‘মিনিকেট’ নামে ধান না থাকলেও বাজার সয়লাব কথিত এ চালে (ভিডিও)

মিনিকেট ধান না থাকলেও, বাজার সয়লাব কথিত এ চালে। নিষিদ্ধের পরও বিক্রি হচ্ছে অবাধে। এতে প্রতারিত হচ্ছেন ভোক্তারা। তবে ব্যবসায়ীদের দাবি, চাহিদার কারণেই বাজারে আসছে কথিত এ চাল।

মুন্সীগঞ্জ মিরকাদিমের অটোরাইস মিলে মোটা চাল ছেঁটে ‘মিনিকেট’ চাল করা হচ্ছে। আর বাজারে মিনিকেট নামে রংবেরঙের মোড়কে ছড়িয়ে পড়ছে এ চাল। মিল মালিক ও মিরকাদিম পৌর মেয়র অকপটে তা স্বীকার করে ‘মিনিকেট’ তৈরির কারণ ব্যাখ্যা করেন।

মিরাকাদিমের মায়ের দোয়া অটোরাইস মিলের স্বত্বাধিকারী আবদুস সালাম বলেন, মেশিনে চালটিকে ঘষে পলিশ করে চিকন করা হয়। পরে সেটি মিনিকেট হিসেবে বিক্রি করা হয়। মিনিকেট বলে না বিক্রি করলে সেটির ভালো দাম পাওয়া যায় না।

ঢাকা অঞ্চলের অন্যতম চালের মোকাম মিরকাদিমের বিভিন্ন আড়ত ‘মিনিকেট’ চালের বস্তায় ভর্তি। বিক্রেতাদের দাবি, ভোক্তাদের ব্যাপক চাহিদার কারণেই এ চাল বিক্রি করছেন তারা। এক বিক্রেতা বলেন, ‘ব্রি-২৮ চালকে ‍চিকন করে ‘মিনিকেট’ নাম দেয়া হয়েছে। আসলে মিনিকেট নামে কোনো ধান নেই। গবেষণার মাধ্যমে বিভিন্ন চালের নাম রাখা হয়েছে। যেমন একজনের পাঁচ ছেলে, তাদের পাঁচটা আলাদা আলাদা নাম। এখানে প্রতারণার কিছু নেই। ভোক্তারা চাল দেখেই নিচ্ছেন।’

আরেকজন ব্যবসায়ী বলেন, ‘আমরা যখন মিনিকেটের বস্তা করি, তখন সবার সমস্যা হয়। কিন্তু ভারত থেকে আমদানি করা চাল তো মিনিকেট হিসেবে বিক্রি হচ্ছে। ভারত থেকে আনা প্রতিটি বস্তায় মিনিকেট উল্লেখ আছে। যেমন- রাজভোগ মিনিকেট চাল। কিন্তু ওই ক্ষেত্রে কোনো কথা হচ্ছে না।’

এদিকে ভোক্তারা বলছেন, চিকন চাল মনে করেই মিনিকেট কিনছেন। এক ভোক্তা বলেন, মিনিকেট নামের কোনো চালই নেই। এটি জনগণের সঙ্গে প্রতারণা ছাড়া আর কিছু না।

অন্যদিকে কৃষি বিভাগের মতে, এটি ভোক্তাদের সঙ্গে প্রতারণা। এ বিষয়ে মুন্সীগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের ভারপ্রাপ্ত উপ-পরিচালক এবিএম ওয়াহিদুর রহমান বলেন, মিনিকেট প্যাকেটজাত করে অনেকেই বিক্রি করছেন, যা একধরনের প্রতারণাই। এর জন্য সবার পক্ষ থেকে একটি শক্ত ভূমিকা নেয়া উচিত।

মিনিকেট নামে চাল বিক্রি বৈধ নয় উল্লেখ করে মুন্সীগঞ্জ জেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রক মো. মোয়েতাছেমুর রহমান বলেন, ‘মিনিকেট নামে কোনো ধান আমাদের এখানে উৎপাদন হয় না। সুতরাং মিনিকেট নামে কোনো চাল বাজারজাত হওয়ারও কথা না। মিলাররা এটি মিথ্যা বলে বাজারে বিক্রি করছেন। খাদ্য বিভাগ ও খাদ্য মন্ত্রণালয় এটি বাজারজাত করতে নিষেধ করেছে।’

উল্লেখ্য, জেলার ৩৬৫ চাতালের ৩৬০টিই বন্ধ। তাই ৭টি অটো রাইস মিল ও ৫টি চাতালে ধান থেকে চাল উৎপাদন হয়।

সময় টিভি

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.