মুন্সীগঞ্জের টঙ্গিবাড়ী উপজেলার মান্দ্রা মৌজার বিস্তীর্ণ কৃষি জমির মাটি কেটে ইটভাটায় বিক্রি করা হচ্ছে। টঙ্গিবাড়ী উপজেলার পাচঁগাওঁ ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলি আহম্মেদ শেখ কোনো নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে বিস্তীর্ণ মাটির জমি কেটে বিক্রি করছেন।
এতে হুমকির মুখে পড়েছেন উপজেলার চাঠাতিপাড়া গ্রাম হতে সাতুল্লা সড়কের সঙ্গে মিলিত হওয়া সংযোগ সড়কটি। মাত্র ২ মাস আগে কার্পেটিং করা রাস্তাটির একটি অংশ ট্রাকের চাপায় ধ্বসে পড়েছে।
মঙ্গলবার (৭ ফেব্রুয়ারি) সরেজমিনে দেখা যায়, সন্ধ্যার পর আঁধারে টঙ্গিবাড়ী উপজেলার মান্দ্রা মৌজার আলি আহম্মেদ ও তার ভাইদের জমির মধ্যে চলছে মাটি খনন। বেকু মেশিন দিয়ে ট্রাকে তোলা হচ্ছে মাটি। একের পর এক ট্রাকগুলো মাটি নিয়ে যাচ্ছে সিরাজদিখান উপজেলার লালমিয়ার চর ইটভাটায়। ইটভাটায় মাটি বহনকারী ট্রাকগুলোর অধিকাংশের নেই কোনো নাম্বার প্লেট। ওই ট্রাকচালকদের অধিকাংশের বয়স ১৫ থেকে ২০ বছরের মধ্যে।
এ ব্যাপারে এক ট্রাকচালক ইমন বলেন, সিরাজদিখান উপজেলার লাল মিয়ার চরের আমির হোসেনের কাছে আমরা মাটিগুলো নিয়ে যাই। সে এই স্থান থেকে মাটি কিনেছে।
এদিকে একই দিন বিকেলে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সাতুল্লা-চাঠাতিপাড়া সংযোগ সড়কে আসবল কবরস্থানের উত্তর পাশের বিস্তীর্ণ জমির মাটি ইতোমধ্যে কাটা হয়েছে। সেই মাটি নেওয়ার জন্য কয়েকটি ফসলি জমির ওপর দিয়ে তৈরি করা হয়েছে রাস্তা। ইতোমধ্যে বিস্তীর্ণ জমির মধ্যে ৩টি গর্ত করে মাটি বিক্রি করা হয়েছে। এদের মধ্যে একটি গর্ত বিশাল পুকুরে পরিণত হয়েছে। ওই গর্ত হতে চলছে এখনও মাটি বিক্রি। ৩টি গর্তের মধ্যে একটি গর্তে খনন যন্ত্র (ড্রেজার) বসিয়ে রাস্তার পাশের একটি জমি ভরাট চলছে।
ড্রেজার দিয়ে মাটি পারাপার করার জন্যচাঠাতি পাড়া হতে সাতুল্লা সংযোগ সড়কের উপর উচুঁ করে নির্মাণ করা হয়েছে ডিভাইডার (স্পিড বেকার)। ওই স্পিড বেকারের ওপর দিয়ে ঝুঁকি নিয়ে চলছে যানবাহন। এদিকে ব্যস্ততম সড়ক টঙ্গিবাড়ী উপজেলা বাজার হয়ে ওই ট্রাকগুলো মাটি নিয়ে চলাচল করায় সন্ধ্যার পরে টঙ্গিবাড়ী বাজারে সৃষ্টি হয় যানজট।
স্থানীয় এক ব্যক্তি বলেন, সন্ধ্যার পর শুরু হয় ফসলি জমি থেকে মাটি কাটা। সারারাত ভরে রাস্তা দিয়ে চলে ট্রাক। বেপোরোয়া ট্রাকের শব্দে আমাদের ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে। সাবেক পাচঁগাওঁ ইউনিয়নের চেয়ারম্যান রাতের আঁধারে চোরের মতো মাটি বিক্রি করছে। শুনেছি সে এবার আবারও ভোটে দাঁড়াবে। এ ধরনের মানুষ যদি জন-প্রতিনিধি হয় তাহলে মানুষ আইন মানবে কীভাবে। সে নিজেইতো আইন মানে না।
এ ব্যাপারে অভিযুক্ত চেয়ারম্যান আলি আহম্মেদ শেখ বলেন, জমির মাটি কাটলে আপনার সমস্যা কী? সরকারি কোনো নিষেধাজ্ঞার কাগজ থাকলে আমাকে দেখান।
টঙ্গিবাড়ী উপজেলা সহকারী কমিশনার ভূমি রেজওয়ানা আফরিন বলেন, আমি বিষয়টি খোঁজ নিয়ে আইনগত ব্যবস্থা নেব।
ব.ম শামীম/আরকে
Leave a Reply