে এবং এই খাল দিয়ে নৌকায় করে তারা তাদের বাড়িতে বিভিন্ন মালা মাল আনা নেওয়া করতো। সাত্তার মিয়ার মতো এমন বক্তব্য স্থানীয় অনেকেরই।

শিল মন্দির ও দেওভোগ মৌজা দুটির প্রায় দেড় কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের এই খলের উত্তর অংশের শিল মন্দি মৌজার বিভিন্ন অংশ বেদখল হয়ে পড়েছে।

দখলদাররা মাটি দিয়ে কালভার্টের মুখ ভরাট করে বন্ধ করে দিয়েছে পানি চলাচলের পথ। ফলে প্রায় সময়ই বর্ষার পানিতে তলিয়ে থাকে দেওভোগ এলাকার তিনশ একর ফসলি জমি। কৃষকরা জানান,নিদিষ্ট সময়ে পানি সরতে না পারায় প্রতি বছর অনাবাদি থাকে এখানকার প্রায় শতেক একর জমি। তারা বলেন,যেখানে প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশ এক ইঞ্চি জায়গা অনাবাদি রাখা যাবেনা। সেখানে এমন অনিয়ম দেখার মতো কোন লোক নাই।

খোঁজ নিয়ে দেখা যায় বিভিন্ন জনের মতো দেওভোগের বাসিন্দা আবুল হোসেন নিজের স্ত্রীর নামে খালের অংশ থেকে সাত শতাংশ জায়গা নাল দেখিয়ে নামজারী করে মাটি দিয়ে ভরাট করে সেখানে স্থাপনা তৈরী করেছেন। আর এস ম্যাপে চিহৃিত খালটি ভুলবশত এক নং খতিয়ানে রেকর্ডভুক্ত না হওয়ায়,ভূমি অফিসের সাথে যোগসাজশ করে ব্যক্তি নামে নামজারী করার হিরিক চলছে। আবুল হোসেন বলেন, যেখানে খাল ভরে সরকারী বিভিন্ন ভবন নির্মাণ হয়েছে সেখানে তারা বসতবাড়ি করলে দোষের কি? তিনি আরো বলেন,আধুনিক যোগে এ খালের আর তেমন প্রয়োজন নেই। তাই আরএস নকশা পরিবর্তন করে খালকে বসতবাড়ি দেখানোর জন্য জেলা প্রশাসনের কাছে তিনি আবেদন পর্যন্ত করেছেন।

এ ব্যাপারে জেলা ভূমি সহকারী কমিশনার হাছিবুর রহমান বলেন,তিনি মুন্সীগঞ্জ যোগ দানের আগে বিভিন্ন ব্যক্তির নামে খালের জাযগা নামজারী করা হযেছে। তাঁর নলেজে বিষয়টি এসেছে। এ ব্যাপারে শীঘ্রই ব্যবস্থা গ্রহন করবেন তারা। সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এই বিষয়ে কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি। অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক রাজস্ব স্নেহাশিস দাসের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান,দখলদারদের বিরুদ্ধে অভিযান চালাবে তারা। তবে জেলা পরিবেশ বাঁচাও এবং নদী বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি অ্যাডভোকেট মজিবুর রহমান দখলদারদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহন করে খাল উদ্বারে সরকারের প্রতি জোর দাবি জানান। তিনি বলেন,প্রশাসনের উদাসিনতা আর অবহেলার কারণে মুন্সীগঞ্জে একের পর এক খাল দখল হচ্ছে যা,পরিবেশ দূষণসহ ভবিষৎয়ে জেলাবাসী ভয়ংকর পরিস্থিতির মুখামুখি হতে যাচ্ছে বলে তিনি মনে করেন। আরএসক্যাপে এ খালের প্রসস্ততা ২৪ থেকে ৩০ ফুট রয়েছে

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.