সিরাজদিখানে হিন্দু পরিবারের ওপর হামলার অভিযোগ, আহত ৩

সিরাজদিখান মির্জাকান্দায় একটি হিন্দু পরিবারের ওপর সন্ত্রাসী হামলার অভিযোগ উঠেছে। ওই হামলায় প্রবাসী ও শ্রমিকসহ তার পরিবারের ৩জন আহত হয়েছে। রোববার (১২ ফেব্রুয়ারি) দুপুর একটার দিকে উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের মির্জাকান্দা গ্রামে এই হামলার ঘটনা ঘটে। আহতদের সিরাজদিখান উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা করা হয়েছে। পরে ওই দিন রাতে প্রবাসী সুকুমার বাড়ৈ’র বড় ভাই বাবুল বাড়ৈ বাদী হয়ে সিরাজদিখান থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।

এজাহার সূত্রে ও সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, উপজেলার কেয়াইন ইউনিয়নের স্বপ্নলোক হাউজিং লি. এর নিকট কমদামে জমি বিক্রি করতে না চাইলে পূর্ব শত্রুতার জের ধরে হিন্দু পরিবারের বসত বাড়িতে এসে অশ্লীল ভাষায় গালিগালাজ করতেন। ওই দিন সুকুমার বাড়ৈ তাদের বাড়ির জায়গায় টিন কাঠের গেইট তৈরি করতে গেলে স্বপ্নলোক হাউজিংয়ের এমডি শেখ হক গেইট তৈরিতে বাধা দিয়ে আবারও অশ্লিভাষায় গালিগালাজ করে জোরকরে গেইট তৈরি বন্ধ করার অপচেষ্টা করে।

এনিয়ে বিরোধের জের ধরে রোববার দুপুরে পূর্বপরিকল্পিতভাবে হিন্দু পরিবারের ও তাদের কাঠ শ্রমিকের উপর সন্ত্রাসীরা দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এ সময় হামলাকারীরা সুকুমার বাড়ৈ, কাঠ শ্রমিক শ্যামল বিশ্বাস, ববিতা বাড়ৈকে পিটিয়ে আহত করে। অভিযোগে প্রধান আসামি করা হয়েছে হাউজিং ব্যবসায়ী শেখ হককে। এছাড়া হামলার অভিযোগে শেখ হাবিব বাবুর ছেলে শেখ তারেক, মৃত শেখ হাসানের ছেলে শেখ ইসলাম, আব্দুর রবসহ অজ্ঞাত ৮-৯ জনকে আসামি করা হয়। আসামিরা লাঠিসোটা, শাবল নিয়ে হামলা করে বলেও অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।

গুরুত্বর আহত সুকুমার বাড়ৈ জানান, স্বপ্নলোক হাউজিং লি. এর নিকট কমদামে জমি বিক্রি করতে না চাওযার পর থেকেই কেযাইন ইউনিয়নের মহিলা ইউপি সদস্য জিয়াসমিন বেগমের স্বামী শেখ হক শত্রুতা শরু করেছে। আমরা চার ভাই প্রবাসে থাকি সে আমাদের সন্তানদের স্কুলে যাওয়ার পথে খুন গুম করে ফেলার প্রকাশ্যে হুমকি দিয়েছে। আমরা হিন্দু হওযায় আমাদের জায়গা জমি জোড় করে কমদামে বিক্রি করতে বলেন। প্রসস্থ রাস্তা থাকা সত্বেও স্বপ্নলোক হাউজিং লি. যাওযার জন্য আমাদের জায়গায় আমাদের কাঠের গেইট তেরি করতে বাধা দিয়ে আমাদের উপর সন্ত্রাসী হামলা করেছে।

আমরা আমাদের জমি বেশী দামে অন্যত্র বিক্রির পর থেকেই হাউজিং ব্যবসায়ী শেখ হক ও তার লোকজন আমাদের উপর হামলার জন্য পাঁয়তারা করে আসছে। গেইট তেরির বাধায় প্রতিবাদ করায় তাদের সাথে বিরোধ সৃষ্টি হয়। এই বিরোধের জের ধরে রোববার দুপুরে পরিকল্পিতভাবে আমাদের উপর হামলা চালানো হয়েছে। আমি এ ঘটনার ন্যায়বিচার দাবি করছি। বাদী বাবুলের পরিবারের দিপা বাড়ৈ, বিনা রানী বড়ৈ, শিউলী বিশ্বাসের অভিযোগ, তাদেরকে স্বপরিবারে দেশ ত্যাগে বাধ্য করতে শেখ হক গংরা দীর্ঘদিন চক্রান্ত করে আসছে এবং দ্রুত অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করে উপযুক্ত শাস্তির দাবি জানিয়েছে ভুক্তভোগীর পরিবার।

এদিকে হামলার ঘটনার অভিযুক্ত শেখ হক বলেন, আমার স্ত্রী জিয়াসমীন বেগম ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড কেয়াইন ইউনিয়নের বর্তমান সংরক্ষিত সদস্য সে আমাকে গেইট তৈরি করতে বাধা দিতে বলেছেন, তাই আমি ওদের বাধা দিয়েছি।

কেয়াইন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. আশ্রাফ আলী বলেন, রাস্তার জায়গায় গেইট নির্মান করলে সেটা উপজেলা পরিষদ, ভূমি অফিস এবং আমরা দেখবো এতে মহিলা ইউপি সদস্যর স্বামীর বাধা দেযার ও মারধর করা যুক্তিযুক্ত না।

সিরাজদিখান থানার ওসি এ কে এম মিজানুল হক জানান, হামলার ঘটনায় অভিযোগ গ্রহণ করা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।

নিউজজি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.